// রানা আহম্মেদ অভি, ইবি।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রেণীকক্ষ সংকটের নিরসন ও শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদে আন্দোলন করেছে শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুর আড়াইটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কার্যালয়ের সামনে এ আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা। পরে বিকেল সাড়ে ৪টায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সাথে আলোচনা শেষ করে শিক্ষার্থীদের শান্ত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সালাম
শিক্ষার্থীদের দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যায়ন বিভাগে ২০২১-২২ শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা চলাকালে সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষকদের লাঞ্ছনা করা হয়েছে। এছাড়া তাদের শ্রেণীকক্ষ সংকট দ্রুত সমাধান করার দাবি জানান তারা। আন্দোলনরত অবস্থায় শিক্ষার্থীরা ‘ক্লাসরুম সংকট কেনো, প্রশাসন জবাব চাই,’ ‘ আমার শিক্ষক লাঞ্ছিত কেনো, প্রশাসন জবাব চাই,’ স্লোগান দিতে দেখা যায়।
জানা যায়, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেগাপ্রকল্পের অংশ রবীন্দ্র নজরুল কলা ভবনে পরিদর্শনে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোঃ আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন, প্রকল্প পরিচালক ড. নায়েব আলী প্রমুখ। প্রকল্প পরিদর্শন টিম সূত্রে জানা যায়, রবীন্দ্র নজরুল কলা ভবনের আংশিক কাজ বাকি রেখেই কয়েকটি রুম দখল করে নেয় উন্নয়ন অধ্যায়ন বিভাগ।
পরিদর্শন টিম বিভাগের সবাইকে ১ ঘন্টার জন্য মধ্যে বের হয়ে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয় বলে শিক্ষার্থীরা দাবি করেন। এসময় অবস্থানরত উন্নয়ন অধ্যায়ন বিভাগের শিক্ষক মোঃ হাফিজুর রহমানকে লাঞ্ছনার করা হয় বলে জানান তারা। শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদে ও শ্রেণীকক্ষ সংকট নিরসনের দাবিতে দুপুর ২টার পর থেকে উপাচার্য কার্যালয়ে অবস্থান নেন শতাধিক শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে উন্নয়ন অধ্যায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী অনন্যা শৈলী বলেন, ‘আমাদের পরীক্ষা চলাকালে আমার শিক্ষককে অপমানিত করা হয়। একঘন্টার মধ্যে সবাইকে বের হয়ে যেতে বলা হয় এবং মোঃ হাফিজুর রহমান স্যারকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।’
বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী সাফল্য খান বলেন, ‘একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হাতে আরেকটা শিক্ষক লাঞ্ছিত আমরা এই ধরনের আচরণ কোনভাবেই আশা করিনি। আমাদের সাতটা ব্যাচ সাতবছর যাবত একটা ক্লাসরুমে ক্লাস করছে, এই প্রশাসন আমাদের ক্লামরুম দিতে ব্যর্থ হয়েছে। ‘
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা মেগাপ্রকল্পের কাজ পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি পুরোপুরি কাজ শেষ হবার আগেই ক্লাসরুম দখল করে রাখা হয়েছে। আমরা আগামী ৩ মাসের মধ্যে এই ভবনের কাজ শেষ করে ক্লাসরুম অফিসিয়ালি বন্টন করবো। তারপর সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো শ্রেণীকক্ষ পাবে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন,’আমি শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছি। তাদের প্রধান সমস্যা শ্রেণীকক্ষ সংকট। আমরা সংশ্লিষ্ট সকল বিষয় নিয়ে আগামীকাল দুপুর ১২ টায় সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিন, বিভাগের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের নিয়ে মিটিং করে আলোচনা সাপেক্ষে সমস্যাটির সমাধান করব।’
প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগটি ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে একাডেমিক কার্যক্রম চালু হয়। বর্তমানে ৬ বছর পেরিয়ে গেলেও একটি মাত্র ক্লাসরুমে ক্লাস করে আসছিলো বিভাগটি। ফলে সময়মতো ক্লাস, পরীক্ষা নিতে না পারায় সেশন জটের সম্মুখীন হয় বিভাগটি।