// ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনের রেলইয়ার্ডের ওয়াশফিটে ট্রেনের বগিতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ওয়াশফিটে রাখা ট্রেনের বগিতে কোন যাত্রী না থাকায় হতাহতের কোন ঘটনা ঘটেনি। তবে ৫৫৫১ নং কোচের ১১টি সীট আগুনে পুড়ে গেছে। সোমবার (২৭ নভেম্বর) রাত সাড়ে আটট্রা দিকে এঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঈশ্বরদী ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পর উপজেলা প্রশাসন, পাবনা জেলা পুলিশ, পাকশী রেল পুলিশ, র্যাব, ডিবি পুলিশ এবং রেল নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়েছেন।
বিএনপি’র ডাকা চলমান অবরোধ কার্যকর করতে নাশকতার উদ্দেশ্যে ট্রেনের বগিতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে প্রশাসন, পাবনা জেলা পুলিশ, রেল পুলিশ, র্যাব ও রেল নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। বারংবার ঈশ্বরদী জংশনে নাশকতার প্রচেষ্টা চালানোর পরও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করণে রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় কর্মকর্তাদের উদাসীনতাকে দায়ী করা হয়েছে।
জানা গেছে, ৬ নং ডাউন মেইল ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে এসে ইয়ার্ডের ওয়াশপিটে পরিস্কার- পরিচ্ছন্নতার জন্য রাত সাড়ে সাতটার দিকে রাখা হয়। এ ট্রেনটি আবার মঙ্গলবার ভোরে ৯৯ আপ হয়ে ঢাকা যাওয়ার কথা।
ঈশ্বরদী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাস্টার অপূ মন্ডল বলেন, খবর পেয়ে সাড়ে আটটার দিকে আমাদের দুটি টিমের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এতে ট্রেনের ১১টি সীট পুড়ে গেছে।
স্টেশনের সুপারিনটেন্ড মহিবুল ইসলাম এ ঘটনার জন্য রেল নিরাপত্তা বাহিনীকে দায়ীকরে বলেন, তারা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতো তাহলে এধরণের ঘটনা ঘটতো না। দায়িত্বে ঘাটতি রয়েছে, যেকারণে সন্ধ্যার সময় আগুন দিয়ে চলে গেল।
রেল নিরাপত্তা বাহিনীর পরিদর্শক ফিরোজ কবীর বলেন, চাপের মধ্যে আছি। সুদীর্ঘ ফাঁকা ইয়ার্ড, আমাদের কম জনবল দিয়ে নিরাপত্তা বিধান করা খুবই কষ্টসাধ্য।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুবীর কুমার দাশ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশের গুরুত্বপূর্ণ ও বৃহত্তম জংশন স্টেশনে সিসি ক্যামেরা নষ্ট। এসব বিষয় নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষকে বারবার বিশেষ করে পাকশীর ডিআরএমকে বলা হলেও তিনি এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেননি। এমনকি মৈত্রি এক্সপ্রেস ট্রেনে বোমা নিক্ষেপ, রেলইয়ার্ডে ককটেল উদ্ধারের পর এবং আজও তারা ঘটনাস্থলে আসেননি।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মাসুদ আলম বলেন, নিরাপত্তা বিষয়ে রেল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
রেল পুলিশের পাকশীর পুলিশ সুপার সাহাব উদ্দিন বলেন, রেল ইয়ার্ডের নিরাপত্তার দায়িত্ব রেল নিরাপত্তা বাহিনীর। এবিষয়ে আমার কোন বক্তব্য নেই জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা ঘটনার তদন্ত করছি।
প্রসংগত: মৈত্রি এক্সপ্রেস ট্রেনে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ, স্টেশনে ট্রেনের নিচে থেকে বোমা উদ্ধার এবং রেলগেটে রেললাইনের ওপর অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আতংকগ্রস্থ সাধারণ যাত্রীরা। স্টেশনের মাত্র ১৭টি সিসি ক্যামেরা দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট। পশ্চিম রেলের সবচেয়ে বড় জংশনের নিরাপত্তায় রেল পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য সংখ্যা অপ্রতুল। ##