// ওসমান গনি,বেড়া (পাবনা) প্রতিনিধি ঃ
বর্ষা মৌসুম শুরু হতে না হতেই এবং সবে মাত্র জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ারর সাথে সাথে রুদ্র মুর্ত্তি ধারন করেছে যমুনা নদী,তান্ডব চালিয়ে যাচ্ছে জনপদের উপর,আতংকিত ও দিশেহারা হয়ে পড়ছে চরাঞ্চলের হাজারও পরিবার।
পাবনার বেড়া উপজেলার নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন স্থানে নদীর ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। জানা যায়, উপজেলার হাটুরিয়া – নাকালিয়া ইউনিয়নের চর নাগদাহ ও নতুন ভারেঙ্গা ইউনিয়নের লেওলাই পাড়া নামক স্থানে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় আড়াইশ বিঘা ফসলি জমি ও অর্ধশতাধিক বসতবাড়ি যমুনার ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয়রা জানান, নদীর পানি দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় হঠাৎ করে নদীর ভাঙ্গন ব্যাপক আকার ধারণ করায় এসব অঞ্চলের মানুষ ভাঙ্গন আতঙ্কে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এদিকে নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় চর নাকালিয়া ও পেচাকোলা মৌজার নীচু এলাকার কয়েকশ’ বিঘা উঠতি চিনা বাদাম ডুবে গেছে বলে চাষিরা জানিয়েছেন। ডুবে যাওয়া ক্ষেত থেকে বাদাম চাষিরা আধা -পাকা ও কাঁচা চিনা বাদাম তুলে আনছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
চর নাগদাহ গ্রামের স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহিদ মোল্লা, স্কুল শিক্ষক লুৎফর রহমান, একই গ্রামের জাইদুল, ওমর মোল্লা, সাঈদ মোল্লা সহ অনেকেই বলেন গত দুই সপ্তাহে নদীর পানি ৫-৬ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর ভাঙ্গন ব্যাপক রূপ ধারণ করেছে। ভাঙ্গনে চর নাগদাহ গ্রামের নবী মোল্লা, ওমর মোল্লা, জয়নাল মোল্লা, মজিবর মোল্লা, মালেক মোল্লা, আক্কাস, রশিদ, তাঁরা স্যান্ডালের বসত বাড়ির গাছপালা সহ প্রায় অর্ধশত বসতভিটা ও ২শ’ বিঘা ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্তরা বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে এবং খোলা আকাশের নিচে অনেকেই পরিবার – পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ভাঙ্গন হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে চর নাগাদাহ গ্রামের কমিউনিটি হাসপাতাল, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চর সাঁড়াশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও যমুনা বাজার সহ বিভিন্ন স্থাপনা। নতুন ভারেঙ্গা ইউনিয়নের লেওলাই পাড়া নামক স্থানে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে নদীর ভাঙ্গনে প্রায় অর্ধশত বিঘা ফসলী ও আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবু দাউদ সহ স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
ভাঙ্গন বিষয়ে হাটুরিয়া- নাকালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হামিদ সরকার বলেন, গত সোমবার দুপুরে চর নাগাদাহ গ্রামের ভাঙ্গনে হুমকির মুখে কমিউনিটি হাসপাতাল, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চর সাঁড়াশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও যমুনা বাজার এলাকাসহ ভাঙ্গন কবলিত বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.মোরশেদুল ইসলাম, বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তাগণ । এ সময় তারা ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে মতবিনিময় করেন এবং ভাঙ্গন রোদে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানা যায়।#