// সঞ্জু রায়, বগুড়াঃ আভিযানিক সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) পদক পেয়েছেন র্যাব-১২ বগুড়া ক্যাম্পের স্কোয়াড কমান্ডার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম।
গত ২০ মার্চ সোমবার রাজধানীর উত্তরার কুর্মিটোলায় র্যাব সদর দপ্তরের শহীদ লে. কর্নেল আজাদ মেমোরিয়াল হলে র্যাবের জনবান্ধব কর্মকর্তা নজরুল ইসলামকে পদক পরিয়ে দেন র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন। এসময় র্যাব সদর দপ্তরের এডিজি (অপারেশন) কর্ণেল কামরুল হাসান, এডিজি (এডমিন) ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদসহ র্যাব সদর দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, বীরত্বপূর্ণ ও সেবামূলক কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর সারাদেশের মাঝে র্যাবের এই সর্বোচ্চ পদক পেয়েছেন বাহিনীর ৮৫ জন সদস্য। যার মাঝে ৩৫ জন পেয়েছেন ডিজি (সাহসিকতা) পদক এবং ৫০ জন পেয়েছেন ডিজি (সেবা) পদক। যেখানে বগুড়া ক্যাম্পের এএসপি নজরুল ইসলাম অর্জন করেছেন ডিজি (সাহসিকতা) পদক।
২০২২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সিপিসি-৩ র্যাব-১২ বগুড়া ক্যাম্পে স্কোয়াড কমান্ডার হিসেবে যোগদানের পর থেকেই নজরুল ইসলাম চাঞ্চল্যকর মামলার রহস্য উদঘাটনসহ মাদক ও সন্ত্রাসবিরোধী নানা সাহসী অভিযান পরিচালনা করে আসছেন। যাদের মাঝে বগুড়া ধুনটের আলোচিত নারী ইউপি সদস্য রেশমা হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচনপূর্বক গত বছরের ২০মার্চ প্রধান আসামীকে গ্রেপ্তার, গত বছরের অক্টোবর মাসের আলোচিত ক্লুলেস মামলা বগুড়ার অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য জাকির হোসেন হত্যাকাণ্ডের মূল আসামীকে শনাক্ত করে দ্রুততম সময়ে গ্রেপ্তার, বগুড়া কাহালুতে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ৩ জনকে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার ও গত বছরের আলোচিত বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী বনি হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা চিহ্নিত সন্ত্রাসী আরিফ শেখ কে গ্রেপ্তার, বগুড়ার পর্যটন মোটেলের সামনে থেকে পঞ্চগড়ের ২২ বছরের যুবক সানোয়ার কে বিদেশী পিস্তল ও ম্যাগাজিনসহ গ্রেফতারি অভিযান উল্লেখযোগ্য যার প্রত্যেকটি অভিযানের নেতৃত্বেই ছিলেন স্কোয়াড কমান্ডার নজরুল ইসলাম।
শুধু তাই নয় র্যাব বগুড়া ক্যাম্প সূত্রে জানা যায়, যোগদানের পর থেকে সর্বশেষ ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ইং পর্যন্ত সিনিয়র এএসপি নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে এখন পর্যন্ত ৫টি দেশী-বিদেশী অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়েছে ৫ জন চিহ্নিত আসামী এবং মাদকবিরোধী অভিযানে উদ্ধার হয়েছে ৩.৩২২ কেজি হেরোইন, ৪ হাজার ৫’শ ৮৯ পিস ইয়াবা, প্রায় ২১৪ কেজি গাঁজা এবং ১ হাজার ৭’শ বোতল ফেন্সিডিল। আর এই অভিযানে বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার হয়েছে ১১৮ জন। এছাড়াও এই সময়ে পরিচালিত ৪৫টি পৃথক অভিযানে ১৫ জন ভিকটিমকে উদ্ধারপূর্বক সাজাপ্রাপ্ত ও পলাতক আসামী গ্রেপ্তার হয় প্রায় ২০ জন। বিগত বছর র্যাব-১২ বগুড়া ক্যাম্পের অভিযানে ১৪০টি মামলায় ১৮৭ জন অপরাধীকে আইনের আওতায় আনা হয় যেসব অভিযানের অধিকাংশের নেতৃত্বেই ছিলেন প্রচারবিমুখ দক্ষ র্যাব কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম।
বগুড়ার সচেতন নাগরিক ও গণমাধ্যমকর্মীরা বলছেন, নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে র্যাব বগুড়া ক্যাম্প কর্তৃক সম্প্রতি পরিচালিত অভিযান বিগত যেকোন বছরের তুলনায় অত্যন্ত দৃশ্যমান ও ইতিবাচক। শুধু তাই নয় ইতিবাচক অর্জনের পরিসংখ্যানও বেড়েছে কয়েকগুণ।
এদিকে র্যাব ডিজি (সাহসিকতা) পদক পাওয়া প্রসঙ্গে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, এই অর্জন র্যাব-১২ এর সকল গর্বিত সদস্যদের এবং বগুড়াবাসীর যারা র্যাবের সকল কার্যক্রমে ইতিবাচকভাবে পাশে থেকেছেন এবং র্যাবের প্রতি সদা আস্থা রেখেছেন। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তিনি শুধু তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন এবং ভবিষ্যতেও একই ধারাবাহিকতায় কাজ করে যেতে চান। তিনি র্যাবের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান কারণ তাদের সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনাতেই সকল অভিযানে সফলতা অর্জন সম্ভব হয়। বগুড়ায় র্যাবের পক্ষে মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করে সকলের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেন র্যাব কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম।