// অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে :
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী সরকারি গৈলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে স্কুলে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, এক মিনিট নীরবতা পালন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, কৃষককূলের নয়নমনি সাবেক মন্ত্রী শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের প্রতিকৃতিতে ও স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা কৈলাশ চন্দ্র সেনের সমাধিতে পু®পমাল্য অর্পণ করা হয়। পরে স্কুল চত্বর থেকে শিক্ষার্থীদের নিয়ে র্যালী বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বিদ্যালয় চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। র্যালী শেষে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহিরুল হকের সভাপতিত্বে বিদ্যালয়ের মাঠে প্রতিষ্ঠাবাষির্কীর আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন সরদার, গৈলা ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম টিটু তালুকদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সিরাজুল হক সরদার, সহকারী প্রধান শিক্ষক গোলাম সরোয়ার হোসেন, শিক্ষিকা লিওনি শিখা শিকদার, শাহানাজ পারভীন, উপজেলা এনজিও সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজল দাশগুপ্ত, ব্যবসায়ী শাহাবুদ্দিন মোল্লা প্রমুখ।
উল্লেখ্য, বরিশালের গৈলা গ্রামে ১৮৯৩ সালের ২৩ জানুয়ারি গৈলা উচ্চ ইংরেজি স্কুলটি ১২২ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু তার অনেক পূর্ব থেকেই গৈলা আলোকিত গ্রাম। আরও অন্তত: অর্ধশত বছর আগে এ গ্রামের কবীন্দ্র বাড়িতে (ন হন্যতে ও মংপুতে রবীন্দ্রনাথ ও অন্যান্য বিখ্যাত গ্রন্থের লেখিকা মৈত্রেয়ী দেবীর বাড়ি) চালু হয়েছিল সংস্কৃত শিক্ষার কলেজ যেখানে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ফরিদপুর প্রভৃতি জেলা থেকে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার জন্য আসতেন। পাশাপাশি মৌলভীদের কাছে ফারসী ভাষা শিক্ষার ব্যবস্থাও ছিল। রবীন্দ্রনাথ তার সহজ পােঠ উল্লেখ করেছেন বরিশালের গৈলা গ্রামের নাম। এই গৈলা গ্রামেরই বাসিন্দা ছিলেন বিজয় গুপ্ত। তিনি অন্তত: ৫শ’ ২৬ বছর আগে মনসামঙ্গল কাব্য রচনা করেছিলেন বাংলায়। যখন অধিকতর প্রচলিত ভাষা ছিল সংস্কৃত। জীবনানন্দ দাশের মা কুসুম কুমারী দেবীও গৈলার বাসিন্দা। ‘আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে, কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে’ কবিতার রচয়িতা কুসুম কুমারী দেবী। ১৮৮৫ সালে সাড়ে চার বর্গমাইল আয়তনের এই গৈলা গ্রাম থেকেই গ্রামের এক ছাত্র কলিকাতা বিশ^বিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েট হন। ১৮৯৩ সালে কালুপাড়া উত্তরের বাড়ির বিশ্বেশ্বর সেন গ্রামের প্রথম এমএ। ১৮৮৫ থেকে ১৮৯২ পর্যন্ত গ্রামের ১৩ জন গ্রাজুয়েট ডিগ্রি লাভ করেন।