— এবাদত আলী–
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত তৎকালিন পূর্ব-পাকিস্তানের আপামর জন সাধারণের দুর্জয় ও দুর্দম সংগ্রামের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের পুর্ব অংশ অর্থাৎ পুর্ব-পাকিস্তান একটি পৃথক রাষ্টে পরিণত হয়। যার নামকরণ করা হয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে স্বাধীন সার্বভৌম একটি দেশ পৃথিবীর মানচিত্রে স্থান করে নিয়েছে তার স্থপতি ছিলেন বাংলার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের জন্য জীবনভর আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন।
এ দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ১৯৪৭ সালের আগষ্ট মাসে ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতীয় উপমহাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে এবং ভারত বিভক্ত হয়ে দুটি পৃথক রাষ্ট্রের জন্ম হয়। মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা নিয়ে গঠিত হয় পাকিস্তান এবং হিন্দু ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী অঞ্চল নিয়ে গঠিত হয় ভারত বা ইন্ডিয়া। নবগঠিত রাষ্ট্র পাকিস্তান দু হাজার মাইলের ব্যবধানে অবস্থিত দুটি প্রদেশের সমন্বয়ে গঠিত হয় পুর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান। ভৌগলিক ও সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে যোজন যোজন ব্যবধানে অবস্থিত দুটি অংশের মধ্যে মিল ছিলো কেবল সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মে। পাকিস্তানের জন্মলগ্ন থেকেই এর পুর্ব অংশ পশ্চিম অংশের তুলনায় নানাভাবে বঞ্চিত হতে থাকে এবং স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম লাভের আগ পর্যন্ত দীর্ঘ তেইশ বছর পশ্চিম পাকিস্তান কর্তৃক পুর্ব পাকিস্তানকে নানাভাবে শোষণ ও বঞ্চনার দাবানলে নিষ্পেষিত করতে থাকে । ১৯৭০ সালে পাকিস্তানের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে পুর্ব পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় দল পুর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। দলটি পুর্ব পাকিস্তানের ১৬৯টি আসনের মধ্যে ১৬৭টি আসনে জয়লাভ করে এবং ৩১৩ আসন বিশিষ্ট জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় যা আওয়ামী লীগকে পাকিস্তানের সরকার গঠনের অধিকার প্রদান করে। কিন্তু নির্বাচনে দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতাপ্রাপ্ত দল পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টো শেখ মুজিবের পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ক্ষেত্রে পূর্ণ বিরোধিতা করতে থাকে। ভুট্টো প্রস্তাব করেন দুই প্রদেশে দুইজন প্রধানমন্ত্রী থাকবে যা অবাস্তব বটে। এমন অভিনব প্রস্তাবের কথা শুনে পুর্ব পাকিস্তানের মানুষের মাঝে দারুন ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
অপর দিকে পাকিস্তানের সামরিক শাসক আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সরকার গঠনে মত দিতে অস্বীকার কারেন। দেশের একটি রাজনৈতিক দল জনসাধারণের ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে সরকার গঠন করবে এটা নিয়ম হওয়া সত্বেও পাকিস্তানের সামরিক শাসক সরকার গঠন কিংবা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া বাদ দিয়ে এক আলোচনা শুরু করে। কিসের জন্য আলোচনা এদেশের আপামর জনগনের তা বুঝতে বাকি থাকেনা। জাতীয় সংসদের নির্ধারিত অধিবেশন স্থগিত করা হয়। এরই প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ১৯৭১ সালের ১ মার্চ দেশব্যাপি অসহযোগআন্দোলনের ডাক দিলে সমগ্র পুবর্-পাকিস্তানের জনসাধারণ দ্বিধাহীনচিত্তে তা পালন করে। ফলে পুর্ব পাকিস্তানের সম¯ত প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ে। ২ মার্চ, ৭১ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের পতাকা প্রদর্শিত হয়। ৩ মার্চ, ৭১ এ রমনা রেসকোর্স (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এ স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ হতে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করা হয়। এই ইশতেহারে‘ আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি ’ গানটিকে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বের প্রতি পূর্ণ আস্থা রেখে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এদিন পুর্ব ও পশ্চিম অংশের দু নেতা পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টকে সঙ্গে নিয়ে দেশের ভাগ্য নির্ধারণে ঢাকায় বৈঠকে মিলিত হন। তবে বৈঠক ফলপ্রসু হয়না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সারা বাংলায় ধর্মঘটের ডাক দেন।
পাকিস্তান সামরিক বাহিনী পরিচালিত সরকার জাতীয় পরিষদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে কোন সমাধান না দেওয়ায় বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ’ ৭১ ঢাকার রমনা রেসকোর্স ময়দানে সমগ্র বাঙালি জাতিকে এক দিকনির্দেশনী ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন। এই ভাষণে তিনি ২৫ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশনের আগেই বাস্তবায়নের জন্য চার দফা পেশ করেন। তাতে বলা হয় অবিলম্বে মার্শল ল’ প্রত্যাহার করতে হবে। সামরিক বাহিনীকে ব্যারাকে ফিরে যেতে হবে। নিহত ব্যক্তিদের সঠিক সংখ্য অনুসন্ধান করতে হবে। ২৫ মার্চে জাতীয় পরিষদের অধিবেশনের আগে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। শেখ মুজিব লাখো জনতার উদ্দেশ্যে তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণে ঘোষণা করলেন আমি যদি হুকুম দেবার নাও পারি তোমাদের কাছে আমার অনুরোধ রইলো প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল। …. এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ পৃথিবীতে উল্লেখযোগ্য নেতৃবৃন্দের ভাষণগুলির মধ্যে অন্যতমএকটি হিসেবে বিবেচিত।
সারা দেশ যখন ক্ষোভে উত্তাল তখন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয় খান ঢাকায় এসে শেখ মুজিবের সাথে সরকার গঠন ও ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারে আলোচনা শুরু করেন। কিন্তু একই সঙ্গে সামরিক বাহিনী পুর্ব পাকিস্তানে গণহত্যা চালানোর পুর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকে। বেলুচিস্তানের কসাই হিসেবে পরিচিত জেনারেল টিক্কা খানকে পুর্ব পাকিস্তানের গভর্ণর হিসেবে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়, কিন্তু কোন বাঙালি বিচারপতি তাকে শপথ পাঠ করাতে রাজি হননা। পুর্ব পাকিস্তানে সৈন্য ও অস্ত্র শস্ত্র আনা হতে থাকে। ১০ থেকে ১৩ মার্চের মধ্যে পাকিস্তান এয়ার লাইনস তাদের সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করে পুর্ব পাকিস্তানে জরুরিভিত্তিতে ‘সরকারি যাত্রি’ পরিবহন করতে থাকে। এই ‘সরকারি যাত্রিদের’ প্রায় সবাই ছিলো সাদা পোষাকে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর সেনা। এমভি সোয়াত নামে গোলাবারূদ ও অস্ত্র বোঝাই একটি পাকিস্তানি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে ভেড়ে। কিন্তু বন্দরের নাবিক ও শ্রমিকেরা মালামাল খালাস করতে অস্বীকার করে। ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসের একটি দল বাঙালি প্রতিবাদকারিদের ওপর গুলি চালাতে অস্বীকার করে, যার মাধ্যমে শুরু হয় বাঙালি সৈনিকদের বিদ্রোহ।
অনেক আশা সত্বেও মুজিব- ই্য়াহিয় বৈঠক সফল হয়না। অপর দিকে সামরিক বাহিনীর বড় বড় অফিসারদের নিয়ে ইয়াহিয়া খান ঘোষণা করে “তোমরা লক্ষ লক্ষ বাঙালিকে হত্যা করবে তখন দেখবে তারা আমাদের হাত চেটে খাবে।” পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ২৫ মার্চ পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীকে বাঙালি নিধনযজ্ঞের সবুজ সংকেত প্রদান করে রাতের অন্ধকারে গোপনে পশ্চিম পাকিস্তানে পাড়ি জমায়। ইয়াহিয়া খানের নির্দেশ মোতাবেক ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি আর্মি “ অপারেশন সার্চলাইট” নামে অপারেশন শুরু করে। এই অপারেশনের উদ্দেশ্য ছিলো বাঙালি প্রতিরোধ গুঁড়িয়ে দেয়া। এরই অংশ হিসেবে সামরিক বাহিনীর বাঙালি সদস্যদের নিরস্ত্র করে হত্যা করা হয়। ছাত্র ও বুদ্ধিজীবী সমাজ নিধন করা হয় এবং সারা বাংলাদেশে নির্বিচারে সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হয়। হত্যাকান্ডের খবর যাতে পৃথিবীর অন্যান্য দেশে না পৌঁছায় সে লক্ষে ২৫ মার্চের আগেই বিদেশি সাংবাদিকদের ঢাকা পরিত্যাগে বাধ্য করা হয়। তারপরও ওয়াশিংটন পোষ্টের প্রখ্যাত সাংবাদিক সায়মন ড্রিং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকায় অব্স্থান করে ওয়াশিংটন পোষ্টের মাধ্যমে সারা পৃথিবীকে এই গণহত্যার খবর জানিয়েছিলেন। যদিও এই হত্যাযজ্ঞের মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিলো ঢাকা । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো ছিলো তাদের বিশেষ লক্ষস্থল। একমাত্র হিন্দু আবাসিক হল পুরোপুরি ধংস করে দেয় পাািকস্তানি সৈন্যরা। এতে ৬শ থেকে ৭শ আবাসিক ছাত্র নিহত হয়। ঢাকার পিলখানায় ইপিআর বাহিনী, রাজারবাগ পুলিশ লাইন, সারা দেশের সামরিক আধা সামরিকবাহিনীর সদস্যদেরকে হত্যা করা হয়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এই নীল নকশার অধীনেই ২৫ মার্চের মধ্যরাতে ঢাকাসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহর চট্রগ্রাম , রাজশাহী, খুলনা , যশোর , রংপুর , সৈয়দপুর , কুমিল্লায় একই সময় অপারেশন শুরু করে । নীল নকশার মূল নায়ক পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের অপারেশন সার্চ লাইট শুরুর আগে রাতের আঁধারে একটি বিশেষ গ্রুপের (কমান্ড ) এক প্লাটুন সৈন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ৩২ নম্বর সড়কের বাড়ি আক্রমণ করে । ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর বাসভবন আক্রান্ত হওয়ার আগে আগত সহকর্মি ও দেশবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি ঘোষণা করেন ‘‘ আজ থেকে (২৬ মার্চ )বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম একটি রাষ্ট্র । একে এখন যে করেই হোক রক্ষা করতে হবে ।’’রাত ১২-২০ মিনিটে তিনি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিলেন । ঢাকা বেতার ততক্ষনে পাকিস্তানি বাহিনীর দখলে চলে যাওয়ায় বলধা গার্ডেনে রক্ষিত ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু তার স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রটি চট্রগ্রাম বেতার কেন্দ্রে পৌঁছে দিতে সক্ষম হন । ঘোষণা পত্রটি ছিলো ইংরাজী ভাষায় লিপিবদ্ধ। ২৬ মার্চ তারিখে চট্রগ্রাম বেতার কেন্দ্রের কয়েকজন কর্মকর্তা তা বাংলায় অনুবাদ করেন এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এমএ হান্নান শেখ মুজিবের স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রটি প্রথম মাইকিং করে প্রচার করেন। পরে ২৭ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বাঙালি অফিসার মেজর জিয়াউর রহমান চট্রগ্রামের কালুরঘাট স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে মহান নেতা শেখ মুজিবের পক্ষে তা প্রচার করেন। এদিকে রাত ১-২০ মিনিটের দিকে বঙ্গবন্ধুকে তার বাসভবন থেকে গ্রেফতার করা হয় । এর তিন দিন পর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় করাচিতে ।
এদিকে বাংলার অকুতভয় জনগণ পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। বাংলার দামাল ছেলেরা জীবন বাজি রেখে স্বেচ্ছায় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নিজেদের নাম লিপিবদ্ধ করিয়ে প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র ভারত থেকে এবং স্থানীয়ভাবে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। কিন্তু বড়ই দুখ ও পরিতাপের বিষয় এদেশের কিছু ধর্মান্ধ ব্যক্তি ইসলাম ধর্মের দোহাই দিয়ে পুর্ব-পাকিস্তানকে রক্ষার নামে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর হিসেবে তাদেরকে সর্বোতভাবে সাহায্য সহযোগিতা করতে থাকে। তারা রাজাকার, আলবদর, আল শামস বাহিনী গঠন করে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। শুধু তাই নয় তারা এদেশের সাধারণ মানুষের ঘর-বাড়িতে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, নারী ধর্ষণ ও এদেশের বুদ্ধিজীবীসহ সকল স্তরের মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করতে থাকে। এক কথায় তারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পূর্ণ সাহায্য সহযোগিতা করতে থাকে। এ দিকে মুক্তিযুদ্ধকে তরাম্বিত করার লক্ষ্যে ১০ এপ্রিল তারিখে কুষ্টিয়ার মেহেরপুরে মুজিব নগর সরকার গঠন করা হয় এবং ১৭ এপ্রিল এই মুজিব নগরে শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি করে গঠিত সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
দীর্ঘ নয় মাস একটানা যুদ্ধ করে ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সহায়তায় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন হয়। ৩০ লাখ শহীদের রক্ত আর ২লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে ১৯৭১সালের ১৬ ডিসেম্বর উদিত হয় বাংলার স্বাধীনতার লাল সুর্য। কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পর দীর্ঘ ৪৬ বছরেও ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস হিসেবে বিবেচিত হয়নি। বর্তমানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সেখ হাসিনার উদ্যোগে একাত্তরের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর হত্যাযজ্ঞে নিহতদের স্মরণে ওই দিন “গণহত্যা দিবস” পালনের প্রস্তাব এবং আন্তর্জাতিকভাবে এ দিবসের স্বীকৃতি আদায়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহনের বিষয়ে প্রস্তাব গত ১১ মার্চ’২০১৭ জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতভাবে পাশ হয়। সেই সাথে গত ২০ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রীসভার বৈঠকে ২৫ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর হত্যাযজ্ঞের দিনটিকে ‘ গণহত্যা দিবস’ ঘোষণার আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় যা বর্তমান সরকারের একটি যুগান্তকারি পদক্ষেপ বটে।
( লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট)।
এবাদত আলী
সদস্য পাবনা প্রেসক্লাব
তারিখ: ২৪/০৩/২০২৪.