নাটোরে অপহরণের দায়ে এক যুবকের মৃত্যুদন্ড,অন্যজনের আমৃত্যু কারাদন্ড

// নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের লালপুরে স্কুলছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণের দায়ে একজনকে মৃত্যুদন্ড ও অপর একজনকে আমৃত্যু কারাদন্ড দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল। রোববার দুপুরে ট্রাইবুন্যালের বিচারক (দায়রা জজ) মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এই দন্ডাদেশ দেন। একইসাথে আসামিদেরকে ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। জরিমানার টাকা ভূক্তভোগী নারী পাবেন।

দন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হচ্ছে, নাটোরের লালপুর উপজেলার পোকন্দা গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে মো.সুমন (২৬) ও সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার ধানকুন্টি গ্রামের আফছার আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম (৪৩)।

জানা যায়,রোববার দুপুরে প্রকাশ্য আদালতে দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে অপহরণ করে ধর্ষণ করার মামলায় রায় ঘোষণা করা হয়। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপ¯ি’ত ছিলেন। এ সময় বিচারক রায়ের সংক্ষিপ্ত অংশ পড়ে শোনান। তিনি আসামি মো.সুমনকে অপহরণ ও ধর্ষণের দায়ে দোষি সাব্যস্ত করে তাঁকে মৃত্যুদন্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। একই সময় বিচারক রফিকুল ইসলামকে ভূক্তভোগীকে ধর্ষণে সহযোগীতার দায়ে আমৃত্যু সশ্রম কারাদন্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। রায় ঘোষণার পর আসামিদের কড়া পাহারায় নাটোর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার বিবরণে জানা যায়,বাদির মেয়ে (১৫) দশম শ্রেণীতে পড়ালেখা করতো। তাঁর মেয়ে নিজ ঘরে পড়ালেখা করাকালে ২০১৬ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারী সন্ধা সাড়ে সাতটার দিকে আসামি মো.সুমন একটি সাদা রংয়ের মাইক্রোবাস নিয়ে বাড়ির সামনে আসে। সে এবং তার সাথে থাকা লোকজন বাদির বাড়িতে ঢুকে জোরপূর্বক তাঁর মেয়েকে অপহরণ করে মাইক্রোবাসে করে সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার ধানকুন্টি গ্রামের রফিকুল ইসলামের বাড়িতে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা বাদি হয়ে মো.সুমনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে লালপুর থানায় মামলা করেন। তদন্তকালে তদন্তকারি কর্মকর্তা লালপুর থানার উপ পরিদর্শক আসাদুজ্জামান ভূক্তভোগী স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করেন এবং আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার ব্যব¯’া করেন। একইসাথে তার ডাক্তারী পরীক্ষা করান। পরীক্ষা শেষে ডাক্তার ওই ছাত্রীকে নির্যাতনসহ ধর্ষণ করার প্রমাণ পাওয়া যায় বলে মতামত দেন। তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০১৬ সালের ১০ মে ছয় আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশীট) জমা দেন। অভিযোগ গঠনের সময় আদালত আসামি মো.সুমন ও রফিকুল ইসলাম ছাড়া বাঁকি আসামিদের অব্যাহতি দেন। আদালত মোট ১১ জন সাক্ষির সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। সাক্ষ্য প্রমাণে আসামীরা দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আজ রোববার আদালত আসামীদের বিরুদ্ধে দন্ড ঘোষণা করেন।

ট্রাইবুন্যালের সরকারি কৌঁসুলি আনিছুর রহমান দন্ডাদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন,অপ্রাপ্ত বয়স্ক একজন স্কুলছাত্রীকে প্রকাশ্যে অপহরণ করে বাড়িতে আটকে রেখে ধর্ষণ করার ঘটনা ঘটেছিল। সাক্ষ্য প্রমাণে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আসামীদেরকে সর্বো”চ সাজা দিয়েছেন আদালত। এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে রায় ঘোষণার পর আসামিরা রায়ের বিরুদ্ধে উ”চ আদালতে আপীল করবেন বলে জানিয়েছেন।##