// নাটোর প্রতিনিধি..আব্দুর রহমান একসময় নিজের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার তথ্য গোপন করে চক-দিঘলী ব্যারাক হাউজের সরকারী ঘরের বাসিন্দা হন। এর অল্প কিছুদিন পর সেই ব্যরাক ঘর অন্যের কাছে বিক্রি করে ফিরে আসেন নিজের জায়গায় আপন ঘরে। সেটাও ২০ বছর আগের ঘটনা।
এই বিশ বছরে আব্দুর রহমানের স্বচ্ছলতার পালে হাওয়া লেগেছে। দুই ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়েছেন। কিনেছেন মাঠে জমি,করেছেন পাকা বাড়ি। এর মধ্যে জরাজীর্ণ টিনসেডের জায়গায় সরকার আধাপাকা আশ্রায়ন প্রকল্পের কাজ শুরু করলে রহমান তার ঘরে ফিরতে চাইলে শুরু হয় একঘরে দুই দাবীদারের দ্বন্দ। এমন প্রায় ২০ জন পুরনো দাবীদার ও স্থায়ীভাবে বসবাসকারী মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন। ঘরের বরাদ্দ নিতে চাপিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমানকে প্রধান আসামী করে ৬ জন নাটোর আদালতে মামলাও করেছেন। এমন ঘটনা ঘটেছে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা চক-দিঘলী আশ্রায়ন প্রকল্পে।
গত রোববার সকাল ১১ টার দিকে সরোজমিনে গেলে দেখা যায় আব্দুর রহমান(৬০) কৃষি জমিতে ফসল সংগ্রহে গিয়েছেন। তাঁর স্ত্রীর দাবী অর্থিক অবস্থা ভালো হলেও সরকারী বরাদ্দ দেয়া ঘরে তারাই থাকবেন।
একই অবস্থা রোজিনা বেগমেরও। তিনিও পুর্বের টিনসেড ব্যারাক থাকতেন না। তার ঘর একজন অসহায়কে থাকার সুযোগ করে বড়াইগ্রাম উপজেলার আহম্মেদপুরে পাকা ঘরে বসবাস করেন। সেখানে একটি মুদি দোকান রয়েছে তাঁর। স্বামী ট্রাক চালক হওয়ার কারনে তাকে একটি ট্রাকও কিনে দিয়েছেন। স্বচ্ছলতা ফিরলেও তিনিও চান সরকারী আশ্রায়ন প্রকল্পের ঘরের বরাদ্দ।
দ্দধু আব্দুর রহমান,রোজিনা বেগমই নন তাঁদের মতো মফিজ উদ্দিন, সাইদুর, তহিদুল, আরতি, ইব্রাহীম, খোরশেদ, মন্টু, মজিদ, কেরামত, খবির, কাজলীসহ অন্তত ২০ জন বাসিন্দা যারা পুর্বের ব্যারাক ঘরে না থাকলেও বর্তমান আশ্রায়ন প্রকল্পের পাকা ঘর দাবী করছেন।
২৪ বছর ধরে ব্যারাক হাউজে বসবাসকারী ষাটোর্ধ আ: রহমান জানান,চক-দিঘলী ব্যারাকে সরকার প্রায় ১০০ পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাই করে দেন। শুরুর দিকে সবাই বসবাস করলেও অল্পকিছুদিন পরে অন্তত ২০ পরিবারের কেউ কেউ ঘর বিক্রি কিংবা অন্যের কাছে হস্তান্তর করেছেন। যাদের কাছে বিক্রি কিংবা হস্তান্তর করেছেন তারাও অসহায়। এখন পাকা ঘরের অধিকার নিয়ে দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন। কেউ কেউ মামলাও করেছেন।
চাপিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জানান, স্বচ্ছল ব্যাক্তিদের নামে সরকারী ঘর বরাদ্দের সুযোগ নেই। পুর্বের বরাদ্দের যারা ওই প্রকল্পের ঘরে বসবাস করেনি অথবা যাদের স্বচ্ছলতা ফিরেছে তাদের বরাদ্দ বাতিল করে দীর্ঘ সময় ধরে যারা বসবাস করছেন এমন অসচ্ছল ব্যাক্তিদের ঘর বরাদ্দ দেয়ার দাবী তার।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান জানান, পুর্বের জরাজির্ন ব্যারাক হাউজ ভেঙে নতুন আশ্রায়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। কারা সেখানে বসবাস করছেন সেটা দেখবেন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সালমা আক্তার জানান,বিধি অনুসারে প্রকৃত ভুমিহীন,গৃহহীনরা সরকারী ঘর বরাদ্দ পাবেন। উদ্বদ্ধ পরিস্থিতি তদন্ত সাপেক্ষে সমাধান করা হবে।#