প্রিয়তম সন্তান

// এনামুল হক টগর //

প্রিয়তম সন্তান আমি তোমকে বলছি

তুমি আমার কথা শোন-

তোমার বয়স এখন নয় বছরের কাছাকাছি নতুন জীবন-

তুমি এখন স্কুলের চতুর্থ শ্রেণিতে লেখা পড়া করো চলমান দীর্ঘ সময় স্মরণ।

তোমাদের পাঠ্য সূচীতে স্বাধীনতার কথা,

মুক্তিযোদ্ধাদের কথা,জাতির ইতিহাসের কথা,

তেমন লেখা নেই,লেখা নেই পূর্বপুরুষদের প্রাচীন ঐতিহ্যের কথা।

তুমি আস্তে আস্তে উপরের ক্লাসে উঠতে থাকবে বিজ্ঞতা ও অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতায়,

আর ধীরে ধীরে সব সত্য ইতিহাস জানতে পারবে জ্ঞান ও প্রজ্ঞায়।

স্বাধীনতার মহানায়কের কথা, অগ্রনায়কদেরর কথা,

মুক্তিযোদ্ধাদের কথা,বধ্যভূমির করুণ ইতিহাস বেদনা ব্যথা,

বুদ্ধিজীবি হত্যার কথা,ত্রিশলক্ষ শহীদের জীবন উৎসর্গের করুন কথা,

বৃটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ব্যথা করুন ইতিহাসে লাশ আর লাশের বেদনা গাঁথা,

অনহারে উপবাসে জেগে থাকা মানুষের দুঃখ কষ্টের জীবন ব্যথা,

আমার প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশের সৌরভ ও গৌরবের আত্ম চেতনা কথা।

প্রিয়তম সন্তান আমি তোমকে বলছি,তুমি আমার কথা শোন-

এই বাংলার মাটিতে এখনো প্রতিদিন রক্ত ঝরে মৃত্যু আর মৃত্য!

দেশদ্রোহী ঘাতক সন্ত্রাসের মিলিত রন্ধুত্বে বিষে বায়ু সন্ত্রাস ছড়ায় নৃত্য!

কখোন ঘাতকের অত্যাচারে জীবনের আর্তনাদ ধ্বনি প্রতিধ্বনি হয় করুণ চিত্র।

পিতার চোখ অপমানে অবনত,ক্লান্ত শরীর বিপন্ন মুখ,

দুখিনি মাতার ক্রন্দন ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হয় বেদনার আঁখি।

এখনো অন্ধকারে জীবনের কষ্টগুলো অসহায় জর্জর কাঁদে শরীর নিরুপায়।

অনাহার উপবাসে কতো দিন,কতো রাত পেট জ্বালায় জ্বলে পোড়ে ক্ষত বিক্ষত হৃদয়।

এখনো সন্ত্রাস মাদকের বিষে দেশ প্রেমিকরা দিশেহারা, 

এখনো মুক্তিযোদ্ধাদের লাশের উপর ভাসে ক্লান্ত সময়ের আর্তনাদ ব্যথা হাহাকার-

প্রিয় জন্মভূমি,প্রিয়তম মাতৃভূমি,প্রিয় বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য।

এখনো আলো ও আঁধারে নদীর মাঝি ছুটে যায় দূর বহুদূর অকুল অজানা,

গঞ্জের বাজারে মানুষের বুকে এখনো জমে দাউ দাউ ক্ষুধার দহন আগুন।

ঘুমহীন এই স্বদেশের পবিত্র মাটির বুক ছুঁয়ে ব্যথিত জীবন কাঁদে সংসার চেতনা।

প্রিয়তম সন্তান আমি তোমাকে বলছি,তুমি আমার কথা শোন-

এখনো শিশু কিশোররা রাতে খোয়াব দেখে যুদ্ধের আওয়াজ ক্রন্দন ধ্বনি।

এখনো ধর্মের লেবাস ও ঘাতকের অত্যাচারে অসহায় জীবন সংসার কাঁদে যৌবন।

এখনো সন্ত্রাসের তাণ্ডবে হাত কাটা কিশোর আর্তনাদ করে অশান্ত বিবাদ।

আহত আর্তনাদ চিৎকার ভেসে আসে রক্তপাত খুন বিষাদ!

অমূল্য মাতৃত্বের বেদনা ও মাটির ব্যথায় দিশেহারা দেশপ্রেম স্বজন।

নগরের বুকে অবুঝ শিশুরা প্রতিদিন ঝরে পড়ে ব্যথার আগুনে ক্রন্দন।

অতন্দ্র রাতের প্রহরে বুকের ব্যথাগুলো অগ্নি শিখার মতো জ্বলে নিঃশব্দ মরণ!

অশনি আঁধারে প্রিয়তম জন্মভূমি,প্রিয়তম পৃথিবীর ও প্রিয়তম মৃত্তিকা অসহায় মলিন।

মহাকালের দিকে দিকে যাত্রা করে অনাদি অক্ষয় জীবন সংগ্রাম অধিকার বিপ্লব-

গৌরাঙ্গ বক্ষের উপর তাঁর বিদগ্ধ দুটি নয়ন সুদূর আন্দোলন করে দীপ্ত সজিব।

আঁকা বাঁকা রাস্তার মতো চলমান নদীগুলো ভীষণস্রোতে সুভদ্রকে আহ্বান করে নিরিবিলি।

নিঃসঙ্গ একা একা কথা বলে অতন্দ্র প্রাণ অনন্ত চিত্ত আগামী দিন সরল।

প্রিয়তম সন্তান,তুমি কি শুনতে পাও,সেই বেদনার বিপ্লবী দাউ দাউ মিছিল ধ্বনি?

সেই কান্নার শব্দ,সেই যন্ত্রণার ক্ষত বিক্ষত আন্দোলন দাবী আদায় শ্লোগান?

তোমার পরস্পরা বংশের রক্তে ছিল প্রতিবাদের লেলিহান ঝংকার শ্লোগান দহন।

আরও ছিল দেশপ্রেম মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্ব সাহসে গাঁথা লড়াই আন্দোলন জাগরণ।

তাঁরা জীবনের সত্তায় লুকিয়ে রেখেছিল স্বাধীনতার অঙ্কুর বার্তা নিপুণ।

তাদের অনাগত দিনের যাত্রা ছিল আলোয় দীপ্ত অধিকার কল্যাণ নির্মাণ।

তাঁরা ছিল দৃঢ় দীপ্ত সূর্যের প্রখর কিরণে অতন্দ্র সাহসী বীর যোদ্ধা স্বাধীনতার।

দুর-বহুদুর নীল অন্ধকারে সারারাত যুদ্ধ করেছিল বাঙালিদের বিজয় অধিকার।

হাজার কৃষকের বুকে স্বপ্ন ছিল নতুন শস্যের আবাদ নব নব কল্যাণ সংস্কার।

জননীর বুকে ছিল স্নেহ মমতার প্রত্যাশা ও ভালোবাসার মহৎ সংসার।

প্রিয়তম পারুল গ্রামে শেফালী ঝরা প্রভাত জেগে উঠতো চেতনায় নতুন!

মৃত্তিকার ফসল সৌরভ ছড়াতো রাত্রির আঁধার ভাঙ্গা আলোতে অভিজ্ঞ গুণাগুণ।

তাদের অধিকার লড়াইয়ে আজন্ম শ্লোগান ভেসে আসতো মুক্তিযুদ্ধের।

প্রিয়তম সন্তান তুমি কি শুনতে পাও সেই দেশপ্রেমের প্রতিধ্বনি ঝংকার?

তাদের দাবি তাদের অধিকারের মিছিল মহাসাম্যের সুষম বণ্টন শ্লোগান অঙ্গীকার?

বিচলিত গ্রাম ও নগরের বুকে আলো জ্বালাতে গিয়ে যারা ফিরে আসেনি,

যারা এই মাটিকে ভালোবেসে যুদ্ধে গিয়েছিল দেশপ্রেমের সেবায় যুবক যুবতী!

প্রথম সূর্যের রোদে তাঁরা জ্বলে উঠেছিল সাহসী দূর বহুদূর সমান অধিকার প্রীতি।

বীজের অঙ্কুরে নতুন চারাগাছ চেতনা দিয়েছিল দৃঢ় দীপ্ত সৌরভ মতি।

সাহসী জাতি সূর্য শিখার মতো জ্বলে উঠেছিল হাজারও নতুন প্রভাত মুক্তি।

রোদ্রের উত্তাপ আন্দোলন সংগ্রাম ও জীবনের বাসনায় সময় জেগে উঠেছিল অগ্নি শিখার মতো প্রগতি-

মাটির মমতায় সংবদ্ধ হয়েছিল দেশপ্রেমিক ও জ্ঞানীদের মহাজ্ঞান জ্যোতি।

প্রিয় স্বদেশে সবুজ লাল পতাকা হাতে জাতির পিতা,

স্বাধীনতার মহানায়ক আশার ধ্বনি মুক্তির বাণী শোনালো দীপ্ত নীতি,

‘রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেবো,তবুও এই দেশকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ।

জাতির পিতা অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতার ভাষণ মেধায় অহরহ,

যুদ্ধের তলোয়ার শানিত হলো মুক্তির বিপ্লবী বার্তা উদয়।

যুদ্ধ শেষে এক রক্তাক্ত স্বাধীনতা অর্জিত হলো আমাদের বিজয়।

শক্ররা অন্ধকারে লুকালো আর আমরা জেগে উঠলাম আলোয় সমুজ্জল,

সোনালী রৌদ্রের উদ্ভাসিত আলোতে আলোতে দীপ্তিময় হলো মাতৃভূমি উজ্জ্বল।

প্রিয়তম জন্মভূমি,প্রিয়তম মাতৃভূমির প্রতি নতজানু হলো দেশপ্রেমিক যত গুণি,

আর তখনই নিষ্ঠুর ভাবে হত্যা করা হলো বাংলার দীপ্তিময় জাগরণ ধ্বনি,

স্বাধীনতার মুক্ত ভাষণ হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির মহানাযক,

বাংলার রাখাল রাজা মহা-দেশপ্রেমিক বঙ্গবন্ধুকে।

সাথে সাথে রক্তাক্ত হলো মাটি,সাথে সাথে ব্যথিত ইতিহাসের বিবেক।

ঘাতকরা পরস্পরা বংশধরদেরকে হত্যা করলো করুণ আর্ত চিৎকার।

ধীরে ধীরে হত্যা করা হলো স্বাধীনতার অগ্রনায়কদের।

প্রজ্বলিত সূর্যের আলো নিভে গেলো,ফিরে এলো কালো আঁধার।

মুখোশধারী শক্ররা আবার জেগে উঠলো হত্যার নেশায়!

অভিশপ্ত রাত্রির বুকে ঘাতকদের তাণ্ডব জ্বালায় ক্ষত বিক্ষত জীবনের পরিচয়।

অবক্ষয় ও বিধ্বস্ত নগরের রাজপথে ঝরতে লাগলো নিষ্ঠুর রক্তপাত!

চতুর্দিক ক্ষুধা শস্যহীন মাটির বক্ষে বেদনার কান্না ধ্বনি বিষণ্ণ,

নিস্ফল বৃক্ষরাজি অনাহারী পশু পাখি যত জীবন বিপন্ন,

আদিগন্ত বাংলার প্রিয়তম পিতা,প্রিয়তম মাতা,ইতিহাসের

মাটিতে,

শহীদ রূপে ঘুমিয়ে পড়লো বিষাদ কালো দীর্ঘ রাত্রি।

প্রিয়তম সন্তান আমি তোমকে বলছি,তুমি আমার কথা শোন-

পরিসমাপ্ত যুদ্ধে কথা এখনো শেষ হয়নি,

অনিবার্য সৌন্দর্যের সুকণ্ঠ ধ্বনি ও গভীর বেদনার কথা তুমি এখনো শোননি,

গর্ভবতী বোনের ধর্ষিত লাশ তুমি সেদিন দেখনি।

ভাসমান পিতার লাশের পাশে শমিরনের মৃত দেহটি ছিল নিরব মলিন!

বিভৎস সেদিনের সেই জ্বালা পোড়া বিচিত্র রূপ তুমি কখনো স্বপ্নেও ভাবনি।

মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন এখনো নতুন বাজার থেকে ফেরেনি,

নিহত টিংকুর খবর এখনো কেউ জানেনা আঁধারে অজানা ধ্বনি।

মালেকা বানু এখনো বেঁচে আছে নিজেকে বিধবা ভাবে না!

তাঁর প্রিয় সন্তান এখনো বাবাকে খোঁজে কি যে করুন যন্ত্রণা!

এখনো আঁধার রাতে শিশুরা কাঁদে স্বজন ফিরে আসার বেদনায়।

আহত নদীর বুকে বেদনারস্রোত ক্ষত চিহ্ন বুকে জর্জর বেদনায় কাঁদে জীবনের পরিচয়।

আজো পানির বুকে ঢেউ তোলে মৃত লাশের গন্ধ বিস্ময়,

কতো বেওয়ারীশ লাশ মাটিতে পঁচে গিয়েছিল সেদিনের জীবন যন্ত্রণার ইতিহাস অসহায়।

নিষ্ঠুর ঘাতকের বারুদের বিষে জ্বলেছিল কতো গ্রাম কতো নগর অঙ্গার।

প্রিয়তম সন্তান তুমি শুনছো? আমি তোমাকে বলছি ইতিহাস পাতা নিরব সমুদ্রের গভীর?

বাংলার মাটিতে বৃটিশ বিরোধী সাহসী দেশপ্রেমিক বীর,

তিতুমীরের বুক থেকে প্রথম রক্ত ঝরেছিল দীপ্ত সংস্কারের দৃঢ় অধিকার।

রক্ত ঝরেছিল সিরাজুদ্দৌলা,মোহনলালের বুক থেকে ক্ষত বিক্ষত আর্তনাদ,

মৃত্যুর জন্য ফাঁসির মঞ্চে উঠেছিল মাস্টার দা সূর্য সেন অমৃত চাঁদ!

আরো আরো অনেক দেশপ্রেমিক স্বজন সুজন অবাদ,

মহান মাতৃভাষার জন্য রক্ত দিয়েছিল রফিক শফিক জব্বার,

আরো হাজার দেশপ্রেমিক বীর সংগ্রামী বিপ্লবী জীবন অঙ্গীকার।

অধিকারের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছিল নূর হোসেন,

শাজাহান সিরাজ,রাউফন বসুনিয়া,জেহাদ,ডাঃ মিলন,

দিপালী শাহ্ ও আরো অনেক অনেক দেশপ্রেমিক বন্ধুদের করি স্মরণ।

হলুদ ঝরা পাতার বুকে মৃত দেহগুলো সেদিন কেঁদেছিল আমাদের বিপ্লবী অধিকার।

আঁধার পথের পেছনে পেছনে দুর্বিনীত বিশ্বাস ঘাতক ঘৃণ্য অসুর!

আঘাতে রক্তাক্ত করেছিল প্রিয় স্বদেশ প্রিয় মৃত্তিকা।

কত বিনিদ্র রাত,কত যন্ত্রণার দিন,কত যুবক যুবতী ন্যায়পরায়ণ বিবেক।

আকাশ জুড়ে কালো কালো মেঘ,খন্ড খন্ড মেঘ অশনি সময়,

শব্দহীন মৃত্যুর মতো নীরবে ক্ষয়ে যাওয়া ব্যথিত জীবন বিস্ময়,

উত্তাপহীন অসুখে জড়ানো যৌবন দেহের ভেতর স্বজনহারা কান্নার মরণ।

তবু দীপ্ত জীবনগুলো আলোর খোঁজে লড়াই করেছিল দৃঢ় যোদ্ধা সাহসী বীর।

তাঁরা কঠিন আঁধার ভেঙে এনেছিল প্রথম সূর্যের দীপ্ত সকাল আলোর।

তারপরও বিশ্বাসঘাতকরা আমাদের দেশপ্রেম ও ভালোবাসায়,

অনল বিষ ঢেলে দেয় যন্ত্রণায় ক্ষত বিক্ষত সমাজ যেন অসহায়।

আর ছিঁড়ে ফেলতে চায় জাতির সম্মান শিকড় পরিচয়।

প্রতিকুল অবিশ্বাসী বৃক্ষের ছায়ার নীচে জেগে আছে সেই ঘৃণিত দানবের অশনি অবক্ষয়।

আমাদের এই বসবাস ও দেশপ্রেমের বিদগ্ধ কর্মকে ব্যর্থ করে দিতে চায় শত্রুরা বিস্ময় ।

বিষফলে বিষাক্ত করে দিতে চায় ইতিহাসের বিকৃত ঘাতক ক্ষয়ে ক্ষয়ে অপচয়।

ওরা বুঝে না দেশপ্রেম,ওরা বুঝেনা মাটির দুঃখ বেদনা,

পৃথিবীর রাত জানে বিশাল অনিদ্রার কি শোক ও যন্ত্রণা।

দৃর্যোগ অন্ধকার ভাঙা আমাদের এক একটা প্রতিজ্ঞা দৃঢ় দীপ্ত ঐশ্বরিক।

কঠির তিমিরে যাত্রা ছিল আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম উজ্জ্বল বিবেক,

জন্মভূমিকে জাগিয়ে বিজয়ের সুর ধ্বনি তুলেছিল দীপ্তিময় প্রাণের যোদ্ধা ঝলক।

দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছিল প্রিয়তম শহীদ মুখগুলো এখনও হৃদয়ে আঁকি,

দুঃখের রঙ দিয়ে ভালবাসার ঘর বাঁধি প্রেমময় ধ্যান তপস্যায় পাতক।

মাটির রঙে প্রিয় স্বদেশের ছবি নির্মাণ করি ভালোবাসার দীর্ঘ জীবন অবাক।

অনেক স্বপ্ন দিয়ে কষ্ট দিয়ে নতুন ঘর বাঁধি সংসার সুখ অধিক,

অনাগত বংশধরদের সুন্দর জীবন ও জ্ঞানের প্রজ্ঞায় ইতিহাসের জ্ঞান লিপিবদ্ধ পুস্তক।

প্রিয়তম সন্তান আমি তোমকে বলছি,তুমি আমার কথা শোন-

হৃদয়ের গভীরে ও জীবনের মর্মমুলে ছবি আঁকো স্বদেশের,

তোমার নিবিড় বিশ্বাস ও দেশপ্রেমের কল্যাণে হৃদয় আপন ঠিকানা খুঁজে পাবে আর্দশ নীড়।

নির্জন দেহের গভীরে একটি ছোট ঘরে শুনবে দেশপ্রেম মধুর ডাক।

তা দিয়ে সেবা দেবে ও মর্যাদার ধ্বনি তুলবে নতুন ছবি আঁকবে সত্য বিবেক।

ভালোবাসার প্রিয় মুখগুলো জ্বলে উঠবে বাংলাদেশের রং সবুজ লাল!

জীবনের শ্রমগুলো শস্য বীজের খোলস ভেঙে অঙ্কুরিত হবে ফসলের মাঠে সোনালী সকাল।

মাটির দেহে জেগে উঠবে সবুজ সজিব চারাগাছ বৃক্ষগুলো জ্বল জ্বল!

আদর্শ সম্মানে ও ধীরে ধীরে নিজস্ব গতিতে বেরে উঠবে প্রাণগুলো সরল।

সফলতার আলো ছড়াবে বাস্তবতার পথে পথে নিপুণ দক্ষ আবিষ্কার।

অগ্নিবিষ হোমানোল শিখায় অশুভ বৃক্ষকে ধ্বংস করে প্রগতির পথে দুর্বার।

জীবন সভ্যতার চলমান ধ্বনি উঠবে যাত্রা হবে দীপ্তকর।

প্রিয়তম সন্তান তুমি হেঁটে চলো,তুমি হেঁটে যাও সুদূর-

মানুষের চোখে সহজ সরল জ্ঞানেররেণু জাগিয়ে তোল ফোটাও সুন্দর ফুল।

জীবন কর্মে সেবার আলো জ্বালাও মাধুরী প্রেমে সৌরভ দুকুল।

পূর্বাভাস জন্মের শেকড়ে জেগে উঠুক নতুন চেতনা আলো সুমধুর,

তোমার বংশের বেদনা ও ক্ষত চিহ্ন মুছে যাক সাম্যের অধিকারে দীপ্তকার।

তবেই শেষ হবে যন্ত্রণার দিন,ফসলে ভরে উঠবে সোনালী সবুজ মাঠ নতুন।

সু-ষমবন্টন ভালোবাসার প্রেমে জেগে উঠবে জাতিসত্তার জীবন জাগরণ,

সবুজ সতেজ এক সূর্যদোয় সুন্দর আগামী আর্দশ চেতনায়।

অনর্গল জ্ঞান ছড়াবে আলোর জ্যোতিতে আঁধার রজনী মুছে সকাল রৌদ্র উদয়।

নতুন প্রভাতে একদিন আমাদের দুঃখগুলো কেটে যাবে ক্ষুধামুক্তির আসন্ন দিন।

প্রিয়তম সন্তান তুমি পাবে স্নেহদুগ্ধ নতুন আলোর চেতনা বিজ্ঞ কিরণ।

চাষাবাদের উপযোগী ফসলের মাঠ ও মৃত্তিকার ভালোবাসা প্রেমে পুষ্প নন্দন!

প্রিয়তম অমিত সন্তান আমার তুমি হেঁটে যাও,তুমি হেঁটে যাও-

তুমি আরও দুর পথে হেঁটে যাও নদীর বুকে বৈঠা বাও দীর্ঘ তরী বয়ে যাও,

এক সুস্থ ফুলের বুকে বাংলাদেশকে জাগিয়ে তোল পরিপক্ক ফলের মনোযোগে অন্বেষণ!

আঁধার কেটে যাক স্বচ্ছ আলো ফিরে আসুক জীবন গৌরব সম্মান।

চন্দ্রের আলোতে রূপালী আকাশ জ্যোৎস্নায় ভরে উঠুক দেশপ্রেম উদয়।

মৌসুমী নদীর শিমুল ফোটা বাঁকে মুক্তিযোদ্ধারা দাঁড়িয়ে থাকবে চেতনায়।

তাঁরা স্বাধীনতার স্মৃতি চিহ্ন বুকে রক্তিম পলাশের শুভেচ্ছায় তোমার পাশে দাঁড়াবে সূর্যদোয়।

স্নেহময় হাতে ও বিনীত পুস্প মমতার সৌরভে জ্ঞান ছড়াবে মহৎ সেবায়।

সত্যের উদগত নতুন অঙ্কুরে জেগে উঠবে বাংলাদেশ অবিস্মরণীয় প্রজ্ঞাময়।

এক প্রত্যয় প্রদীপ্ত জীবন যাত্রার আলোয় আলোয় সভ্যতার পরিচয়।

অতীত সমকাল ভবিষ্যৎ যেন এক কেন্দ্রবিন্দুতে ও মহাচৈতন্যে  মানবতার কল্যাণ বিস্ময়।

মাটির ললাট স্পর্শ করে মহাকালের চৈতন্যে তোমার নাম লিখা হবে গৌরব মর্যাদায়।

তুমি হেঁটে যাবে,আর তোমাদের সাথে হেঁটে যাবে নতুন শিশুরা আলো ঝলমল চেতনায়।

প্রিয়তম সন্তান আমি তোমকে বলছি তুমি আমার কথা শোন মহাবিশ্ব চৈতন্যময়।।