// নাটোর প্রতিনিধি
বিসিএসের প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সদস্য শাহাদাত হোসেন নাটোরের সিংড়া উপজেলার তাজপুর ইউনিয়নের কাদিরগাছা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ঐ গ্রামের মৃত বাহার আলী সরদারের ছেলে। তবে শাহাদাত হোসেন এলাকায় ‘শখেন’ নামেই বেশি পরিচিত। তার একমাত্র মেয়ে চাকরি করেন ঢাকা পাসপোর্ট অফিসে।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নারায়নগঞ্জের পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী শাহাদাত হোসেন তার গ্রামের ভিটায় দেড় বিঘার ফলের বাগান ও বিলে ৫ বিঘা জমি কিনেছেন। সিংড়া পৌরসভার উপ শহরে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকায় কিনেছেন ৮ শতক জায়গা। পৌরসভার সরকারপাড়া মহল্লায় কিনেছেন ৫ শতক জায়গা। এছাড়াও ঢাকায় ফ্ল্যাটের মালিক তিনি। তবে গ্রামের বাড়িতে তিনি থাকেন না।
তার জমি ও ফলের বাগান দেখাশোনা করেন খালাতো ভাই হানিফ আলী। তিনি জানান, তার ভাইয়ের দেড় বিঘার ফলের বাগান চাষাবাদ ও বিলের ৫ বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেন তিনি। বাগানের জন্য তার ভাইকে কিছু দিতে হয় না। তবে ধানের বর্গার অংশ তার ভাইকে দেন।
হানিফ আরও বলেন, তার ভাই ও তার পরিবার এখানে থাকেন না। মাঝেমধ্যে বেড়াতে আসেন। ঢাকার মিরপুরে নিজস্ব বাড়িতে থাকেন তিনি।
শাহাদত হোসেনের চাচাত ভাই হাফিজুর রহমান জানান, শাহাদত চাকরি জীবনের প্রথম কুমিল্লাপাসপোর্ট অফিসে নিরাপর্তাকর্মী হিসেবে যোগদান করেন। গ্রামে বাবা মায়ের ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত জায়গা ছাড়াও অল্প কিছু জায়গা কিনেছেন। শাহাদত যে প্রশ্ন ফাঁস করে আমার তা জানা নেই।
শাহাদতের বড় ভাই শাইদুল ইসলাম জানান, ভাই হলেও শাহাদত আমাদের কোন খোজ খবর নেয় না। গ্রামে তেমন আসে না আর কথায় চাকরি করেন তাও আমরা জানি না। তবে শুনেছি ঢাকায় তার দুইটা
নিজস্ব বাসা সহ সিংড়া শহরে তিনটা জায়গা আছে তার।
এলাকাবাসী জানান, ২০০২ সালের দিকে এই এলাকার সাবেক সচিব মখলেছুর রহমান শাহাদাতকে চাকরি দিয়েছিলেন। তবে তিনি প্রশ্নফাঁসের সাথে জড়িত তা প্রতিবেশীরা জানতেন না। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পরে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হলে বিষয়টি তারা জানেন।
তার গ্রামের জামাল হোসেন, রেজাউল ও আনিছুর রহমান বলেন, ঈদে বা জালসায় এলাকা আসেন তিনি। সবার সাথে ভালো ব্যবহার করেন। তিনি পাসপোর্ট অফিসে চাকুরি করেন এটুকু আমরা জানতাম। প্রশ্নফাঁসে জড়িত এটা জানতাম না। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পরে বিষয়টি আমরা জেনেছি।
সিংড়ার তাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিনহাজ উদ্দিন বলেন, ঢাকায় বাড়ি ও এলাকায় জায়গা-জমি কিনেছেন তিনি। একজন নিরাপত্তা প্রহরীর ১২ হাজার টাকা বেতন দিয়ে এত কিছু করা সম্ভব না। তাই শাহাদাতের সম্পদ অনুসন্ধানের জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবি করেন তিনি।