গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি: পরিবেশ আন্দোলনের নেতাদের দাবির প্রেক্ষিতে গোলাপগঞ্জে প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো মুঘল স্থাপত্যশিল্পের অনন্য নিদর্শন ‘দেওয়ানের পুল’ ভাঙার কাজ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।
বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান।
এর আগে বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের নেতারা ‘দেওয়ানের পুল’ দেখতে যান। এসময় শ্রমিকদের সেতুটি ভাঙতে নিষেধ করেন তারা।
এ বিষয়ে বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম কিম বলেন, ‘প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, চুন—সুরকি দিয়ে নির্মিত সেতুর ভেঙে ফেলা অংশ সংস্কার করে পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব। তাই স্থানীয় প্রশাসনের কাছে সেতুটি রক্ষার দাবি জানিয়েছি। এছাড়া মোঘল আমলের সেতু ভাঙায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে জনস্বার্থে মামলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
উপজেলা প্রকৌশলী মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ইতোমধ্যে সেতুর খানিকটা অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছে। যেহেতু সবাই সেতুটি রক্ষার আহ্বান জানাচ্ছেন, তাই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে আপাতত ভাঙার কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, প্রায় ২০০ বছর আগে সিলেটের তৎকালীন দেওয়ানের (রাজস্ব কর্মকর্তা) নির্দেশে গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকা দক্ষিণ এলাকার শ্রীচৈতন্যদেবের বাড়িমুখী সড়কটি নির্মাণ করা হয়। ওই সময় লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নের দেওরভাগা খালে একটি সেতুও নির্মাণ করা হয়। সেই সেতুটিই ‘দেওয়ানের পুল’ নামে পরিচিত। সেতু পুর্ননিরমাণ ও প্রশস্থকরণ করতে গিয়ে ছয় দিন আগে পুরোনো সেতুটি ভাঙার কাজ শুরু হয়।
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সেতুটি ভারি যানবাহন বহনের ক্ষমতা হারানোর কারণে সেটি পুনর্নিমাণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। পুরোনো সেতুটির দৈর্ঘ্য ছিল ২০ ফুট ও প্রস্থ ১৬ ফুট। একই জায়গায় ৯৯ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩২ ফুট প্রস্থের সেতু বানানো হবে। এজন্য ৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আগামী অর্থবছরে সেতুর সংযোগ সড়কটিও প্রশস্থ করা হবে।