।। আমিরুল ইসলাম রাঙা ।।
১৯৭১ সালের ২৮ এবং ২৯ শে মার্চ পাবনায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাথে প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। দুইদিনব্যাপী যুদ্ধে পাবনায় অবস্থানরত সমস্ত পাকিস্তানি সৈন্যদের হত্যা করে পাবনাকে হানাদার মুক্ত করা হয়েছিল। ২৯ শে মার্চ থেকে ১০ ই এপ্রিল পর্যন্ত পাবনা হানাদার মুক্ত ছিল। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এটি ছিল এক বিরল ঘটনা। সেই যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিল পাবনার ছাত্র যুবক সহ সর্বস্তরের জনতা।
১৯৭১ সালের মার্চ মাস। স্বাধীনতার দাবীতে উত্তাল গোটা দেশ। ১ লা মার্চ থেকে অসহযোগ আন্দোলন, ২ রা মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পতাকা উত্তোলন, ৩ রা মার্চ পল্টন ময়দানে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ, ৭ ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ। সব মিলিয়ে ২৫ শে মার্চ পর্যন্ত একদিকে স্বাধীকার আন্দোলন অন্যদিকে স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রস্তুুতি । ২৫ শে মার্চ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর সাথে পাকিস্তানি শাসকদের ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে আলোচনা। অন্যদিকে ৭ ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণের পর দেশব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের প্রস্ততি গ্রহন চলতে থাকে।
৭ ই মার্চ বঙ্গবন্ধু’র ঐতিহাসিক ভাষণের পর পাবনায় সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ আমজাদ হোসেন ( এমএনএ) কে আহবায়ক করে সাত সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠিত হয়। কমিটির সদস্যরা হলেন আব্দুর রব বগা মিয়া ( এমপিএ), এডভোকেট আমিন উদ্দিন ( এমপিএ), দেওয়ান মাহবুবুল হক ফেরু ( আওয়ামী লীগ নেতা), গোলাম আলী কাদেরী ( আওয়ামী লীগ নেতা), আমিনুল ইসলাম বাদশা ( ন্যাপ নেতা) ও আব্দুস সাত্তার লালু ( জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি)। ২৫ শে মার্চের পর তৎকালীন জেলা প্রশাসক নুরুল কাদের খান এবং পুলিশ সুপার চৌধুরী আব্দুল গফফার উক্ত কমিটির সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন।
৭ ই মার্চের পর থেকে গোটা দেশে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে। হরতাল, অবরোধ এবং মিটিং মিছিলের সাথে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে পাড়া মহল্লায় স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের কমিটি গঠন করা হয়। সেই সাথে ছাত্রলীগের উদ্যোগে তরুণ যুবকদের সংগঠিত করে সামরিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। প্রথমে পাবনা শহরে জিলা স্কুল মাঠে তরুণ যুবকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়। সেখানে প্রধান প্রশিক্ষক ছিলেন সেনা সদস্য জাহাঙ্গীর আলম সেলিম এবং জিলা স্কুলের স্কাউট শিক্ষক মাওলানা কসিম উদ্দিন। কাচারীপাড়ায় সাহারা ক্লাবের উদ্যেগে জিসিআই স্কুল মাঠে প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। সেখানে প্রধান প্রশিক্ষক ছিলেন আনসার কমান্ডার আনোয়ার হোসেন ঘুটু। নয়নামতি অভিযান ক্লাবের উদ্যোগে চাঁদমারী মাঠে প্রশিক্ষণের প্রধান প্রশিক্ষক ছিলেন আনসার কমান্ডার মোকাদ্দেস হোসেন ফুটু এবং রাধানগর অধিনায়ক ক্লাবের উদ্যোগে মক্তব পুকুরপাড়ে প্রশিক্ষণের প্রধান প্রশিক্ষক ছিলেন আনসার কমান্ডার খলিলুর রহমান। এই কার্যক্রম ১২ ই মার্চ শুরু হয় এবং ২৫ শে মার্চ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। যুবকদের বাঁশের লাঠি ও স্কাউটদের ব্যবহৃত ডামী রাইফেল দিয়ে ট্রেনিং দেওয়া হতো।
২৫ শে মার্চ দিবাগত রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী সারাদেশে একসাথে অবস্থান গ্রহন করে। ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় অপারেশন সার্চ লাইটের নামে হাজার হাজার নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। পাবনায় ২৬ শে মার্চ ভোর থেকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী অবস্থান গ্রহন করে। ২৬ শে মার্চ সকাল থেকে পাকিস্তানী সৈন্যরা খোলা জীপে মাইক বেঁধে কারফিউ জারীর ঘোষনা দেয় । সমস্ত জনসাধারনকে ঘরের মধ্যে থাকতে বলা হয়। দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। কোন মানুষ রাস্তায় বের হলে গুলি করা হবে বলে ঘোষণা করা হয়। এই ঘোষণার পর মুহুর্তে গোটা শহর নীরব হয়ে যায় । তখন বাইরে কি হচ্ছে সেটা বুঝার বা জানার কোন সুযোগ ছিল না। তখন সারাদেশের কি অবস্থা সেটা জানার একমাত্র মাধ্যম ছিল রেডিও। সেটা থেকে ভারতের আকাশবানী, বিবিসি এবং ভয়েস অব আমেরিকার পরিবেশিত সংবাদ ছাড়া প্রকৃত ঘটনা জানা সম্ভব ছিল না। কারফিউ চলাকালীন সময়ে পাবনা শহরে মাঝে মাঝে সেনাবাহিনীর গাড়ীর শব্দ ছাড়া আর কোন শব্দ ছিল না।
২৬ শে মার্চ পাকিস্তানী সৈন্যরা পাবনা শহর থেকে নব-নির্বাচিত প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য ( এমপিএ) এডভোকেট আমিন উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে। যিনি ছিলেন পাবনা সদর মহকুমা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য। এছাড়া একইদিন ভাসানী ন্যাপের পাবনা জেলা সভাপতি ডাঃ অমলেন্দু দাক্ষী, রাধানগর তৃপ্তি নিলয় হোটেলের মালিক ও মটর ব্যবসায়ী সাঈদ তালুকদার, দিলালপুর মহল্লার আইনজীবী মোশাররফ হোসেন , ইসলামিয়া কলেজের অধ্যাপক শফিকুল হায়দার, আইনজীবী মুছা মোখতার, এডরুক ঔষধ কারখানার মালিক আবদুল হামিদ খান, সিগারেট কোম্পানির এজেন্ট হাবিবুর রহমান, পৌরসভার ট্যাক্স কালেক্টর খালেক তালুকদার, কাপড় ব্যবসায়ী সাহাজ উদ্দিন মুন্সি সহ প্রায় শতাধিক মানুষকে গ্রেপ্তার করে শিল্পনগরী ইপিসিকের ( বিসিক) সেনাক্যাম্পে নেওয়া হয়।
২৫ শে মার্চ রাতে রাধানগর এলাকায় মুসলিম লীগ নেতা খন্দকার নূরু চেয়ারম্যানের বাড়ীতে কৃষ্ণপুরের শুকুর আলীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ২৭ শে মার্চ সন্ধ্যার পর কৃ্ষ্ণপুর মক্তব স্কুল প্রাঙ্গনে শুকুর আলীর জানাজা নামাজের সময় পাকিস্তানি সৈন্যরা মুসল্লিদের উপর গুলিবর্ষণ করে। এ সময় শেখ আব্দুস সামাদ নামে একজন নিহত হন এবং মাওলানা ইব্রাহিম হোসেন ও শেখ বদিউজ্জামান নামে অপর দুইজন গুলিবিদ্ধ হন।
উল্লেখ্য ২৬ শে মার্চ পাকিস্তান সৈন্যরা পাবনায় আসার পর জেলা প্রশাসক নূরুল কাদের খান এবং পুলিশ সুপার চৌধুরী আব্দুল গাফফারকে দেখা করতে বলেন। সেই সাথে পাবনা পুলিশ লাইনের সমস্ত পুলিশকে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেন। ডিসি এবং এসপিকে তলব করার পরও যখন উনারা দেখা করেন না তখন সৈন্যরা তাঁদের বাসভবনে অভিযান চালায়। সেনাবাহিনীর অভিযান চালানোর আগেই ডিসি এবং এসপি তাঁদের বাসভবন ত্যাগ করে পাবনার দক্ষিণ দিকে চর রামচন্দ্রপুর গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন মালিথার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। এরপর চর অঞ্চলের প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা নবাব আলী মোল্লার সহযোগিতায় উল্লেখযোগ্য আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যথাক্রমে আমজাদ হোসেন, আব্দুর রব বগা মিয়া, ওয়াজি উদ্দিন খান, গোলাম আলী কাদেরী, রফিকুল ইসলাম বকুল, ফজলুল হক মন্টু সহ প্রমুখ নেতাদের সাথে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় পাবনায় অবস্থানরত পাকিস্তানী সৈন্যদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করার। সেই মোতাবেক ২৭ শে মার্চ সারাদিন শহরের চারপাশে তরুণ যুবকদের সংগঠিত করা এবং লাইসেন্সকৃত দেশীয় বন্দুক সংগ্রহ করার অভিযান চালানো হয়। সারাদিন পাড়ায় পাড়ায় তরুন-যুবকরা, লাঠি-ফালা, তীর-ধনুক এবং দেশী অস্ত্র সংগ্রহ করে যুদ্ধের জন্য সংগঠিত হতে থাকে।
২৭ শে মার্চ গভীর রাতে পাবনার জেলা প্রশাসক নূরুল কাদের খান, পুলিশ সুপার চৌধুরী আব্দুল গাফফার, আওয়ামী লীগ নেতা নবাব আলী মোল্লা, ছাত্রনেতা রফিকুল ইসলাম বকুল এবং ফজলুল হক মন্টুর নেতৃত্বে শতাধিক যোদ্ধা চরাঞ্চল থেকে পুলিশ লাইনের দক্ষিণ অংশে অবস্থান নেন। ভোর রাতের দিকে পাকিস্তানী সৈন্যরা পুলিশ লাইনের পূর্ব ফটক ( বর্তমান পোস্ট অফিস) এর সামনে এসে হ্যান্ডমাইকে পুলিশ সদস্যদের আত্মসমর্পণের আহবান জানান। এমন একটি সময়ে ডিসি অফিসের ছাদে, জজকোর্টের দক্ষিণ পাশে এবং জিসিআই স্কুল অঞ্চল থেকে একযোগে মুক্তিযোদ্ধারা গুলিবর্ষণ শুরু করে। চারদিক থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের গুলিবর্ষণ এবং পুলিশ লাইন থেকে পুলিশের গুলিবর্ষণে পাকিস্তানী সৈন্যরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পালাতে থাকে। পাকিস্তানী সৈন্যদের একদল পালিয়ে বিসিক নগরীতে যায় এবং আরেক দল টেলিফোন এক্সচেঞ্জে আটকা পড়ে। এরপর মুক্তিকামী জনতা টেলিফোন এক্সচেঞ্জের চারিদিকে ঘিরে পাকিস্তানী সৈন্যদের উপর গুলি চালাতে থাকে। এই সময়ে পাবনার ডিসি এবং এসপি’র নির্দেশে পুলিশ লাইনের অস্ত্রাগার খুলে দেওয়া হয় । তখন পুলিশ সহ ছাত্র-জনতা পাকিস্তানি সৈন্যদের উপর ব্যাপক গোলাবর্ষণ শুরু করে। সারারাত ধরে গোলাগুলি চলার পর ভোর থেকে তুমুল আক্রমন শুরু হয় । দুপুরের আগেই টেলিফোন এক্সচেঞ্জে অবস্থানরত ২৮ জন পাকিস্তানী সৈন্য নিহত হয়। ২৮ শে মার্চ টেলিফোন এক্সচেঞ্জ দখল করার পর একই দিন দুপুরে লস্করপুরে ( বর্তমান বাস টার্মিনাল) সামরিক বাহিনীর চেকপোস্টে আক্রমন করা হয়। লস্করপুরে তিনজন এবং বালিয়াহালট গোরস্তানে দুইজন পাকিস্তানী সৈন্য নিহত হয়। লস্করপুর যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রথম শহীদ হন শামসুল আলম বুলবুল ( যার নামে সরকারী শহীদ বুলবুল কলেজ), আমিরুল ইসলাম ফুনু, মুকুল বেগ এবং আফসার উদ্দিন।
২৯ শে মার্চ সকালের দিকে বিসিক এ আটকে পড়া সৈন্যদের উদ্ধার করার জন্য রাজশাহী সেনানিবাস থেকে বেশ কয়েকটি ট্রাক নিয়ে পাবনা অভিমুখে রওয়ানা হয়। আকাশে জঙ্গীবিমানের ছত্রছায়ায় ট্রাকগুলি পাবনা বিসিক এ প্রবেশ করে। এরপর আটকে পড়া সৈন্যদের নিয়ে হেমায়েতপুর মানসিক হাসপাতালের পাশ দিয়ে পাকশী অভিমুখে রওয়ানা হয়। পথিমধ্যে মাধপুর, দাশুড়িয়া, মুলাডুলি হয়ে লালপুর পৌছানোর আগে ১৭ টি স্থানে প্রতিরোধ যুদ্ধ হয়। এসব যুদ্ধে সকল পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়। বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়, পাবনার প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধে মেজর আসলাম সহ প্রায় দেড় শতাধিক পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়। এদিকে পলায়নরত পাকিস্তানি সৈন্যদের সাথে মালিগাছা যুদ্ধে আটঘরিয়া থানার দারোগা আব্দুল জলিল শহীদ হন। মাধপুর, দাশুড়িয়া, মুলাডুলি ও লালপুর পর্যন্ত প্রতিরোধ যুদ্ধে প্রায় ১২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন । বিসিক মুক্ত হবার পর পাকিস্তানি সৈন্যদের হাতে আটক সংসদ সদস্য এডভোকেট আমিন উদ্দিন, ন্যাপ নেতা ডাঃ অমলেন্দু দাক্ষী, সাঈদ তালুকদার ও রাজন সহ অজ্ঞাত অনেকের ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ পাওয়া যায়।
২৯ শে মার্চ পাবনা প্রথম জেলা হিসেবে হানাদার মুক্ত হয় । ১০ ই এপ্রিল পর্যন্ত পাবনা হানাদার মুক্ত থাকে। প্রায় ১২ দিন পাবনার ঘরে ঘরে মানচিত্র খচিত লাল সবুজ পতাকা উড়েছে। ২৯ শে মার্চ থেকে ১০ ই এপ্রিল পর্যন্ত পাবনা জেলা প্রশাসক নূরুল কাদের খান এর নেতৃত্বে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নামে প্রশাসন পরিচালিত হয়েছিল। এই যুদ্ধে যাদের বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাঁরা হলেন পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমজাদ হোসেন এমএনএ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রব বগা মিয়া এমপিএ, ন্যাপনেতা আমিনুল ইসলাম বাদশা, রনেশ মৈত্র, আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম আলী কাদেরী, দেওয়ান মাহবুবুল হক ওরফে ফেরু, ওয়াজি উদ্দিন খান, নবাব আলী মোল্লা, পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুস সাত্তার লালু, সাধারন সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বকুল সহ অনেকের। পাবনার প্রতিরোধ যুদ্ধের সেই গৌরবময় ইতিহাসের কথা লিখতে গেলে আরো কয়েকজন বরেন্য ব্যক্তির কথা বলতে হবে তাঁদের একজন পাবনার তৎকালীন জেলা প্রশাসক নূরুল কাদের খান। যিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া প্রথম জেলা প্রশাসক এবং আরেকজন হলেন তৎকালীন পুলিশ সুপার চৌধুরী আব্দুল গফফার।
এছাড়া প্রতিরোধ যুদ্ধে ছাত্র ইউনিয়নের রবিউল ইসলাম রবি ও শিরিন বানু মিতিল সহ তাঁদের নেতাকর্মীরা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছিলেন । প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধে ছাত্রলীগের রফিকুল ইসলাম বকুল, ইকবাল হোসেন, সাহাবুদ্দিন চুপপু, বেবী ইসলাম, মোঃ ইসমত ,ফজলুল হক মন্টু, মোখলেছুর রহমান মুকুল, সাঈদ আকতার ডিডু প্রমুখ ছাত্রনেতাদের গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা ছিল। তাঁদের সেই সাহসী ভুমিকার কথা ইতিহাসের পাতায় উজ্জল হয়ে থাকবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে পাবনার প্রতিরোধ যুদ্ধটি ছিল প্রথম জনযুদ্ধ। প্রথম জেলা হিসেবে হানাদার মুক্ত করা সহ পাকিস্তানি সেনাদের হাতে প্রথম সংসদ সদস্য এডভোকেট আমিন উদ্দিন নিহত হওয়ার বিষয়গুলি ছিল উল্লেখ করার মত। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে পাবনার প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধের ঘটনা গৌরবোজ্জ্বল স্থান দখল করে আছে।
লেখক – আমিরুল ইসলাম রাঙা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনীতিবীদ।