যৌতুকের জন্য অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যা, একযুগ পর স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

/ / সঞ্জু রায়, বগুড়া: বগুড়ায় যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যার একযুগ পর স্বামীকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। স্ত্রী চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।

মঙ্গলবার দুপুর ৩ টার দিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ বগুড়ার বিচারক নূর মোহাম্মদ শারিয়ার কবির এ রায় দেন।
বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছেন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি এ্যাড. আশেকুর রহমান সুজন।

তিনি বলেন, যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। তবে রায় ঘোষণার সময় আসামি পলাতক ছিলেন ৷

আদালত সূত্র জানায়, ২০১০ সালের জুনে বগুড়ার শিবগঞ্জের বগলিগাড়ী গ্রামের লতিফুল বারীর মেয়ে মিনা আক্তারের সঙ্গে পাশের গ্রামের জিয়াউর রহমান জিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই দুই লাখ টাকা যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন করে আসছিলেন জিয়া । ২০১১ সালের সালের ৭ অক্টোবর শিবগঞ্জের শোলাগাড়ী গ্রামে শ্বশুরবাড়ি থেকে মিনার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই সময় পুলিশ থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা নিয়ে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। পরে চিকিৎসক ময়নাতদন্তে মিনাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপরেই মিনার বাবা লতিফুল বারী বাদী হয়ে শিবগঞ্জ থানায় জিয়াসহ তার বাবা তোজাম্মেল  হক, মা জোবেদা বেগম ও দুই ভাইকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে ২০১২ সালে ২৯ ফেব্রুয়ারি আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। সেখানে মিনার স্বামী জিয়াকে একমাত্র আসামি করে বাকীদের অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরে দীর্ঘ ১১ বছর বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আদালত আজ এ রায় দেন। আসামিকে ২০১২ সালের ১৭ জানুয়ারি গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তবে তিনি জামিন নেওয়ার পর থেকে পলাতক আছেন।

রায়ের আদেশে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে নিহত মিনার বাবা লতিফুল বারী বলেন, আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে রায় যেন দ্রুত কার্যকর হয়। আসামি আপিল করলেও উচ্চ আদালতে যেন এ রায় বহাল থাকে।

ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি এ্যাড. আশেকুর রহমান সুজন বলেন, এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আসামি পলাতক আছেন। আশকরি দ্রুত সময়ে তাকে গ্রেপ্তার করে রায় কার্যকর করা হবে।