// সাহিদা আক্তার সাথী
আমি ক্যাম্পাস বার্তা সংগঠনের নতুন সদস্য। ক্যাম্পাস বার্তার সদস্য হওয়ার পর, যে বিষয়গুলো আমার দৃষ্টিনন্দনে আর্কষনীয় লেগেছে,সে বিষয়গুলো নিম্নে বর্ণনা করলাম। যদিও ক্যাম্পাস বার্তার পরিবারের সাথে আমার পরিচিতি খুব অল্প দিনের। সংগঠন বলতে আমি যা বুঝি ,সাধারণত পরস্পর সম্পর্কযুক্ত অনেকগুলো লক্ষ্য অর্জনে কার্যসম্পাদনের জন্য দুই বা ততোধিক ব্যক্তিকে একত্রিত করে সচেতনভাবে যে সামাজিক দল বা এককের সমন্বয় সাধন করা হয় তাকে সংগঠন বলে।
প্রথম ক্যাম্পাস বার্তা সংগঠনের কথা শুনে,খুব আগ্রহ কাজ করেছে ক্যাম্পাস বার্তার সদস্য হওয়ার। ভাইবার সম্মুখে গিয়ে জানতে পেলাম,ক্যাম্পাস বার্তা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ শিক্ষার্থীদের মুখপত্র। “সৃজনশীলতা বিকাশে ক্যাম্পাস বার্তা” এ স্লোগানে ২১ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ সাল থেকে যাত্রা শুরু করে এ সংগঠন। সাংবাদিকতা প্রশিক্ষণ, সাহিত্যকর্ম, কবিতা আবৃত্তি, আর্তমানবতা সেবা, সহশিক্ষা কার্যক্রম, মুক্ত চিন্তার উন্মুক্ত চর্চা, সুপ্ত সৃজনশীল প্রতিভার বিকাশে কাজ করছে ক্যাম্পাস বার্তা।
ভাইভাতে যখন জিজ্ঞাসা করল, লেখালেখি কেমন করি? আমিতো পাঠ্য বিষয় ব্যতীত আলাদাভাবে কোনোকিছু লেখালেখি চর্চা করি না, অভিজ্ঞতা ও নাই। চিন্তা করলাম,ক্যাম্পাস বার্তা সংগঠনভিত্তিক যে বিষয়গুলো আছে, আমার জ্ঞানের পরিধি যে সামান্য ! আমার এই প্রতিভা কি হবে?
তারপর ক্যাম্পাস বার্তার সদস্য হওয়ার সুযোগ হওয়াতে মাঝে মধ্যে আলোচনা সভায় যেতাম। এভাবে ক্যাম্পাস বার্তা সংগঠন পরিবারের সাথে পরিচিত হলাম। আলোচনা সভায় ক্যাম্পাস বার্তার সদস্য এবং সম্পাদকদের কথা শুনে নিজেকে পরিবর্তন করার আত্মচেষ্টা উপলব্ধি করলাম। কিভাবে ১৫/২০ লোকের সামনে নিজের পরিচয় উপস্থাপন করতে হয়? ওনাদের অসাধারণ প্রতিভা,কথা বলার মাধুর্য,অন্যের প্রতি সহমর্মিতা সহযোগিতা এবং সহানুভূতি ইত্যাদি উপলব্ধি করলাম। যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজেদেরকে মানিয়ে নিতে পারে, সমাজের প্রয়োজনে,দশের প্রয়োজনে, দেশের প্রয়োজনে এগিয়ে আসতে শিখায়। তাছাড়া আমি ক্যাম্পাস বার্তা পরিবার থেকে অনেক বিষয়ে অনেক ভাবে উপকৃত হয়েছি, যা আমার কাছে অনেক কিছু এবং আমি খুবই কৃতজ্ঞ।আমার খুবই ভালো লাগলো, আমি উপলব্ধি করলাম, চেষ্টা করলে হয়তো আমিও পারবো। সর্বোপরি আমি এই কথাই বলব, শুরু ক্যাম্পাস বার্তা সংগঠন নয়,
একজন শিক্ষার্থী অ্যাকাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা অর্জনের জন্য একাধিক সংগঠনে যুক্ত হওয়া উচিত। বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক শ্রমবাজারে সিলেবাস ভিত্তিক পড়াশোনার পাশাপাশি সময়ের চাহিদা প্রয়োজন নিজেকে বিকশিত করার কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক শিক্ষা যেমন শিক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি প্রয়োজন নিজেকে বিকশিত করার কার্যক্রম। আর সেটি সম্ভব হয় তখনই যখন পড়াশোনার পাশাপাশি নিজেকে এগিয়ে নিতে প্রগতিশীল সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনে যুক্ত হয় শিক্ষার্থীরা। আর সেখন থেকেই সুপ্ত প্রতিভাগুলো বিকশিত হয়ে ভূমিকা রাখে শুদ্ধ সংস্কৃতির পথচলায়। আর সেখান থেকেই নানামুখী কর্মদক্ষতা ও মানুষ হয়ে ওঠার মন্ত্র নিয়েই এগিয়ে চলে শিক্ষার্থীরা। সে জন্যই তাদের কেবল শিক্ষার্থীর বাইরে গিয়ে বলা হয় সচেতন শিক্ষার্থী। ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, এর বিকাশ ও বুদ্ধিমত্তার সুষ্ঠু চর্চার জন্য প্রতিটি শিক্ষাঙ্গনে সহশিক্ষা কার্যক্রম এবং তা নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর ভূমিকা সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে চিন্তা করলে মুক্তচিন্তার সোপান হতে পারে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন। বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের একত্র হওয়া, বিভিন্ন মতাদর্শের প্রয়োগ, শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভা অন্বেষণ কিংবা পছন্দের ও আগ্রহের ক্ষেত্রগুলোতে নিজেদের আরো দক্ষ করে তোলা এই সবকিছুই সম্ভব সুপরিচালিত এবং গতিশীল সংগঠনের সুষ্ঠু কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে। একটি সংগঠনকে গতিশীল রাখার ব্যাপারে অবশ্যই তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিবেদিতপ্রাণ হতে হবে। শুধু নিবেদিতপ্রাণই নয়, থাকতে হবে সাংগঠনিক দক্ষতা এবং পরিশ্রমের মনোবল। বিশ্ববিদ্যালয় হলো উন্মুক্ত জ্ঞানচর্চার তীর্থস্থান।
বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনে এগিয়ে নিতেও ভূমিকা রাখে বিভিন্ন সংগঠনের সদস্য শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠনগুলো তাদের স্বীয় কাজের মাধ্যমে যেমন নিজেদের ধরে রাখার চেষ্টা করে, তেমনই স্বেচ্ছাসেবকদেরও তাদের নিজস্ব দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। নিজের দক্ষতা ও গুণাবলি অর্জনে সংগঠনগুলো সক্রিয় ভূমিকা পালন করে যা পরবর্তী সময়ে তার জীবন ধারণ বা কর্মক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যুক্ত করে। এর পাশাপাশি নিজের কাজকে তুলে ধরার ও একটা মাধ্যম হিসেবে কাজ করে সংগঠনগুলো। আমার মনে হয় সংগঠনগুলো এভাবে তাদের কাজের ধারা অব্যাহত রেখে শিক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন দক্ষতা ও গুণাবলি অর্জনে আরো সুন্দরভাবে কাজ করে যাবে। পরিশেষে বলা যায়,একটি সংগঠন একজন শিক্ষার্থীর সৃজনশীলতা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।নিজেকে দক্ষ নেতৃত্ব, যোগ্য ও প্রগতিশীল হিসেবে গড়ে তুলতে সংগঠনের বিকল্প নেই।
লেখক: সাহিদা আক্তার সাথী, সমাজকর্ম (মাস্টার্স), ২০২১-২২ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ