পানি উন্নয়ন বোর্ডের বরোপিট জলকর থেকে প্রকৃত সুফলভোগিদের উচ্ছেদের প্রতিবাদে বিক্ষোভ 

মোঃ নূরুল ইসলাম, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

পাবনার চাটমোহর উপজেলার গুনাইগাছা ইউনিয়নের চরপাড়া এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বরোপিট জলকর থেকে প্রকৃত সুফলভোগিদের উচ্ছেদের অপচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই অপচেষ্টার প্রতিবাদে জলকর এলাকার সুফলভোগি নারী ও পুরুষ 

২০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকালে পাউবো’র বাঁধে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছেন। একইসাথে অনুষ্ঠিত হয়েছে সংবাদ সম্মেলন।

জলকরের সুফলভোগি মোঃ সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন,ইউপি সদস্য মোতালেব হোসেন,আওয়ামী লীগ নেতা সোলায়মান হোসেন,আফসার সরদার,জয়নাল সরকার,রাশিদুল হক,আকাব সরদার প্রমুখ।

বক্তারা অভিযোগ করেন,চাটমোহর উপজেলার গুনাইগাছা ইউনিয়নের মথুরাপুর বাবর আলীর বাড়ি হতে চরপাড়া মফিজ প্রামানিকের বাড়ি পর্যন্ত পাউবো’র বরোপিট জলকরটি ২৭ জন সুফলভোগি দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করে আসছে। কিন্তু দলনেতা মোঃ আলী আশরাফ কাউকে না জানিয়ে গুনাইগাছা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ও তার ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেনসহ এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সাথে যোগসাজসে নতুনভাবে সুফলভোগির তালিকা করে তা অনুমোদন নিয়ে জলকর জবরদখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। তারা প্রকৃত সুফলভোগিদের উচ্ছেদর পাঁয়তারা করছেন।

বক্তারা আরো বলেন,আমরা মাছ চাষ করেছি। আগামী চৈত্র মাস পর্যন্ত লীজের মেয়াদ রয়েছে এবং আমরাই জলকরের সুফলভোগি। বক্তারা যে কোন মুল্যে জলকর রক্ষা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

এর আগে বরোপিট পাড়ে জলকরের সুফলভোগিদের পক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়,চাটমোহর উপজেলাধীন গুনাইগাছা ইউনিয়নের মথুরাপুর বাবর আলীর বাড়ি হতে চরপাড়া মফিজ প্রাং এর বাড়ি পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের বরোপিটের সুফলভোগী সদস্য হিসেবে তারা বিগত ২০১৬ সাল হতে অদ্যাবধি সরকারি রাজস্ব প্রদান করে ভোগ দখল করে আসছেন। ইতঃপূর্বে ২০০৮ সাল হতে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দলপতি মোঃ আলী আশরাফ অন্য সুফলভোগীদের নিয়ে জলকরটি ভোগ দখল করত। সদস্যদের পাওনা বুঝে না দিয়ে ২০১৬ সালে সকল সুফলভোগীদের বাদ দিয়ে নতুন সুফলভোগী তালিকা করে।  সংবাদ সম্শেলনে সুফলভোগি সদস্যরা আরো বলেন,বর্তমানে আমাদের দেনা-পাওনা না বুঝিয়ে দেয়াতে চাটমোহর থানায় একাধিক দিন শালিশ বৈঠক শেষে ৩০ চৈত্র ১৪২৯ সাল পর্যন্ত আমাদেরকে মৎস্য চাষের অনুমতি দেওয়া হয়। জলাশয় বুঝে পেয়ে আমরা সুফলভোগীরা নতুনভাবে মাছের পোনা সরবরাহ করে মৎস্য চাষ করছি। কিন্তু আমরা জানতে পারলাম যে সম্প্রতি দলনেতা আলী আশরাফের নেতৃত্বে আমাদেরকে বাদ দিয়ে নতুন সুফলভোগী তালিকা তৈরী করে তা অনুমোদন নিয়ে বাংলা ১৪২৮-১৪২৯ বছরের রাজস্ব জমা দেয়া হয়েছে। এ রাজস্ব আমাদের সময়কালের। নতুন বছর এখন শুরু হয়নি। উল্লেখ্য আমারা পূর্ববর্তী বছরগুলোতে ডিসিআর এর মাধ্যমে রাজস্ব জমা প্রদান করতাম, বর্তমান সুফলভোগী তালিকাতে জলাশয়ের নিকটবর্তী সদস্যদের বাদ দিয়ে স্বচ্ছল,প্রভাবশালী,বিত্তবান ও জলাশয় হতে ২ থেকে ৫ কি.মি. দূরের লোকজনকে সুফলভোগী করা হয়েছে। 

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়,গুনাইগাছা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামসহ প্রভাবশালীর নিদের্শে ও তত্বাবধানে সুফলভোগী তালিকা তৈরী করেছে। ওই তালিকা সম্পর্কে আমরা অবগত নই। এই জলাশয় থেকে আমাদের উচ্ছেদ করে সুবিধাবাদী মহলটি নানাভাবে ভোগ দখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। নতুন তালিকা সম্পর্কে জেলা মৎস্য কার্যালয় ও উপজেলা মৎস্য কার্যালয় অবগত নয়। জলাশয় পাড়ের সুফলভোগীদের বাদ দিয়ে দলনেতা আলী আশরাফ প্রভাবশালীদের ইন্ধনে ভুয়া সুফলভোগী তালিকা তৈরী করেছে। আমারা এই অনিয়ম ও দূর্নিতির তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে পূর্বের তালিকা বহাল রাখার  বা যাচাই পূর্বক প্রকৃত সুফলভোগীদের তালিকা তৈরীর দাবি জানাচ্ছি। এ ছাড়া জলকর ভোগদখলকারী সুফলভোগিদের পক্ষে মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) পাবনা জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে গুনাইগাছা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ নুরুল ইসলাম জানান,কথিত সুফলভোগিদের অভিযোগ মিথ্যে। আলী আশরাফের পক্ষে সকল কাগজপত্র সঠিক আছে। যারা অভিযোগ করেছে,তারাই  জলকর দখলের অপচেষ্টা করছেন