// চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি
চলনবিলের একটা বিরাট অংশের পানি নিয়ন্ত্রণের জন্য এক যুগ পূর্বে পাবনার চাটমোহরের বিলচলন ইউনিয়নের নটাবাড়িয়া ও চরসেনগ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত কিনু সরকারের জোলায় (খালে) প্রায় দশ কোটি টাকা ব্যয়ে সরকার একটি নতুন ¯স্লুইসগেটের নির্মাণ করে। এ ¯স্লুইসগেটের মাধ্যমে পাবনা ও নাটোর জেলার প্রায় পনেরো-বিশটি বিলের পানি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। গত কয়েক দিন যাবত এই ¯øুইজ গেটের উইং ওয়ালের মাটি কেটে নিচ্ছেন স্থানীয় খোয়াজ উদ্দিন ও আসমা খাতুন দম্পতি। খোয়াজ উদ্দিন ও আসমা খাতুন নটাবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। উইং ওয়ালের মাটি কাটার ফলে চলনবিলের পানি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ব্যহত হওয়ার আশংকা করছেন সুফলভোগীরা। তারা নিষেধ করলেও এ দম্পতি মাটি কাটার কাজ অব্যাহত রেখেছেন।
মঙ্গলবার (৪ জুন) দুপুরে সরেজমিন ঘটনাস্থলে গেলে এলাকাবাসী জানান, এ দম্পতি দিনে দিনে মাটি কাটার কাজটি করছেন। ¯øুইজগেটের নিকটস্থ বাড়ির মালিক আয়ুব আলী জানান, খোয়াজ উদ্দিন ও আসমা খাতুন গত প্রায় বিশ দিন যাবত অল্প অল্প করে মাটি কেটে সড়িয়ে নিচ্ছেন। আমরা নিষেধ করলেও তারা আমাদের কথা না শুনে মাটি কাটার কাজ অব্যাহত রেখেছেন। ¯øুইজগেট সংলগ্ন রাস্তার মাটি কাটার ফলে রাস্তাটি নিচু হয়ে যাচ্ছে। বর্ষাকালে উইং ওয়াল উপচে পানি প্রবাহিত হলে পানির স্রোতে পুরো এলাকা ভেঙ্গে যাবে। ক্ষতিগ্রস্থ হবে দশ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ¯øুইজগেটটিও। হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
নটাবাড়িয়া গ্রামের ইসমাইল সরকার এবং আকতার হোসেন জানান, বৃটিশ আমলে নির্মিত পুরাতন ¯øুইজ গেটটি তেরো চৌদ্দ বছর আগে ভেঙ্গে গেলে সরকার এখন থেকে প্রায় বারো বছর পূর্বে নতুন এ ¯øুইজগেটটি নির্মাণ করে এবং উইং ওয়াল মাটি দিয়ে ভরাট করে দেয়। সেই মাটি কেটে সড়িয়ে নিচ্ছেন খোয়াজ উদ্দিন ও তার স্ত্রী।
এ ¯øুইজগেটের সুফলভোগী ঝাঁকড়া গ্রামের প্রভাষক আব্দুর রউফ জানান, ¯øুইজ গেটটি নির্মিত হওয়ায় নটাবাড়িয়া, বোঁথর, রামনগর, ধানকুনিয়া, কাটেঙ্গা, ছাইকোলা, বোয়াইলমারী, ঝাঁকড়া, ভিটা, কচুগাড়ি, দয়রামপুর, তেবাড়িয়া, গোপালপুর, ধুলাউড়ি, হাসমারী, দড়িহাসমারী, চামটা, চাঁচকৈড়সহ পাবনা নাটোরের প্রায় ৫০ টি গ্রামের লাখ লাখ কৃষক সুফল ভোগ করছেন। উইং ওয়ালের মাটি সড়িয়ে নিলে বিস্তীর্ণ এলাকার পানি ব্যবস্থাপনা ব্যহত হওয়ার শংকা রয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুস সাত্তার সেতার জানান, “এই ¯øুইজগেটের মাধ্যমে পাবনা ও নাটোরের প্রায় পনের-বিশটি বিলের পানি নিয়ন্ত্রণ হয়। আমি খোয়াজ উদ্দিন ও তার স্ত্রীকে উইং ওয়ালের মাটি সড়িয়ে নিতে নিষেধ করলেও তার মাটি কাটার কাজ অব্যাহত রেখেছেন। স্থানীয় চেয়ারম্যানকে আমি বিষয়টি অবহিত করেছি।”
এ ব্যাপারে খোয়াজ উদ্দিন জানান, ¯øুইজগেটের উইং ওয়াল আমার জায়গার উপর নির্মাণ করা হয়েছে। আমার জায়গায় সরকার মাটি ফেলেছে আমি কেটে সড়িয়ে নিচ্ছি।
এ ব্যাপারে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেদুয়ানুল হালিম জানান, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ড পাবনার তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার জানান,আমাদের যারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করেন তাদের এখনি বিষয়টি জানিয়ে দিচ্ছি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।