// অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে :
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার আস্কর গ্রামে ঘটেছে একটি অমানবিক ঘটনা। শ্মশানে পোড়ানো হচ্ছে ঠাকুরমা’র লাশ। একই সময়ে নবম শ্রেণী পড়–য়া নাতনীকে ঘেরের পাড় নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ষণ চেষ্টাকারী অভিযুক্ত দু’সন্তানের জনক তার চাচাতো ভাই।
সরজমিনে জানা গেছে, উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের আস্কর গ্রামের (বৃন্দারাম মহেশের বাড়ি) অক্ষয় হালদারের স্ত্রী উষা হালদার (৮৫) বুধবার দুপুরে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। তার মরদেহ বুধবার রাতে পোড়ানোর সময় উষা রানীর নাতনী একটি স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রী বাড়ি থেকে মায়ের মোবাইল পৌঁছে দেয়ার জন্য রাত ৮টার দিকে সমাধিস্থলে মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে যাওয়ার পথে একই বাড়ির তার চাচা রমনী হালদারের ছেলে দু’সন্তানের জনক রতন হালদার ওই ছাত্রীর হাত থেকে মোবাইল নিয়ে যায়। ওই স্কুল ছাত্রী মোবাইল ফিরে পাওয়ার জন্য রতন হালদারের পিছু পিছু যায়। কিছুদুর যাওয়ার পরে ছাত্রীর হাত ও মুখ চেপে বাড়ির পার্শ্ববর্তী বিধান হালদারের মাছের ঘেরের দক্ষিণপাড়ে নিয়ে স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে জোরপূর্বক কাপড়-চোপড় খুলে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এসময় ওই ছাত্রীর বসতঘরের উপর কে বা কারা ঢিল ছুঁড়লে ছাত্রীর বাবা ও ভাই উচ্চস্বরে গালাগালি করলে ধর্ষণের চেষ্টাকারী রতন হালদার মনে করে তাকে ওই ছাত্রীর পরিবার দেখে গালাগাল করছে। এ আতঙ্কে ধর্ষণ চেষ্টাকারী রতন পালিয়ে যায়। এঘটনা ওই ছাত্রী এসে জানালে বাবা, মা, ভাই লাঠিসোটা নিয়ে রতনের ঘরে গিয়ে তাকে খুঁজতে থাকে। টের পেয়ে রতন ঘর থেকে পালিয়ে যায়। এর পূর্বেও বখাটে রতনের বিরুদ্ধে একাধিক ধর্ষণের অভিযোগ থাকলেও একটি ধর্ষণ মামলা বরিশাল আদালতে চলমান রয়েছে। এছাড়াও আস্কর নতুন কালীবাড়ী বাজারের দোকান চুরির অভিযোগ রয়েছে। ঘটনা জানতে পেরে আগৈলঝাড়া থানার এসআই আলী হোসেন বুধবার রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এব্যাপারে গতকাল বৃহস্পতিবার ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযুক্ত রতন হালদার পালিয়ে থাকায় তাকে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনে কল দিলেও সে রিসিভ করেনি। তবে রতন হালদারের স্ত্রী সুলতা হালদার বলেন, আমি আমার স্বামীর ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনা শুনেছি। ওই ছাত্রীর অভিভাবকরা লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের ঘরে তাকে খুঁজতে এসেছিল। তিনি কোথায় আছেন তা আমি বলতে পারছিনা।
এব্যাপারে বাগধা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড (আস্কর) ইউপি সদস্য কমল বিশ্বাস জানান, ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা শুনে আমি রাতেই ওই বাড়িতে গিয়ে উভয় পরিবারের সাথে কথা বলে ধর্ষণ চেষ্টার সত্যতা পেয়েছি। ওই ভুক্তভোগীর পরিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
এব্যাপারে আগৈলঝাড়া থানার ওসি (তদন্ত) মাজাহারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ধর্ষণ চেষ্টার সংবাদ পেয়ে আমি রাতেই ওই বাড়িতে এসআই আলী হোসেনকে পাঠিয়েছি। ওই ছাত্রীর মা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করে অভিযুক্তকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।