// সঞ্জু রায়, বগুড়াঃ বগুড়ায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইনে বর্ণিত জেলা কমিটির দায়িত্ব ও কার্যকারিতা সংক্রান্ত এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় বগুড়া জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে উইম্যান উইথ ডিজঅ্যাবিলিটিজ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (ডব্লিউডিডিএফ) আয়োজিত এই কর্মশালাটি “টু একসেলারেট ইমপ্লিমেন্টেশন অফ সিআরপিডি (ইউএনসিআরপিডি) অ্যান্ড ডিজঅ্যাবিলিটি ইনক্লুসিভ এসডিজিস (এসডিজিএস) (ইউএনপিআরপিডি)’’ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়।
সমাজসেবা অধিদপ্তর বগুড়ার উপ পরিচালক আবু সাঈদ মো: কাওসার রহমানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি বগুড়ার জেলা প্রশাসক মো: সাইফুল ইসলামের পক্ষে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো: মেজবাউল করিম। এসময় তিনি বলেন, প্রতিবন্ধীরা আর সমাজের বোঝা নয়। তারাও এখন সমাজের মূল স্রোতের সাথে কাজ করতে পারে। তাদেরকে সাথে নিয়ে চলা হলে মানুষের মাঝে ইতিবাচক প্রবণতা খুব শীঘ্রই ছড়িয়ে পড়বে। তাই প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে হবে। এছাড়াও বগুড়া জেলা প্রশাসন সর্বদাই প্রতিবন্ধীবান্ধব সেবা পরিচালনার চেষ্টা করে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি ভবিষ্যতে আরো কিভাবে এই সেবার মানোন্নয়ন করা যায় সে বিষয়ে কাজ করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ শফিউল আজম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) আব্দুর রশীদ, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার সিনিয়র সহকারী জজ এমএম মাহবুব ইসলাম এবং ডব্লিউডিডিএফ’র নির্বাহী পরিচালক আশরাফুন্নাহার মিষ্টি। এছাড়াও মুক্ত আলোচনায় অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন শিশু একাডেমীর পরিচালনা পর্ষদের সদস্য গৌতম কুমার দাস, বগুড়া অন্ধ সংস্থার সভাপতি মীর মোর্শেদ আলী, স্পন্দন নারী প্রতিবন্ধী সংস্থার রেবেকা আক্তার রিতা প্রমুখ।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, আগে মানুষ প্রতিবন্ধীর তথ্য গোপন করার চেষ্টায় লিপ্ত থাকতো। কিন্তু বর্তমানে সরকারি প্রতিবন্ধী ভাতা, চাকুরীর কোটা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির কোটাসহ বিভিন্ন সরকারি সুযোগ-সুবিধার কারণে অনেকের প্রতিবন্ধীতা না থাকা সত্বেও তারা প্রতিবন্ধী সাজতে চায় যা শক্ত হাতে দমন করতে হবে। এছাড়াও কর্মশালায় ডব্লিউডিডিএফ এর নির্বাহী পরিচালক মিষ্টি আবারো জোর দেন সরকারি দপ্তরগুলোসহ সেবাপ্রদানকারী সকল দপ্তর এবং বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর চলাচলের সুবিধার্থে র্যাম্প স্থাপনের বিষয়ে। এছাড়াও প্রতিটি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান যেন প্রতিবন্ধীবান্ধব হয় সে বিষয়ে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
ডব্লিউডিডিএফ এবং ইউএন ওম্যান এর পার্টনারশীপে এই ইউএনপিআরপিডি উদ্যোগটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই উদ্যোগের সাথে আছে আইএলও এবং ইউনিসেফ। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ তে বর্ণিত কমিটি সমূহের কার্যকারিতা সংক্রান্ত ইউএনপিআরপিডি উদ্যোগটির অধীনে একটি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এই বিশ্লেষণ থেকে প্রাপ্ত তথ্য সমূহ এই কর্মশালায় উপস্থাপিত হয় এবং সদস্যদের মতামত ও পরামর্শ গ্রহণ করা হয়।
কর্মশালার সঞ্চালনায় ছিলেন ডব্লিউডিডিএফ এর প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর প্রিয়তা ত্রিপুরা এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন ডব্লিউডিডিএফ বগুড়া কার্যালয়ের প্রকল্প সমন্বয়কারি আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল ও ডব্লিউডিডিএফ বগুড়া কার্যালয়ের উপজেলা সমন্বয়কারি এবং হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া। কর্মশালায় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ছাড়াও প্রতিবন্ধী সংস্থার নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যমকর্মীসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।