// সঞ্জু রায়: সরকারি ও বাণিজ্যিক ভবনের ছাদগুলো ফাঁকা না রেখে ছাদবাগানের মাধ্যমে কৃষিতে ভূমিকা রাখার ইতিবাচক যাত্রা শুরুর প্রত্যাশায় বগুড়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ের ছাদে উদ্বোধন করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন বাগান যেখানে স্থান করে নিয়েছে প্রায় দেড়শ প্রজাতির সাড়ে ৩’শ গাছ। নিজ কার্যালয়ের অব্যবহৃত ছাদ কে কাজে লাগাতে ব্যতিক্রমী এই ছাদ বাগানের উদ্যোগ নিয়েছেন বগুড়া পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বিপিএম পিপিএম।
বাগানটিতে করোসল, নাগফল, বারাবা, লোকাট, স্ট্রবেরী, পেয়ারা, এপ্রিকট, ডকমাই আম, জি-নাইন কলা থেকে শুরু করে বিলুপ্তপ্রায় নানা প্রজাতির গাছ শোভা ছড়াচ্ছে। শুধু তাই নয় জৈব সারের ব্যবহার করে এই ছাদবাগানেই চাষ করা হচ্ছে বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি যার মাঝে রয়েছে বেগুন, ঢেঁড়স, কাঁচামরিচ, টমেটো, ক্যাপসিকাম ইত্যাদি। এছাড়াও আম, জাম, পেয়ারা, কলা, জামরুল, পেঁপে, সবেদা, তেঁতুল, আমড়া ও নানা জাতের বড়ইসহ দেশীয় নানা ফলের গাছসহ বাগানটিতে সকলের নজর কেঁড়েছে বিভিন্ন দুষ্প্রাপ্য ভেষজ ও ঔষধি গাছ। অল্প কয়েকদিনের মাঝেই জেলার ব্যস্ততম এই দপ্তরের ছাদবাগানে বেড়ে উঠেছে দেশি বিদেশী নানা ফুলের গাছও যার সৌরভ ও সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হয়েছেন জেলার বিভিন্ন দপ্তর প্রধানরাও আর তারাও আগ্রহ দেখাচ্ছে তাদের কার্যালয়ের ছাদেও এমন দৃষ্টিনন্দন বাগান স্থাপনের।
বৃহস্পতিবার দুপরে জেলার কৃষিঅঙ্গণের প্রতিনিধি, সাংবাদিক ও জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে ছাদ বাগানের উদ্বোধন করেন এসপি সুদীপ চক্রবর্ত্তী। এছাড়াও একই দিন বগুড়া পুলিশ লাইন্সের পতিত জমিগুলোকে কাজে লাগিয়ে এসপি সুদীপ উদ্বোধন করেন পৃথক আরেকটি বাগান যেটিও পরিপূর্ণ ছিলো নানা জাতের বৃক্ষ দিয়ে। উদ্বোধনকালে উপস্থিত ছিলেন সিআইডি বগুড়ার পুলিশ সুপার কাওছার মোহাম্মদ শিকদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার যথাক্রমে আব্দুর রশিদ (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্), শরাফত ইসলাম (সদর সার্কেল), হেলেনা আক্তার (ট্রাফিক), মৃত্তিকা ভবনের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ নূরে আলম সিদ্দিকী, জেলা গোয়েন্দা শাখার ইনচার্জ সাইহান ওলিউল্লাহ প্রমুখ।
ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ প্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ চক্রবর্ত্তী বলেন, নগরায়নের ফলে যেভাবে দিন দিন কৃষিজমি কমে যাচ্ছে সেখানে সরকারি ও বাণিজ্যিক ভবনসহ আবাসিক ভবনের ছাদগুলোতে যদি ছাদকৃষির এই ইতিবাচক যাত্রা ছড়িয়ে দেয়া যায় তাহলে কৃষিতে বিপ্লব আসতে পারে। আর বিলুপ্ত হওয়ার পথ থেকে বাঁচবে অনেক দুষ্প্রাপ্য গাছও। তিনি আরো বলেন, এই ছাদবাগানের মাধ্যমে এই প্রজন্মের অনেকে দেখতে ও চিনতে পারবে অনেক উপকারী বিলুপ্তপ্রায় গাছকে। তিনি অব্যবহৃত জমি বা ছাদ ফাঁকা না রেখে এমন এক একটি বাগান করার আহ্বান জানান সকলকে যা আমাদের জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলাতেও সহায়ক হবে।