// কামরুল হাসান, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিt
টাঙ্গাইল-২(গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের সংসদ সদস্য এবং মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনির বলেছেন, জেলা আওয়ামীলীগের জনপ্রিয় নেতা বীরমুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদের চিহ্নিত হত্যাকারী ও তাদের মদদদাতারা আবার সক্রিয় হয়ে ওঠেছে। তারা টাঙ্গাইলের শান্ত পরিবেশকে আবার অশান্ত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। প্রপাগা-া চালিয়ে তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা করছে। তাদের ষড়যন্ত্র সততার কাছে পরাজিত হবেই। সোমবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে টাঙ্গাইলের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু অডিটিরিয়ামে আয়োজিত জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বিগত দিনে টাঙ্গাইল শহর সন্ত্রাসীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছিল। তথাকথিত একটি পরিবারের কাছে টাঙ্গাইল শহর জিম্মি হয়ে পড়েছিল। সে সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদসহ আওয়ামী লীগের ৩০জন নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল। সেই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে একটি হত্যার প্রতিবাদ করায় আমাদের বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়েছিল। সেদিনের টাঙ্গাইল আর আজকের টাঙ্গাইল শহরের পরিবেশ সম্পূর্ণ ভিন্ন। আজ মানুষ শান্তিতে বসবাস করছে। কোন রাজনৈতিক হানাহানি, খুন, রাহাজানী নেই।
তিনি বলেন, টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব গোলাম কিবরিয়া বড় মনিকে একটি সাজানো মামলা দিয়ে মানহানীর অপচেষ্টা করছে তথাকথিত সেই পরিবার। তারা টাঙ্গাইলের রাজনীতিকে আবার অস্থিতিশীল করতে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আমার নির্বাচনী এলাকা গোপালপুর-ভূঞাপুর আসন থেকে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী কয়েক নেতা। তাদের সাথে আরও সুর মিলাচ্ছে দলের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা দু-চারজন রাজনৈতিক নেতা। ১৯৭৫ সালে খন্দকার মোস্তাক যেমন আওয়ামী লীগের মধ্যে থেকে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছিল। তেমনই ওই ষড়যন্ত্রকারীরা আমাদের প্রিয় টাঙ্গাইলকে অশান্ত করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তারা ইতোপূর্বেও একাধিকবার আমাদের নিয়ে ষড়য়ন্ত্রের ঘৃণ্য খেলায় লিপ্ত হয়েছে। কিন্ত বার বারই সততার কাছে- শেখ হাসিনার উন্নয়নের কাছে পরাজিত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, টাঙ্গাইলের রাজনৈতিক বিষয়ে মাননীয় প্রধামন্ত্রী সব খবর রাখেন। তিনি সবই অবগত। আজকে যারা আওয়ামী লীগের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে নানা সুবিধা নিয়েছেন বা নিচ্ছেন তারা একবার ভাবুন কাদের ত্যাগের জন্য এ সুবিধা পাচ্ছেন।
এমপি তানভীর হাসান ছোট মনির বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা যে মেয়েকে দিয়ে আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করিয়েছেন। সেই মামলার পর শহরে আমার ভাইয়ের শাস্তির দাবিতে মিছিল করিয়েছে কে আপনারা সবই জানেন। সত্যকে কখনও ধামাচাপা দিয়ে রাখা যায়না। সত্য একদিন আপন গতিতে পরিস্ফুটিত হবে।
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামীলীগ, আওয়ামী যুবলীগ ও ছাত্র লীগের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি সত্য প্রকাশে গণমাধ্যমকর্মীদের সহযোগিতা কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তারেক মাহমুদ পলু, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র সাহা, সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক ও গণসঙ্গীত শিল্পী এলেন মল্লিক, কেন্দ্রীয় আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ মামুন, জেলা আওয়ামী যুবলীগের সাবেক সভাপতি ফারুক হোসেন মানিক, টাঙ্গাইল সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ রউফ, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান, টাঙ্গাইল জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি বালা মিঞা, করটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা খালেকুজ্জামান চৌধুরী মজনু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামীলীগ, আওয়ামী যুবলীগ ও ছাত্রলীগের তিন শতাধিক নেতাকর্মী ও জেলার গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রকাশ, টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব গোলাম কিবরিয়া বড় মনির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে গত ৫ এপ্রিল এক কিশোরী টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর ডাক্তারী পরীক্ষায় ধর্ষণের কোন আলামত পাওয়া যায়নি। মামলার পক্ষে-বিপক্ষে শহরে প্রায়ই মিছিল পাল্টা মিছিল করা হচ্ছে। এ নিয়ে শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছে।