হাজার বছরের সমৃদ্ধশালী সংস্কৃতির উত্তরাধিকারী আমরা – জান্নাতুল ফেরদৌসী 

জসীমউদ্দীন ইতি ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি 

হাজার বছরের সমৃদ্ধশালী সংস্কৃতির উত্তরাধিকারী আমরা। খাদ্যরসিক বাঙালি প্রাচীনকাল থেকে প্রধান খাদ্যের পরিপূরক মুখরোচক অনেক খাবার তৈরি করে আসছে। তবে পিঠা সর্বাধিক গুরুত্বের দাবিদার। শুধু খাবার হিসেবেই নয় বরং লোকজ ঐতিহ্য এবং নারীসমাজের শিল্প নৈপুণ্যের স্মারক রূপেও পিঠা বিবেচিত হয়। বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে আছে পিঠা। যখনই পিঠা-পায়েস, পুলি কিংবা নাড়ুর কথা উঠে তখনি যেন শীত ঋতুটি আমাদের চোখে ও মনে ভেসে ওঠে। প্রতি শীতেই গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে শুরু হয় পিঠা পুলির উৎসব। 

বাংলার নারীসমাজ অতীতে শিক্ষাদীক্ষায় অনগ্রসর ছিল সত্য, কিন্তু স্বীকার করতে হবে এদেশের নারী সমাজ লোকজ শিল্পকর্মে অত্যন্ত নিপুণ এবং সুদক্ষ। এলাকা অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন বা আলাদা রকম পিঠা তৈরি হয়ে থাকে। গ্রামাঞ্চলে সাধারণত নতুন ধান ওঠার পর থেকেই পিঠা তৈরির আয়োজন করা হয়।

শীতের সময় বাহারি পিঠার উপস্থাপন ও আধিক্য দেখা যায়। বাঙালির লোক ইতিহাস ও ঐতিহ্যে পিঠা-পুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে বহুকাল ধরে। এটি লোকজ ও নান্দনিক সংস্কৃতিরই বহি:প্রকাশ। যান্ত্রিক সভ্যতার এই ইট-কাঠের নগরীতে হারিয়ে যেতে বসেছে পিঠার ঐতিহ্য। সময়ের স্রোত গড়িয়ে লোকজ এই শিল্প আবহমান বাংলার অপরিহার্য অঙ্গ হয়ে উঠলেও এ যুগে সামাজিকতার ক্ষেত্রে পিঠার প্রচলন অনেকটাই কমে এসেছে। 

তাই মুখরোচক খাবার হিসেবে পিঠার স্বাদ গ্রহণ ও জনসমক্ষে একে আরো পরিচিত করে তুলতে শহরে ও গ্রামে বিভিন্ন স্থানে শীতকে ঘিরে আয়োজন করা হয় পিঠা উৎসব। লোকজ এই ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার প্রয়াসে বাঙালির পিঠা পার্বণের আনন্দধারায় ১৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় হরিপুর লেডিস ক্লাবের আয়োজনে পিঠা উৎসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই কথা বলেন তিনি।

উক্ত আয়োজনে হরিপুর লেডিস ক্লাবের সভাপতি জেরিন জাফরীন এর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ জিয়াউল হাসান মুকুল, উপজেলা নির্বাহী অফিসার একেএম শরীফুল হকসহ জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং লেডিস ক্লাবের সদস্যগন। 

আয়োজিত অনুষ্ঠানটি সফল ভাবে হওয়ার জন্য সহযোগিতা করেন উপজেলা পরিষদ।

উক্ত অনুষ্ঠান উদ্বোধনের আগে দুস্থ অসহায় পরিবারের মাঝে কম্বল এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ করা হয়।