ঝিনাইদহ প্রতিনিধি।।
ঝিনাইদহে নৌকার সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) আসামীদের বিচারের দাবিতে ঝিনাইদহ সদর থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, ‘ঝিনাইদহের উত্তর কাষ্টসাগরা গ্রামের মারুফ সিদ্দিক (৩০) এই এজাহার দায়ের করেন। এতে শামসুল মন্ডল,আরিফুল, কবির, তুহিন বিশ্বাস, রানা, মনিরুল মালিতা, নয়ন মোল্লা, মানিক মোল্লা, শামীম, আবির, মারুল মালিতা, রুবেল, সাইদুল, সুমন, সিহাব, কবির মালিতা, জয়নুদ্দিন মন্ডল প্রমুখ আসামী করা হয়েছে।
এজাহার মতে ভুক্তভোগী বলেন, ‘এলাকা সামাজিকভাবে দুইটি দলে বিভক্ত। আসামীরা একপক্ষ অন্যদিকে প্রতিপক্ষ। ১২ জানুয়ারি তারিখ সকাল অনুমান সাগে ১০ টায় সময় আমি ও আমার পিতা বশারত মোল্লা (৫৫) উত্তর কাষ্টসাগরা সাকিনে আমাদের বসত বাড়ীর পূর্ব পার্শ্বে বেঁলে মাঠে আমাদের নিজেস্ব জমিতে মটর দিয়ে সেচ দেওয়াকালে সামাজিক বিরোধ ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আক্রোশে আসামীগন পূর্ব পরিকল্পিতভাবে একই উদ্দেশ্যে বে-আইনী জনতাবন্ধে হাতে রাম-দা, গাছি-দা, ডাসা-দা, লোহার রড, হাতুড়ী ও বাঁশের লাঠি প্রভৃতি দেশীয় তৈরী অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অনধিকার আমাদের স্বত্ত্ব দখলীয় জমির মধ্যে প্রবেশ করে চারিদিক থেকে ঘিরে ধরে। আসামী শামসুল মন্ডল অন্যান্য আসামীদের হুকুম দিয়ে বলে শালাদের ধর খুন কর। তখন আমি জীবন বাঁচানোর তাগিদে দৌড়ে পালিয়ে নিজেকে আত্মরক্ষা করি। ঐ সময় আসামী আরিফুল তার হাতে থাকা ধারালো রাম-দা দিয়ে খুন করার উদ্দেশ্যে আমার পিতার মাথা লক্ষ্য করে সজোরে কোপ দিলে ডান হাত দ্বারা প্রতিহত করলে কোপটি তার ডান হাতের কুনইয়ের উপর লেগে গুরুতর হাড়কাটা রক্তাক্ত জখম হয়। আসামী তুহিন তার হাতে থাকা ডাসা-দা দিয়ে খুন করার উদ্দেশ্যে আমার পিতার মাথা লক্ষ্য করে সজোরে কোপ দিলে ডান হাত দ্বারা প্রতিহত করলে কোপটি তার ডান হাতের কুনইয়ের নিচে লেগে গুরুতর হাড়কাটা রক্তাক্ত জখম হয়। আসামী রানা তার হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে খুন করার উদ্দেশ্যে আমার পিতার মাথায় আঘাত করলে বাম হাত দিয়ে ঠেকালে আঘাতটি তার বাম হাতে বাহুতে লেগে গুরুতর হাড়ভাঙ্গা জখম হয়। আসামী মনিরুল মালিতা লোহার রড দিয়ে আমার পিতার বাম পায়ের হাটুর নিচে সজোরে আঘাত করে গুরুতর হাড়ভাঙ্গা জখম করে। আসামী শামীম লোহার রড দিয়ে আমার পিতার ডান পায়ের হাটুর উপর সজোরে আঘাত করে গুরুতর হাড়ভাঙ্গা জখম করে। পায়ের আঘাতে আমার পিতা মাটিতে পড়ে গেলে এজাহার নামীয় অন্যান্য আসামীগন লোহার রড, হাতুড়ী ও বাঁশের লাঠি দিয়ে আমার পিতার সর্ব শরীরে এলোপাতাড়ীভাবে পিটিয়ে ফোলা ও বেদনাযুক্ত কালশিরা জখম করে। আমার পিতা জ্ঞান হারিয়ে ফেললে মারা গেছে ভেবে আমার পিতাকে ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে আসামীরা একযোগে আমাদের বসত বাড়ীর মধ্যে অনধিকার প্রবেশ করে আমাদের ঘর দরজা ভাঙ্গার চেষ্টা করে। তখন আমার মা মোছা: পারভীন খাতুন (৪৭) ও নানী মাজেদা খাতুন (৭০) আসামীদের বাধা নিষধ করলে আসামী কবির তার হাতে থাকা লোহার হাতুড়ী দিয়ে খুন করার করার উদ্দেশ্যে আমার মায়ের মাথায় আঘাত করলে মাথা সরিয়ে নিলে আঘাত আমার মায়ের মুখের উপর লেগে নিচের ঠোট ফেটে নিচের পাটির দুটি দাঁত নড়ে গিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। আসামী তরিকুল লোহার রড দিয়ে আমার মায়ের মুখে পুঁথনীর উপর আঘাত করে গুরুতর জখম করে। আসামী মানিক লোহার রড দিয়ে আমার নানীর বাম পায়ের গোড়ালীর উপরে আঘাত করে গুরুতর হাড়ভাঙ্গা জখম করে। এজাহার নামীয় অন্যান্য আসামীগন লোহার রড, হাতুড়ী ও বাঁশের লাঠি দিয়ে আমার মা ও নারীর সর্ব শরীরে পিটিয়ে ফোলা ও বেদনাযুক্ত জখম করে। সাক্ষী ১। লুৎফর শেষ (৬৫), ২। কাসেম মোল্লা (৩৫), ৩। ওহিদুজ্জামান (৩৬) সহ আরো অনেকে ছুটে এলে আসামীরা খুন জখমের ভয়ভীতি দেখিয়ে চলে যায়। আসামীরা চলে যাওয়ার পর আমি সাক্ষীগনের সহায়তায় আমার জখমী পিতা, মাতা ও নানীকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করি।’
ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’