// সঞ্জু রায়, বগুড়া:
বগুড়া-৪ (নন্দীগ্রাম-কাহালু) আসনে দীর্ঘ ২২ বছর পর নৌকার প্রার্থী দিয়েছিল আওয়ামী লীগ কিন্তু শেষ পর্যন্ত তীরে ভীড়লো না নৌকা আসনটি ছেড়ে দেয়া হয়েছে শরিক দল জাসদকে। এই আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছিলেন কাহালু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন কবিরাজ। কিন্তু আবারও ১৪ দলীয় জোটের শরিক জাসদকে আসনটি ছেড়ে দেওয়ায় আশাহত হয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হেলাল উদ্দিন কবিরাজ “মনে হয় কোন জন্মে পাপ করেছে” লিখে ফেসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন যা নতুন করে জন্ম দিয়েছে আলোচনা সমালোচনার।
কাহালু ও নন্দীগ্রাম উপজেলার আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মী জানান, বগুড়া-৪ আসনটি দীর্ঘদিন জামায়াত ও বিএনপির দখলে ছিল। ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নন্দীগ্রামের শহীদুল আলম দুদুকে নৌকার মাঝি করা হয়েছিল। ১৪ দলীয় জোট গঠনের পর থেকে এই আসনের জনগণ আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেননি। এই আসনটি জেলা জাসদ সভাপতি একেএম রেজাউল করিম তানসেনকে ছেড়ে দেয়ায় এক প্রকার নিরব ক্ষোভ কাজ করছে সকলের মাঝে কারণ দুই দফা সাংসদ হলেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আপদে-বিপদে পাশে দাঁড়াননি এমপি তানসেন এমনটাই অভিযোগ তাদের। এনিয়ে গত ১১ ডিসেম্বর দুপুরে নন্দীগ্রাম উপজেলা জাসদের নেতাকর্মীরা কর্মী সভা থেকে প্রার্থী একেএম রেজাউল করিম তানসনেকে বয়কটের ঘোষণা দেন।
এ প্রসঙ্গে বঞ্চিত প্রার্থী কাহালু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন কবিরাজ বলেন, মনে কষ্ট পেয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছি। অন্য কোনো কিছু মনে করে দেয়নাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের প্রতি আস্থাশীল। তিনি যা ভালো মনে করেছেন, তাই করেছেন। দলের বাইরে কথা বলার ইচ্ছা নেই।
উল্লেখ্য, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়ায় শরিক দল জাতীয় পার্টি ও জাসদকে ৩ টি আসন ছেড়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এছাড়াও জাকের পার্টির ৬ জনসহ ১১ প্রার্থী নিজেদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। জোটের শরীক দলকে ছাড় দেওয়ার কারণে বগুড়ার তিনটি আসনে নৌকার প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে হয়েছে। এর মধ্যে এক প্রার্থী নৌকা থেকে নির্বাচনের প্রত্যাশায় ছেড়ে দেন উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ। আরেকজন পৌরসভার মেয়রের পদ থেকে অব্যাহতি নেন বগুড়া-২ আসনে তৌহিদুর রহমান মানিক যিনি শিবগঞ্জের মেয়র আর বগুড়া-৩ আসনের সিরাজুল ইসলাম রাজু যিনি ছিলেন আদমদিঘী উপজেলা চেয়ারম্যান অথচ রাজনীতির হিসাব-নিকাশের বেড়াজালে তাদের হারাতে হয়েছে দু-কূলই। আর হেলাল উদ্দিন কবিরাজ প্রতিকূলতার মাঝেও নৌকা পেয়েও হারাতে হলো দলের সিদ্ধান্তে আর তাতেই এই আবেগ প্রকাশ।
জেলায় ৭টি সংসদীয় আসনে ভোটের মাঠে রয়েছে ৫৪ জন প্রার্থী যার মাঝে বগুড়া ১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনে ১০ জন, বগুড়া ২ (শিবগঞ্জ) আসনে সাত জন, বগুড়া ৩ (আদমদিঘী-দুপচাচিয়া) ১১ জন, বগুড়া ৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ৫ জন, বগুড়া ৫ (শেরপুর-ধুনট) ৫ জন, বগুড়া ৬ (সদর) ৫ জন ও বগুড়া ৭ (গাবতলি-শাজাহানপুর) আসনে ১১ জন প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয় সোমবার। বগুড়ায় সাতটি আসনে মোট ২৮ লাখ ২৮ হাজার ৩৪৪ জন ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।