সহিংসতা পরিহারে সব পক্ষের প্রতি আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের

// ছাত্র আন্দোলনের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। তার দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জনগণের পাশে আছে। এবং সহিংসতা পরিহারের বিষয়ে সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সাম্প্রতিক আন্দোলনে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন, হতাহতের ঘটনা যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে দুঃখিত বলেও জানানো হয়েছে।

সোমবার (৫ আগস্ট) স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা তার পদ থেকে পদত্যাগ করে বাংলাদেশ ত্যাগের ঘোষণা তারা দেখেছেন। তারা সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। তারা সব পক্ষকে আরও সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।

তিনি আরও বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে অনেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং আমরা সামনের দিনগুলোতে সবাইকে শান্ত ও সংযমের আহ্বান জানাই । আমরা একটি অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণাকে স্বাগত জানাই এবং বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়টি সম্পন্নের আহ্বান জানাই।

মিলার বলেন, পরিশেষে এই সপ্তাহান্তে এবং গত সপ্তাহে মানবাধিকার লঙ্ঘন, হতাহতের ঘটনা এবং আহতের রিপোর্টে আমরা গভীরভাবে দুঃখিত। যারা প্রিয়জন হারিয়েছেন এবং যারা কষ্ট পাচ্ছেন তাদের প্রতি আমরা আমাদের গভীর সমবেদনা জানাই।

পরে এক সাংবাদিক বাংলাদেশের চলমান ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে শত শত হত্যাকাণ্ডের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি এখনও অস্পষ্ট। ছাত্র-জনতা, নেতা, বিরোধী দল, সেনাবাহিনী বেসামরিক সরকার গঠনের চেষ্টা করছেন।

আপনি কি অনুগ্রহ করে এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সম্পর্কে আরও তথ্য প্রদান করতে পারেন? জবাবে মিলার বলেন, আমাদের সমবেদনা অবশ্যই তাদের প্রতি আছে যারা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সহিংসতায় আহত হয়েছেন। আমরা এখন সহিংসতার অবসান এবং জবাবদিহিতাকে সমর্থন করার দিকে মনোনিবেশ করছি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংক্রান্ত সব সিদ্ধান্ত গণতান্ত্রিক নীতি, আইনের শাসন এবং বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই নেওয়া উচিত।

পরে ওই সাংবাদিক বলেন, হ্যাঁ জবাবদিহিতার কথা বলছেন। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গিয়েছেন এবং তিনি পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে কোনো একটি দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। আপনারা কি তাকে যুক্তরাষ্ট্রে আসতে দেবেন কারণ তিনি মানবতাবিরোধী – মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছেন?

জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এই মুখপাত্র বলেন, আমি এমন ধরনের কোনো অনুরোধ সম্পর্কে অবগত নই।

উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচির বিপরীতে সোমবার (৫ আগস্ট) সারা দেশে কারফিউ জারি করে সরকার। কিন্তু ছাত্র-জনতা কারফিউ ভঙ্গ করে রাস্তায় নেমে আসে। তখন সেনাবাহিনীর নেওয়া ভূমিকাকে স্বাগত জানিয়েছে মার্কিন প্রশাসন।