// নাজিম হাসান,রাজশাহী প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নরদাশ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ারের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, সহিংসতায় উস্কানী ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাঁর শাস্তি ও গ্রেপ্তারের দাবিতে গতকাল শনিবার সকালে স্থানীয় মৎস্য চাষিরা মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছে। শেষে তাঁর কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। তবে আওয়ামী লীগের নেতা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। গতকাল শনিবার সকালে উপজেলার নরদাশ ইউনিয়নের সুজনপালশা আমপাড়া এলাকায় ছয় গ্রামের মৎস্যচাষিরা এই কর্মসূচি পালন করেন। বিলের চারপাশের দেড় শতাধিক নারী-পুরুষ মৎস্যচাষিরা এই কর্মসূচিতে অংশ নেন। বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করা হয়। শেষে ক্ষুব্ধ মৎস্যচাষিরা তাঁর কুশপুত্তলিকা দাহ ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। কর্মসূচি চলাকালে মৎস্যচাষিদের মধ্যে বক্তব্য দেন আক্কাস আলী, রাশেদুল ইসলাম, আফজাল হোসেন প্রমুখ। বক্তারা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ নেতা স্থানীয় হাতিয়া বিল নিয়ন্ত্রণে নিতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন। বিলটিতে প্রতি বছর প্রায় সাত কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয়। আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম সারওয়ার মৎস্যচাষ প্রকল্পের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদার দাবি করে আসছিলেন বলে মৎস্যচাষের সঙ্গে যুক্তরা অভিযোগ করেন। তবে প্রকল্পের লোকজন তা দিতে অস্বীকার করলে তিনি বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। এদিকে গত ১ ফেব্রুয়ারি সকালে ১৫-১২০জন উচ্ছৃংখল ব্যক্তি ধারাল অস্ত্র নিয়ে মৎস্যচাষিদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। আওয়ামী লীগ নেতার নির্দেশে এই হামলায় ১২জন মৎস্যচাষি আহত হন। তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর উল্টো মৎস্যচাষিদের ওপর মামলা করে হয়রানি করা হচ্ছে। মানবন্ধনে বক্তরা অভিযোগ করে বলেন, চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার এখনো তাঁদের হুমকি দিচ্ছেন। মামলার আসামি হওয়ার কারণে বিলের মৎস্যচাষিরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এই ঘটনায় স্থানীয় মৎস্যচাষি আবদুল মতিন বাদী হয়ে আওয়ামী লীগের নেতা গোলাম সারওয়ারকে আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন। তবে এখনো গ্রেপ্তার হননি। মামলা দায়েরের পর তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে চাষিদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ করা হয়। তবে আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম সারওয়ার তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, চাঁদা দাবি করা অযৌক্তিক। তিনি অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি বিলে মাছচাষ করলেও জমির মালিকদের কোনো টাকা দিচ্ছিলেন না। এই বিষয়ে বঞ্চিতরা তাঁর কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। তবে নিষ্পত্তি করতে পারেননি। তাঁর বিরুদ্ধে কর্মসূচি পালন প্রসঙ্গে বলেন, তিনি এই বিষয়ে কিছু জানেন না। তবে মামলার বিষয়টি শুনেছেন বলে জানিয়েছেন। বাগমারা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলার কপি আদালত থেকে পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, দ্রুত প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।#