// মশাহিদ আহমদ, মৌলভীবাজার ঃ মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় সীমান্তবর্তী এলাকায় জঙ্গি অপারেশন করেছে কাউন্টার টেররিজম এন্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইমের একটি চৌকস দল আজ ১২ আগষ্ট। এ সময় তাদের সাথে ছিলো, সোয়াত ও জেলা এবং থানা পুলিশের একটি আভিযানিক টিম। প্রায় সাড়ে ৪ঘন্টা অভিযানে সেই দুটি বাড়িতে নারী পুরুষসহ ১০জঙ্গি-কে আটক করা হয় ও তাদের সাথে থাকা তিন শিশুকে পুলিশের হেফাজতে নেয়া হয়। উদ্ধার করা হয়েছে ৩ কেজি বিস্ফোরক, হাই এক্সক্লোসিভ ৫০ টি ডেটোনেটর, নগর ৩ লাখ ৬১ হাজার টাকা ও জঙ্গি প্রশিক্ষণ সামগ্রিক ও বিপুল পরিমান জিহাদী বই। আটককৃতদের বাড়ি সাতক্ষীরা নারায়নগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায়। আটককৃতরা হচ্ছে- শরীফুল ইসলাম (৪০), পিতা-ওমর আলী, মাতা-ছমিরুন, গ্রাম-দক্ষিন নলতা, থানা ও জেলা-সাতক্ষীরা। হাফিজ উল্লাহ (২৫), পিতা-আবুল কাশেম, মাতা-জহুরা খাতুন, সাং-কানলা, থানা-ইটনা, জেলা-কিশোরগঞ্জ। খায়রুল ইসলাম (২২), পিতা-নজরুল ইসলাম, মাতা-সানোয়ারা বেগম, গ্রাম-রসুলপুর, থানা-ফতুল্লা, জেলা-নারায়নগঞ্জ। রাফিউল ইসলাম (২২), পিতা-সাইফুল ইসলাম, মাতা-রেবা সুলতানা, গ্রাম-মাইজবাড়ী, থানা-কাজীপুর, জেলা-সিরাজগঞ্জ। মেঘনা (১৭), স্বামী-খায়রুল ইসলাম, পিতা-মানিক মিয়া, মাতা-আলেয়া বেগম, গ্রাম-রসুলপুর, থানা-ফতুল্লা, জেলা-নারায়নগঞ্জ। আবিদা (১২ মাস), পিতা-খায়রুল ইসলাম, মাতা-মেঘনা, গ্রাম-রসুলপুর, থানা-ফতুল্লা, জেলা-নারায়নগঞ্জ। শাপলা বেগম (২২), পিতা-মজনু মল্লিক, স্বামী-আঃ ছত্তার, মাতা-আলেয়া বেগম, গ্রাম-শ্রীপুর, থানা-আটঘরিয়া, জেলা-পাবনা। জুবেদা (১৮ মাস), পিতা-আঃছত্তার, মাতা-শাপলা বেগম, গ্রাম-শ্রীপুর, থানা-আটঘরিয়া, জেলা-পাবনা। হুজাইফা (০৬), পিতা-আঃছত্তার, মাতা-শাপলা বেগম, গ্রাম-শ্রীপুর, থানা-আটঘরিয়া, জেলা-পাবনা। মাইশা ইসলাম (২০), পিতা-সাইদুল ইসলাম, স্বামী-সোহেল তানজীম রানা, গ্রাম-চাদপুর (পিতার বাড়ী), থানা ও জেলা-নাটোর। মোছাঃ সানজিদা খাতুন (১৮), পিতা-আব্দুল জলিল, স্বামী-সুমন মিয়া, গ্রাম-নিজবলাই, থানা-শরিয়াকান্দি, জেলা-বগুড়া। আমিনা বেগম(৪০), পিতা-জলমত খা, স্বামী-শফিকুল ইসলাম, গ্রাম-দক্ষিন নলতা, থানা-তালা, জেলা-সাতক্ষীরা। মোছাঃ হাবিবা বিনতে শফিকুল (২০), পিতা-শফিকুল, মাতা-আমিনা বেগম, গ্রাম-দক্ষিন নলতা, থানা-তালা, জেলা-সাতক্ষীরা। গত ১১ আগষ্ট শুক্রবার রাত ৮ঘটিকা থেকে উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকা পূর্ব টাট্টি উলি গ্রামে দুটি বাড়িতে জঙ্গি আছে এমন গোপন সেই সংবাদের ভিত্তিতে বাড়ীটি ঘিরে রাখে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আজ ১২ আগষ্ট শনিবার ভোরে “অপারেশন হিলসাইড” নামের সেই অপারেশনে যুক্ত হয় কাউন্টার টেররিজম এন্ড ট্রান ন্যাশনাল ক্রাইমের একটি আভিযানিক দল। তাদের সাথে ছিলো বোম ডিসপোজাল ইউনিট। এ সময় অপারেশনে ছিলেন- অতিরিক্ত কমিশনার আসাদুজ্জামান, ডেপুটি কমিশনার নাজমুল হক, যুগ্ম কমিশনার কামরুজ্জামান, সোয়াট কমান্ডার জাহিদুল ইসলাম। এছাড়া অভিযানে অংশ নেন জেলা পুলিশ সুপার মো: মনজুর রহমান পিপিএম (বার), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডিএসবি মোহসিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুলাউড়া সার্কেল দীপঙ্কর ঘোষ, কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আব্দুস ছালেকসহ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট। সকালে সোয়াটের ২০/২২ জনের একটি দল অভিযানে যোগ দেয়। স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানান- মাস দেড়েক আগে এখানে জায়গা কিনে বাড়ী কিনেন। সেখানে বেশ কিছু লোকের আনাগোনা থাকতো। তবে তারা কি কাজ করতেন, সেটি স্পষ্ট করে বলতে পারেননি এলাকাবাসী। কথা বার্তা চলাফেরা সন্দেহজনক ছিলো। সাংবাদিকদের সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান জানান- তারা সম্প্রতি ঢাকায় একজন জঙ্গিকে আটক করেন। ইমাম মাহমুদের কাফেলা নামে একটি জঙ্গি সংগঠন রয়েছে। সেটির একটি আস্তানা গড়েছে এই কুলাউড়ার পূর্ব টাট্টি উলি পাহাড়ি এলাকায়। সেই খবরের ভিত্তিতে এখানে অভিযান চালানো হয়। এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার মো: মনজুর রহমান পিপিএম বার জানান- আটককৃতদের আস্তানা থেকে উদ্ধার করে ঢাকায় মামলা থাকায় নেয়া হচ্ছে।