ঈশ্বরদী জংশনের নিরাপত্তা জোরদারকরণে সমন্বিত উদ্যোগ

// ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতা:
ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনের প্রশ্নবিদ্ধ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করণে সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চল রেল কর্তৃপক্ষ সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) ঈশ্বরদীতে একটি সমন্বয় সভার আয়োজন করেন। সমন্বয় সভায় রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় কর্মকর্তা ছাড়াও উপজেলা প্রশাসন, পাবনা জেলা পুলিশ, পাকশী রেল পুলিশ, এনএসআই এবং রেল নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারা সার্বিক নিরাপত্তা বিষয়ে ত্রুটি-বিচ্যুতি নিয়ে মতামত ব্যক্ত করেন।

জানা গেছে, ঈশ্বরদী স্টেশনের প্রকল্প অফিসের কনফারেন্স রুমে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় অনুষ্ঠিত সমন্বিত সভায় সভাপতিত্ব করেন পশ্চিমাঞ্চল রেলের মহাব্যস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার। পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার শাহ সূফি নূর মোহাম্মদ, বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ বীরবল মন্ডল, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুবীর কুমার দাশ, পাবনা জেলা পুলিশের ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার গোস্বামী, পাকশী রেল পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফিরোজ কবীরসহ রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

জিএম অসীম কুমার তালুকদার সমন্বিত সভা প্রসংগে জানান, চলমান হরতাল-অবরোধে বারবার নাশকতার ঘটনা এবং সার্বিক নিরাপত্তা বাড়াতে সমন্বিত সভা হয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত প্রসংগে তিনি বলেন, রেল ইয়ার্ডের আশেপাশের বসতির লোকজন যাতে লাইনের উপর দিয়ে এবং ইয়ার্ড দিয়ে যাতে চলচল করতে না পারে, সেজন্য যে গেটগুলো আছে তা বন্ধ করে প্রাচীর তুলে দেওয়া হবে। পূর্ব হতে পশ্চিম পাড়ে বা পশ্চিম হতে পূর্ব পাড়ে আসার যে রাস্তাগুলো ছিলো সেগুলো কেটে বন্ধ করা হবে। আর্থিক কারণে আপাতত: প্রাচীর দেওয়া সম্ভব না হলে ড্রামসীট দিয়ে দ্রুত আটকানো হবে। নষ্ট সিসি ক্যামেরা ফেলে দিয়ে নতুন ৫০টি সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে। ইয়ার্ডের ওয়াশফিট পর্যন্ত সিসি ক্যামেরা টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং ডিউটি পালনে রেল পুলিশ ও রেল নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে সমন্বয় নিশ্চিত করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুবীর কুমার দাশ সমন্বয় সভা প্রসংগে বলেন, রেল কর্তৃপক্ষ এখন থেকে উপজেলা প্রশাসন, পাবনা জেলা পুলিশ এবং অন্যান্য সংস্থার সাথে সমন্বয় করে নিরাপত্তাসহ সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) ঈশ্বরদী সার্কেলের পরিদর্শক ফিরোজ আহমেদ জানান, ইতোমধ্যে লোকবল ১০ জন বাড়ানো হয়েছে। প্রয়োজনের তাগিদে ৮ ঘন্টার স্থলে ১২ ঘন্টা করে ডিউটি করছে আরএনবি’র সদস্যরা। টহল ডিউটি বাড়ানোর সাথে সাথে স্পটে ডিউটিরতদের সাথে সমন্বয় করা হচ্ছে।

প্রসংগত: ঈশ্বরদী জংশনে সর্বশেষ গত ২৭ নভেম্বর রাত সাড়ে আটটার দিকে ওয়াশফিটে ট্রেনের বগিতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে ১১টি সিট পুড়ে যায়। এর আগে মৈত্রী এক্সপ্রেসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ, ট্রেনের নিচে থেকে বোমা উদ্ধার এবং রেলগেটে রেললাইনের ওপর আগুন দেওয়ার ঘটনায় প্রশ্নবিদ্ধ হয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এসব ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইনে ‘ঈশ্বরদী জংশনে বারবার নাশকতার চেষ্টা, নিরাপত্তাব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে নড়েচড়ে বসে রেল কর্তৃপক্ষ।