// নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মামলার বাদীকে জেরা করা হয়েছে। জেরায় নানা প্রশ্ন করাকে কেন্দ্র করে ঘটেছে দফায় দফায় বাকবিতণ্ডার ঘটনা। দুই পক্ষের কৌসুলিদের মধ্যে ঘটা এই বাকবিতণ্ডা থামাতে বারবার বিচারককে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে এগিয়ে চলেছে শ্রম আইন লংঘনের অভিযোগে ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে করা মামলার বিচার কাজ।
আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা দীর্ঘ প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে জেরার প্রশ্ন এবং তার প্রেক্ষিতে বাদীর দেওয়া জবাব লিপিবদ্ধ করেন। জেরার একপর্যায়ে ড. ইউনূসের কৌসুলি কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শকসহ চার পরিদর্শকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে আদালতের কাছে স্বতঃপ্রণোদিত আদেশ প্রার্থনা করেন।
তিনি আদালতে বলেন, গ্রামীণ টেলিকম পরিদর্শনের পর পরিদর্শক একটি পরিদর্শন চেকলিস্ট দিয়েছিলেন। সেখানে সিল সম্বলিত কারও স্বাক্ষর ছিলো না। কিন্তু আদালতে যে পরিদর্শন চেকলিস্ট প্রদর্শনী হিসাবে দাখিল করা হয়েছে সেখানে চার জনের সিল সম্বলিত স্বাক্ষর রয়েছে।
এছাড়া ওই পরিদর্শন চেকলিস্টের সর্বশেষ ঘরগুলোও টিক চিহ্ন দিয়ে পূরণ করে দেওয়া হয়েছে। এতেই বোঝা যায় ড. ইউনূসকে অপরাধী হিসাবে প্রমাণ করতে এই জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
এ ধরনের জালিয়াতি কোর্টের সঙ্গে করায় তাদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করা হোক। এ নিয়ে অধিদপ্তরের কৌসুলিদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান ইউনূসের কৌসুলি ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন।
অধিদপ্তরের কৌসুলি খুরশীদ আলম খান বলেন, মামলার এ অবস্থায় এ ধরনের পরোয়ানা জারির করার আবেদন দেওয়ার সুযোগ নাই। আরেক কৌসুলি সৈয়দ হায়দার আলী বলেন, মামলার রায়ের আগে এ ধরনের আবেদন দেওয়ার সুযোগ এখন নাই। আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এভাবে নথি জালিয়াতি করে কি একজন নোবেলজয়ীকে ফাঁসিয়ে দেবেন। একজন নোবেল জয়ীকে আসামি করে এত তাড়াতাড়ি পার পেয়ে যাওয়ার আপনাদের কোন সুযোগ নাই।
এরপরই বিবাদীদের সময় আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাদীর জেরা মুলতবি করে আদালত। এ সময় ড. ইউনূসের পক্ষে কৌসুলি আব্দুল্লাহ আল মামুনকে জেরায় সহায়তা করেন আরেক আইনজীবী খাজা তানভীর আহমেদ।
সাংবাদিকদের বের করে দিয়ে আবার কোর্টে প্রবেশের অনুমতি
মামলার বিচার শুরুর পরই সাংবাদিকদের কোর্ট থেকে বের হয়ে যেতে বলেন বিচারক। তখন এর প্রতিবাদ জানান ড. ইউনূসের কৌসুলি আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন, এটা কি ক্যামেরা ট্রায়াল। সুপ্রিমকোর্টসহ যেখানে পাবলিক ট্রায়াল হয় সেখানে বিচার কাজ প্রত্যক্ষ করতে পারেন সাংবাদিকরা। সাংবাদিকদের বের করে দেওয়া ঠিক হয়নি। তখন বিচারক বলেন, জায়গার অভাবে একথা বলতে হয়েছে। এরপরই ফের সাংবাদিকদের আদালত কক্ষে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়।