// মশাহিদ আহমদ, মৌলভীবাজার ঃ মৌলভীবাজারে মাতারকাপন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনিয়ম ও দুর্ণীতির মাধ্যমে বিদ্যালয়ে পাঠদান অব্যাহত রেখেছেন মর্মে অভিযোগ উঠেছে সহকারী শিক্ষিকা বেবী কর এর বিরুদ্ধে। শিক্ষা অধিদপ্তরের নীতিমালা লঙ্গন করে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা থেকে শুরু করে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারী এই অনিয়মের সাথে জড়িত অভিযোগ রয়েছে। অনলাইনে বদলীর আদেশ থাকা সত্বেও অবৈধ ভাবে নিজেদের ইচ্ছা মাফিক এসব অনিয়ম-কে নিয়মিত চালিয়েছেন।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়- বেবী কর বিগত ৪ জানুয়ারি-২০২৩ইং তারিখে শ্রীনাথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলী হয়ে বিগত ২২ জানুয়ারি-২০২৩ইং তারিখে মাতারকাপন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। কিন্তু ওচঊগওঝ তথ্যে দেখা যায়, বেবী কর শ্রীনাথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছিলেন বিগত ২৮ মে-২০২৩ইং পর্যন্ত। অর্থাৎ ৪ জানুয়ারি তারিখের পর থেকে আইপিইএমআইএস মাতারকাপন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার নাম না থাকলেও তিনি মাতারকাপন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান অব্যাহত রাখেন। এমনকি তিনি ঐ বিদ্যালয় (মাতারকাপন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়) থেকে ছুটি নিয়ে ভারত গমন করেন। ৪জানুয়ারি বেবী কর বিদ্যালয় থেকে বদলী হলেও শ্রীনাথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে না গিয়ে একই ভাবে মাতারকাপন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পাঠদান অব্যাহত রাখেন এবং সেখানে তিনি নিয়মিত দৈনিক শিক্ষক হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন। বেবী কর বড় অংকের উৎকোচের বিনিময়ে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে এই অনিয়ম করেন। অভিযোগ রয়েছে- সাবেক প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা মোতাহার বিল্লাহ, এবং সহকারি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আরতি ব্যানার্জি (বর্তমান কর্মস্থল, রাজনগর উপজেলা শিক্ষা অফিস), অফিসের বর্তমান উচ্চমান সহকারি মোহাম্মদ আলী, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের উচ্চমান সহকারি জাকির হোসেন, মাতারকাপন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সবুজ রঞ্জন দাস চৌধুরী এসব অনিয়মের বিষয়ে সহযোগীতা করেছেন। নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে আরো জানা যায়- ৪জানুয়ারি বেবী কর বিদ্যালয় থেকে বদলী হলে, পরবর্তীতে তার শূন্য পদে মৌলভীবাজার জজ কোর্টের আইনজীবি সাকির আহমদের স্ত্রী ঐ বিদ্যালয়ে আবেদন করেন। কিন্তু সহকারী শিক্ষিকা বেবী কর এর কারণে তিনিও তার কর্মস্থলে যোগদান করতে পারছেন না। এ ব্যপারে জানতে চাইলে সহকারি শিক্ষক বেবী কর বলেন- আমি কখনো শ্রীনাথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করিনি। আপনী অফিসের সাথে কথা বলেন।
অনলাইনে ভুল হয়েছে। আবেদন ছাড়া বিদ্যালয় থেকে বদলী হলেন কি করে ? । আপনার কর্মস্থল এক স্কুলে, অথচ, ভারত গমনের জন্য ছুটি নিলেন অন্য স্কুল থেকে। সেই আবেদন কিভাবে তৈরি করলেন ? এসব অনিয়মের সাথে জড়িত কারা ? এমন প্রশ্নের জবাবের সঠিক উত্তর দিতে পারেন নি। মাতারকাপন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সবুজ রঞ্জন দাস চৌধুরী বলেন- সহকারী শিক্ষিকা বেবী কর বিদ্যালয়ে ক্লাস করছেন। উনার কাগপত্রে কিছুটা অসঙ্গতি রয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অফিস বিষয়টি অবগত রয়েছে। আর্থিক লেনদেন এর বিষয়টি সঠিক নয়। সহকারি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (বর্তমান কর্মস্থল, রাজনগর উপজেলা শিক্ষা অফিস) আরতি ব্যানার্জি বলেন- আমার বর্তমান কর্মস্থল রাজনগর। তাই এই বিষয়ে কিছু বলবো না। শ্যামরাবাজার ক্লাস্টার এর দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে আপনী সহকারী শিক্ষিকা বেবী কর-কে অবৈধ লেনদেন এর মাধ্যমে সহযোগীতা করেছেন,
এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান- অভিযোগটি সঠিক নয়। এ বিষয়ে জানতে উচ্চমান সহকারী কাম-কম্পিউটার মোহাম্মদ আলী- এর সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা অরবিন্দু কর্মকার বলেন, তিনি বদলির পূর্বেও আমি দায়িত্বে ছিলাম না, এখনও দায়িত্বে নেই। সহকারী শিক্ষিকা বেবী কর এর কাগজপত্রে অসঙ্গতি থাকায় পরবর্তীতে উনার বদলি বাতিল করা হয়। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার খোরশেদ আলম জানান- মাতারকাপন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা বেবী কর নিশ্চিয়ই বদলীর জন্য আবেদন করেছেন। তাই শ্রীনাথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলির আদেশ রয়েছে। কোন কারণে বদলির আদেশে বাতিলও হতে পারে। বদলিকৃত কর্মস্থলে না গিয়ে আবার একই কর্মস্থলে বদলি হন কিভাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন- (বর্তমান কর্মস্থল, রাজনগর উপজেলা শিক্ষা অফিস) আরতি ব্যানার্জি ও শিক্ষা কর্মকর্তা অরবিন্দু কর্মকার অবগত আছেন। তারপরও আমি এ বিষয়টি দেখবো।