// বিশেষ প্রতিনিধিঃ
পাবনা সুজানগর ভাটপাড়ার এক বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জমি দখলে নেওয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে প্রতাপশালী একটি চক্র এমন অভিযোগ উঠেছে।
তা রদ করতে এসিল্যন্ড’র আশ্রয় নিয়ে ওই জমি রক্ষার চেষ্টা চালাচ্ছে প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাছেদ শেখের পরিবার।
জানা যায় বীর মুক্তিযোদ্ধা বাছেদ ১৯৯৪ সাল থেকে ভাটপাড়া মৌজার সরকারি ২৪ শতাংশ জায়গা যার খতিয়ান নং- ৩৪৮ ও দাগ নং- ৫৩ ইজারা নিয়ে বৈধভাবে ভোগ দখল করে আসছিল। কিন্তু এতো
সালে বাছেদের মৃত্যুর পর তার ৫ সন্তান জমি সংক্রান্ত বিষয়ে অজ্ঞতার কারণে বাৎসরিক ইজারা নবায়ন না করায় ভাটপাড়া উত্তরপাড়ার ইব্রাহিম খানের ছেলে তিতাসের মহাব্যবস্থাপক হারুনর রশিদ মোল্লার গাড়ি চালক অভিযুক্ত মানিক উদ্দিন (৪০) সুযোগ বুঝে গত বছরের ডিসেম্বরের ৬ তারিখে সেখান থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ঘুষ বাণিজ্যের সুবিধা দিয়ে ১০ শতাংশ জমি তার নিজ নামে ডিসিআর কেটে নেন এমন অভিযোগ উঠেছে। তারপর অভিযুক্ত তরিঘরি সেই ইজারাকৃত সম্পত্তির উপর আরসিসি পিলার দিয়ে স্থায়ি দেয়াল নির্মাণ করার চেষ্টা করলে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাছেদ শেখ এর ছেলে ভুক্তভোগী শাহিনুর রহমান (৪৩) সুজানগর থানা পুলিশের শরণাপন্ন হন। পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধের নির্দেশ দিলে তারা কাজ বন্ধ করেন। পুলিশ চলে গেলে সে আবার কাজ শুরু করেন।
শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ওই জমিতে কাজ করছেন কয়েকজন মানুষ। সরকারি লিজকৃত সম্পত্তির ওপর পাকা দেয়াল তৈরির কি বৈধতা আছে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মানিক এই প্রতিবেদককে সচিব / সাংবাদিকসহ বিভিন্ন ক্ষমতাবান মানুষের ভয়ভীতি প্রদান করেন। তিনি জানান এটা সরকারি জমি। এই জমি আমার নামে লিজ নেয়া আছে। তার কাগজপত্র আমার কাছে আছে। তাদের নামে কোন ডকুমেন্টস নেই।
এদিকে শাহীন পাবনা ২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির, সাতবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল মজিদ সরদার ও ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম’র সুপারিশ নিয়ে ১০ ফেব্রয়ারি এসিল্যান্ড বরাবর একটি আপিল করেন। এসিল্যান্ড বদলিজনিত কারণে পদটি শূন্য থাকায় একই মাসের ২৮ তারিখে তদন্তের দাবীতে জেলা প্রশাসক বরাবর আরো একটি আপিল করেন। তারপর গাছ কাটা ও অবৈধ পাকা স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণের বিরুদ্ধে এমাসের ৪ তারিখে ইউএনও বরাবর আরও একটি দরখাস্ত করেন।
এলাকাবাসী আওয়াল মন্ডল, আলিম ও আসাদুজ্জামান বলেন মানিক পেট্রোবাংলায় ড্রাইভারের চাকরি করে। সে গোপনে লিজ কেটে নিয়ে এসে, এলাকাবাসীকে তোয়াক্কা না করে, বিভিন্ন জায়গায় টাকা পয়সা দিয়ে, মাস্তান ভাড়া করে, ক্ষমতা প্রদর্শন করে, কনো আমিন না এনে, জমি না মেপে, জোরপূর্বক দখল করছে। রাতের আঁধারে জমিতে বালু ফেলছে আর দিনে মিস্ত্রী লাগিয়ে কাজ করছে।
এ ব্যাপারে ইউএনও সুখময় সরকার বলেন বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সরকারি জমি কাউকে লিজ দেবার আগে সহকারী ভূমি কমিশনারের কার্যালয় থেকে দুই পক্ষকে হাজির হবার নোটিশ জারি করা হয়। যেহেতু তারা জমি সংক্রান্ত ব্যাপারে অতটা বোঝেননা সেহেতু তাদেরকে কি ডাকা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে ইউএনও বলেন কেন ডাকবো তাদের! তাকেই খোঁজ নিতে হবে। সরকারি জায়গা তাকে দেয়া হয়েছে। আবার তাকে খবর দিয়ে আনার কোন আইন বা প্রয়োজন সরকারের নেই।
জমি লিজের ব্যাপারে দুই পক্ষকে ডেকে তাদের উপস্থিতিতে সমাধান হবার আইন থাকলেও এসিল্যান্ড অফিস থেকে অভিযুক্তদের তলব করলেও ভুক্তভোগী পরিবারকে ডাকা হয় নাই।
উল্লেখ্য সেখানে আরও অভিযোগ উঠে যে, অভিযুক্ত মানিকের বাবা ভুক্তভোগী পরিবারের কর্মচারী ছিলেন। সেসময় বাছেদ তাকে মুজিব বাঁধের নিচে খাস জমিতে একটি বাড়ি করে দেন। সেই বাড়িতে সে পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। তখন মানিক দিন মজুরি করতেন। কিন্তু চাকুরি পাবার পর হঠাৎ কয়েক বছরের মধ্যে মানিক ঢাকায় তিনটা বাড়িসহ নিজ গ্রাম ভাটপাড়ায় ৯/১০ বিঘা সম্পত্তির মালিক বনে গেছেন।