জাতিগত সহিংসতায় আবারও উত্তাল ভারতের বিজেপি শাসিত রাজ্য মণিপুর। দফায় দফায় সংঘর্ষে গত কয়েকদিনে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ জনে।
রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানাতে রাজপথে নেমেছে জনগণ। রাস্তায় নেমেছে শিক্ষার্থীরাও। সরকারী ভবনে চালিয়েছে হামলা। সবমিলিয়ে আবারও ঘোলাটে হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি।
বিরাজমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে মণিপুরের ইম্ফল পূর্ব ও ইম্ফল পশ্চিম জেলায় এবার জারি করা হয়েছে কারফিউ। অনির্দিষ্ট কালের জন্য এই কারফিউ চলমান থাকবে। পাশপাশি ৫ দিনের জন্য বন্ধ থাকবে ইন্টারনেট। খবর ইন্ডিয়া টুডে, এএফপির।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা, ২০২৩-এর ধারা ১৬৩-এর অধীনে এই নিষেধাজ্ঞামূলক আদেশ জারি হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জনগণকে তাদের বাসস্থানের বাইরে চলাচল সীমিত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ইম্ফল পূর্ব জেলায় কারফিউ পূর্ণ বলবৎ থাকবে।
তবে স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, পিএইচইডি, প্রেস এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও আদালতের মতো প্রয়োজনীয় পরিষেবার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের কারফিউ-এর আওতার বাইরে রাখা হয়েছে।
এছাড়া পৌরসভার কর্মকর্তা, বিদ্যুৎ কর্মী, পেট্রল পাম্পের কর্মী, ফ্লাইট যাত্রী এবং মিডিয়া কর্মীদেরও নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, মণিপুরের কাংপোকপি জেলায় দুই সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে ৪৬ বছর বয়সি এক নারী নিহত হয়েছেন। প্রত্যন্ত থাংবুহ গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানানো হয়।
নিহত নারীর নাম নেমজাখোল লুংডিম। চূড়াচাঁদপুতে ময়নাতদন্ত শেষে তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। জানা গেছে, গ্রামের কয়েকটি বাড়িও পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে এবং স্থানীয়রা কাছের জঙ্গলে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
এছাড়াও রাজ্যটিতে ৫ দিনের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে রাজ্য সরকার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ছবি, ভিডিও এবং বক্তব্য ছড়িয়ে দুষ্কৃতকারীরা রাজ্যের সহিংসতাকে উসকে দিতে পারে-এমন আশঙ্কা থেকেই ইন্টারনেট বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আবার সহিংসতা বন্ধ করে রাজ্যটিতে স্থিতিশীল অবস্থা ফিরিয়ে আনতে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়েও হচ্ছে সমালোচনা। এমন অবস্থায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ওপর নতুন আক্রমণ চালিয়েছে কংগ্রেস।
মূলত সংঘর্ষপীড়িত রাজ্যটিতে এখনও পর্যন্ত সফরে না যাওয়ায় মোদির সমালোচনা করেছেন দলটির অন্যতম গুরত্বপূর্ণ নেতা প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, মণিপুরে চলমান সহিংসতা এবং পরবর্তী বিপর্যয়কে ‘ঠেকানোর কোনও প্রচেষ্টা চালাননি’ প্রধানমন্ত্রী মোদি। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে তীক্ষ্ণ আক্রমণ করে প্রিয়াঙ্কা বলেন, দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ‘কারো ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে না। প্রায় দেড় বছর ধরে মণিপুর জ্বলছে।’