লাল মাংস খান তবে বুঝে শুনে

// আয়রন ও প্রোটিনের অন্যতম উৎস হলো লাল মাংস। শরীরের জন্য উপকারী পরিমিত লাল মাংস। কমবেশি সকলে লাল মাংস খেতে পছন্দ করে। লাল মাংস বেশি মাত্রায় ভোজনে শরীরে নানারকম রোগ হতে পারে। তাই মাংস বুঝেশুনে খাওয়া উচিত।

একজন সুস্থ ব্যক্তির কতটুকু প্রোটিন গ্রহণ করবেন, সেটি নির্ভর করে ওই ব্যক্তির আদর্শ ওজনের ওপর। একজন ব্যক্তির আদর্শ ওজন যদি ৭০ কেজি হয়, তাহলে তিনি প্রতিদিন ৭০ গ্রামের মত প্রোটিন গ্রহণ করবেন। মেয়েদের গর্ভাবস্থায় ও মাসিকের সময় প্রোটিনের চাহিদা প্রায় দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি পায়।

মাংস

কোনো সুস্থ ব্যক্তি সপ্তাহে দুই দিন লাল মাংস গ্রহণ করলে তা তেমন কোনো জটিল সমস্যা সৃষ্টি করেনা। হৃদরোগ,ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ অন্যান্য রোগ থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে মাংস খাওয়া উচিত।

প্রতিবেলায় ঘরে রান্না করা মাংস দুই তিন টুকরার বেশি খাওয়া ঠিক না। দৈনিক ৫০ গ্রামের বেশি প্রক্রিয়াজাতকৃত মাংস গ্রহণে হৃদরোগের ঝুঁকি ৪২ শতাংশ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি ৬৩ শতাংশ বেড়ে যায়। সঠিক উপায়ে রান্না ও নিয়ম মেনে মাংস গ্রহণ করলে জটিলতামুক্ত থাকা যায়।

মাংস

অনেকে ধারণা করেন লাল মাংস খেলে স্বাস্থ্যের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। কিন্তু পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন গরুর মাংসের ক্ষতিকর দিক যেমন আছে, তেমনি এই মাংস অনেক উপকারও করে থাকে।

গরুর মাংস কতটা নিরাপদ সেটা নির্ভর করবে আপনি সেটা কিভাবে রান্না করছেন, তার ওপর।
সঠিক উপায়ে রান্না করলে জটিলতামুক্ত থাকা যায়।
মাংস কাটার সময় চর্বি ফেলে দিন এবং মাংস ছোট টুকরো করে কাটুন।
মাংস কাটা শেষে সেটা ভালোমতো ধুয়ে নিয়ে কিছুসময় পানিতে সিদ্ধ করতে হবে।
সিদ্ধ মাংস কম তেল দিয়ে রান্না করুন।সয়াবিন তেলের বদলে লো কোলেস্টেরল তেল ব্যবহার করুন।
ভিনেগার, টকদই, লেবুর রস ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন।এতে চর্বির ক্ষতিকর প্রভাব কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব হয়।

মাংস

লাল মাংস খাওয়ার কিছু সময় পর টকদই বা লেবুপানি খেলে তা হজম প্রক্রিয়ায় বেশ সাহায্য করে। 
যাদের উচ্চ রক্ত চাপজনিত সমস্যা আছে তারা বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিয়ে দুই-এক টুকরো খেতে পারেন, এক্ষেত্রে মাংস
রান্নায় সবজি ব্যবহার করতে হবে। যেমন: কাঁচা পেঁপে, টমেটো,লাউ,মিষ্টি কুমড়া ইত্যাদি মিশিয়ে খেতে পারেন। মাংসের সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে সালাদ খান।
টকদই লেবু পানি হজম প্রক্রিয়ায় বেশ সাহায্য করে তাই লাল মাংস খাওয়ার কিছুসময় পর খেলে হজম প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে।

মাংস

বেশি তেল মশলা দিয়ে কষিয়ে লাল মাংস ভুনা করে রান্না না করাই ভালো। খাবার সময় সেই ঝোল এড়িয়ে চলতে হবে।
টাটকা লাল মাংসের চেয়ে প্রক্রিয়াজাতকৃত লাল মাংস আরও বেশি ক্ষতিকর। লাল মাংসে যে কোলেস্টেরল থাকে সেটি বেশি বেড়ে গেলে হার্টের শিরায় বেধে রক্ত জমাট বাঁধিয়ে দেয়। হার্টে পর্যাপ্ত রক্ত চলাচল করতে পারেনা, অক্সিজেনের অভাব হয়। যার কারণে হৃদরোগ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, অন্য রোগ থাকলে অবশ্যই পরামর্শ নিয়ে লাল মাংস খেতে হবে।
যেদিন মাংস খাবেন সেদিন নির্ধারিত সময়ের থেকে বাড়তি সময় হাঁটুন কিংবা ব্যায়াম করুন।