// বিশেষ প্রতিনিধিঃ
রোববার ১০ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে দশটায় পাবনা জেলা পরিষদের উদ্যোগে জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে দরিদ্র, মেধাবী ও কৃতি ৭শ শিক্ষার্থীদের মাঝে বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
“উন্নয়ন ও প্রযুক্তির শিক্ষা
স্মার্ট বাংলাদেশের দীক্ষা”
এই স্লোগানে শিক্ষার প্রসারে গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে এ শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়।
মূলত জেলা পরিষদের নিজস্ব তহবিল থেকে দরিদ্র মেধাবি রোগগ্রস্ত সুবিধা বঞ্চিত অভাবগ্রস্ত এতিম শিক্ষার্থীদেরকে আর্থিকভাবে সহায়তা প্রদান করার জন্য এবং তাদের পড়াশোনার কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য এই উপবৃত্তি প্রদান করেছে।
শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাজশাহী উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য, বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ রাজশাহী জেলা ও বাংলা অ্যাকাডেমীর ফেলো প্রফেসর ডক্টর আবদুল খালেক।
প্রধান অতিথি জেলা পরিষদের চত্বরে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জনিয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন। এসময় তার সাথে শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত ছিলেন পরিষদের চেয়ারম্যান পাকন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অবস) জিয়া, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ অতুল মন্ডল, প্যনেল চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সোহেল ও সদস্য আইরিন কিবরিয়া কেকা।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন আমাদের গ্রামে কোন স্কুল ছিলোনা, পাশের গ্রামে গিয়ে লেখাপড়া করতে হয়েছে।
আমার পিতা ছিলেন চিকিৎসক। তখন আবু ইসহাক ছিলেন তালগাছি হাটের মালিক। তিনি তখন আমার বাবাকে বললেন আপনারতো অনেক চেনাজানা, একটু চেষ্টা করে দেখেন গ্রামে কোনও স্কুল স্থাপন করা যায় কিনা। ব্যাস হয়ে গেলো হাই স্কুল। নাম হলো আবু ইসহাক হাই স্কুল। আমি সেই তালগাছি স্কুলেই মেট্রিক পাশ করেছি। মাজাহারুল ইসলামও ঐ স্কুল থেকে মেট্রিক পাশ করেছে। আজ সে ভাইস চ্যান্সেলর, আমিও হয়েছি।
আমাদের শিক্ষকরা কলার পাতায় লিখে আনতে বলতেন, আমরা কলার পাতায় লিখে নিয়ে যেতাম। এখন লেখাপড়া আকাশ পাতাল।
আমার কর্মজীবন শুরু হয়েছে এডওয়ার্ড কলেজ থেকে। সুতরাং পাবনার প্রতি আমার দুর্বলতার কারণে আব্দুর রহিম আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর সাথে সাথে আমি আর না করতে পারিনাই।
তিনি শিক্ষার্থীদের উপদেশমূলক বক্তব্য দিয়ে বলেন আত্ম সমালোচনা করতে হবে। তিনি বঙ্গবন্ধু, নবাব সিরাজ উদ দৌলা হত্যার পিছনে ষরযন্ত্রকারীরা কাছেই ছিলেন, দুরের কেউ নয় বলে শিক্ষার্থীদের মানুষ চেনার উপদেশ দেন।
আপনারা যাকে দেশরত্ন বলেন আমি তাকে বঙ্গরত্ন বলি। বঙ্গরত্ন শেখ হাসিনা ২০০৩ সাল থেকে যখন উপদেষ্টা পদ তৈরি হয়েছে তখন থেকে তিনি আমাকে উপদেষ্টা করে রেখেছেন আজও আমি আছি।
তিনি বলেন দেশ স্বাধীনের পর বিদেশি এক সাংবাদিক বঙ্গবন্ধুকে জিজ্ঞেস করেছিলেন আপনি বলেন সোনার বাংলা। দেশের মাটির নিচে কোনোও সোনা নাই কোথায় সোনা? তখন তিনি বলেছিলেন আমার সোনার মানুষ আছে। তিনি এদেশের মানুষকেই সোনার মানুষ বুঝিয়েছেন। আজ সেই সোনার মানুষদেরকে আমরা বৃত্তি দিতে যাচ্ছি।
পাবনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.স.ম আব্দুর রহিম পাকনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পাবনা জেলা প্রশাসক মঁ. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম এন্ড অবস জিয়াউর রহমান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন পাবনা জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ অতুল মন্ডল।
জেলা পরিষদের প্রধান সহকারী মতিয়ার রহমানের সঞ্চালনায় আরোও বক্তব্য দেন জেলা প্যনেল চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সোহেল, ফরিদপুর উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ গোলাপ হোসেন, চাটমোহর পৌর মেয়র সাখাওয়াত হোসেন,
জেলা ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক মীর রাব্বিউল ইসলাম সীমান্ত, পরিষদের ২ নং সদস্য আনোয়ারা খাতুন, এলজিআরডি সদর উপজেলা ব্যবস্থাপক শাম্মি আকতার, এডওয়ার্ড কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল মজিদ,
বক্তারা বলেন বিগত দিনে কোনওদিনই জেলা পরিষদে এরকম অনুষ্ঠান হয়নি। তারা এজন্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আসম আব্দুর রহিম পাকনকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে আরোও উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ বৃত্তিপ্রাপ্ত সকল শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক ও অভিভাবকবৃন্দ।
জেলা পরিষদের উঠোনে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ৭শ জন ছাত্রছাত্রীর মাঝে ২ স্তরে এ বৃত্তি প্রদান করা হয়। বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের জিপিএ ৫ প্রাপ্ত ৪শ ৫০ জন মেধা ভিত্তিক শিক্ষার্থীকে ৪ হাজার ও বাকি ২শ ৫০ জন শিক্ষার্থীকে শিক্ষা সহায়ক অনুদান ৩ হাজার টাকা করে মোট নগদ ২৬ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা বিতরণ করেন।
বৃত্তি প্রদানকালে সভাপতির বক্ত্যবে পাকন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শিক্ষায় ব্যাপক উন্নতি হওয়ায় এখন বাংলাদেশও একটি মর্যাদাশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এগিয়ে যেতে চাই। তাই মেধাবী শিক্ষার্থীর খুব গুরুত্ব রয়েছে। তিনি অভিভাবকদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠান মেধাবী করুন, মেধাবীদের বর্তমান সরকার নানান ভাবে সহযোগিতা করছে। সে লক্ষ্যে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে মেধাবীদের বৃত্তি প্রদান করছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন ইসলামি ফাউন্ডেশনের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের সহকারী শিক্ষক শামীম আহমেদ।
তারপর সকলে দারিয়ে সম্মিলিত জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন।
সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ মিনিট দারিয়ে নিরবতা পালনের পর আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্তের ফুলের তোরা দিয়ে বরণ করে নেন জেলা পরিষদের সদস্যবৃন্দ।
সোনার বাংলা মা একাডেমির পরিচালনায় একটি দলিয় দেশাত্মবোধক নৃত্যের পর এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।