জোয়ারের অপেক্ষায় আগৈলঝাড়ার কৃষকরা : স্লুইচগেট সংস্কার না হওয়ার ৩০টি ইরি ব্লকে
সেচ কার্যক্রম ব্যাহত

অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে :
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় একটি স্লুইচগেট সংস্কার না হওয়ার কারণে এলাকার ৩০টি ইরি ব্লকে পানির অভাবে সেচ কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এতে কৃষকরা খালের পানির জন্য অপেক্ষায় থাকেন কখন জোয়ার আসবে। ইরি ক্ষেতে সঠিক নিয়মে পানি দিতে না পারায় দুশ্চিন্তায় ভুগছেন তারা। স্লুইচগেট বন্ধ থাকার বিষয়টি একাধিকবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুস ছালামকে জানালেও তিনি কোন পদক্ষেপ নেননি।

স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গৌরনদী-আগৈলঝাড়া-পয়সারহাট মহাসড়কের বড়মগড়া নামক স্থানে একটি স্লুইচ গেটের কপাট দীর্ঘদিন ধরে অকেজো অবস্থায় পরে রয়েছে। ফলে স্লুইচগেট দিয়ে পানি চলাচল বন্ধ রয়েছে। একারণে উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের বড়মগড়া, জলিরপাড় ও কোদালধোয়াসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার ৩০টি ইরি ব্লকে পানি দিতে না পারায় প্রায় ২হাজার একরের ১হাজার ৫শ’ একর ক্ষেতের ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। উত্তর বড়মগড়া গ্রামের স্লুইচগেট সংলগ্ন ইরি ব্লকের ম্যানেজার অরবিন্দু অধিকারীর প্রায় ৪২ একর, গোবিন্দমন্দির সংলগ্ন ইরি ব্লকের ম্যানেজার সুবোধ বাড়ৈর প্রায় ৬৮ একর, একই এলাকার ম্যানেজার দীনবন্ধু শিকারীর প্রায় ৬৩ একর, উত্তর বড়মগড়া গ্রামের ধনঞ্জয় বাড়ৈর ৭৩ একর, বড়মগড়া গ্রামের ইউপি সদস্য অজিত শিকারীর ৪১ একর, জলিরপাড় গ্রামের ইরি ব্লকের ম্যানেজার লিটন ফকিরের ৩৭ একর, একই এলাকার ইরি ব্লক ম্যানেজার মনির খানের ৪২ একর, কোদালধোয়া গ্রামের ইরি ব্লকের ম্যানেজার আব্দুর রব ফকিরের ৪০ একর, একই এলাকার ইরি ব্লকের ম্যানেজার জাহাঙ্গীর খানের রয়েছে প্রায় ৫৫ একরসহ ৩০টি ইরি ব্লকের প্রায় ১হাজার ৫শত একর জমি চাষবাদের আওতায় রয়েছে। স্লইচগেট বন্ধ থাকায় এই সব ইরি ব্লকের ম্যানেজরা খালে কখন জোয়ার আসবে সেই অপেক্ষায় বসে থাকেন। প্রতি ২৪ ঘন্টায় দু’বার খালে জোয়ার এলেও ওই জোয়ারের পানি দিয়ে সকল জমিতে পানি দেওয়া যাচ্ছেনা বলে জানান তারা। স্লুইচগেট বন্ধ থাকার বিষয়টি একাধিকবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুস ছালামকে জানালেও তিনি এব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেননি। জলিরপাড় গ্রামের কৃষক উত্তম অধিকারী জানান, ম্যানেজার অরবিন্দু অধিকারীর ইরি ব্লকে আমার ৪একর জমি রয়েছে। ওই জমিতে ইরি চাষ করেছি। সঠিকভাবে ক্ষেতে পানি দিতে না পারায় ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি।

এব্যাপারে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক বিভাগ) নিউটন দে সাংবাদিকদের বলেন, ওই স্লইচগেট মেরামতের দায়িত্বে আছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পূর্ত বিভাগ)’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. নাইম। তিনি মো. নাইম’র বরাত দিয়ে জানান, উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায় সাংবাদিকদের বলেন, ইরি ক্ষেতে সেচ কার্যক্রম ব্যাহত হলে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অনেকাংশে কমে যাবে। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এবিষয়ে বরিশাল বিএডিসিকে জানানো হয়েছে।