পাবনায় কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে কিশোর হত্যা

// বিশেষ প্রতিনিধিঃ পাবনা শহরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে মোস্তাফিজুর রহমান সিয়াম (১৮) নামে এক কিশোর নিহত হয়েছে।

শনিবার আনুমানিক রাত ১০ টার দিকে শহরের প্রাণকেন্দ্র শহিদ আমিন উদ্দিন আইন কলেজের পাশে এ ঘটনা ঘটে। সিয়ামকে উদ্ধার করে পাবনা সদর  হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত সিয়াম পাবনা পৌর সদরের পৈলানপুর পাওয়ার হাউজপাড়া মহল্লার ইব্রাহিম আলীর ছেলে। সে বাঙ্গাবাড়িয়া একটি ভাঙ্গরির দোকানে কাজ করতো। পাশাপাশি আর এম একাডেমিতে দশম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত ছিল। বিবাহিত হওয়ায় সাংসারিক অসুবিধার কারণে ছয় মাস আগে পড়ালেখা বাদ দিয়ে সে কাজে যোগদান করে। সিয়াম দুই ভাই এক বোনের মধ্যে ছোট ছিল। এ ব্যাপারে তার বড় ভাই মোকসেদুল মোমিন তন্ময় (২৫) জানান শনিবার সন্ধ্যায় রাধানগর রথঘর এলাকায় সিয়ামের সঙ্গে তার বন্ধু রাজ ওরফে (মেথর রাজ), সৈকত ও নিবিরসহ আরও কয়েকজনের পূর্ববিরোধ নিয়ে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এ ঘটনার জেরে রাতে শান্তিনগর এলাকায় সিয়ামকে একা পেয়ে কুপিয়ে পালিয়ে যায় কিশোর গ্যাং নেনা রাজ ও তার দলবল। সিয়ামের বন্ধু রাতুল তাকে উদ্ধার করে পাবনা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত সিয়ামের বাবা ইব্রাহিম আলী (৫৫) বলেন, ‘রাত ১১টার দিকে অনিক মুঠোফোনে জানায়  সিয়ামকে  চাকু মারা হয়েছে। সে এখন হাসপাতালে চিকিৎসারত আছে। সাথে সাথে হাসপাতালে গিয়ে দেখি ছেলেটা মারা গেছে।  কারা কী কারণে মারলো কিছুই বুঝতে পারছি না। যারাই এ হত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার চাই।

নিহতের মা শামীমা খাতুন লিপি (৩৮) জানান রাজ, নিবির ও তাদের দলবল মিলে আমার ছেলেকে খুন করেছে। তিনি এর সঠিক বিচার দাবি করেন। তার স্ত্রী মিম খাতুন বলেন আমার স্বামী খুব ভালো মানুষ ছিলেন। তার কোন শত্রু থাকতে পারে তাও জান নেয়া! এটা আসলেই একটা হতাশাজনক ঘটনা এলাকাবাসী সুজন চন্দ্র দেবনাথ, মিন্টু প্রামাণিকসহ অনেকেই বলেন এলাকার মধ্যে সিয়ামকে কোনদিন কোন অন্যায় করতে দেখিনি। সে ভালো ছেলে ছিল।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলী জানান, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও হাসপাতালে নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেছে। সেইসঙ্গে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে আমরা তুষারকে হেফাজতে নিয়েছি।  জিজ্ঞাসাবাদ চলছে, এখনো এজাহার দায়ের হয়নি। বাদীপক্ষ মামলা দিলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বডি সদর হাসপাতাল মর্গে আছে। ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হলে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।