নাজিম হাসান,রাজশাহী প্রতিনিধি:
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, জ্বালানি তেল, চাল-ডালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের গুলিতে দলীয় নেতাকর্মী হত্যা, হামলা এবং মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিতে আসতে শুরু করেন নেতাকর্মীরা। তবে তারা অনুমতি পাননি সমাবেশস্থলে প্রবেশের। গতকাল শনিবার ভোর থেকে খ- খ- মিছিল ও স্লোগান নিয়ে সমাবেশস্থলে জড়ো হচ্ছেন তারা। মহানগরীর ফায়ার সার্ভিস মোড় সংলগ্ন মাদরাসা মাঠ এরই মধ্যে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। এরপর বেলা ১১টার সময জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল আনুষ্ঠানিকতা। গণসমাবেশে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার দুপুর ২টার দিকে তিনিসহ কেন্দ্রীয় নেতারা মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মামুনুর রশিদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বিশেষ অতিথি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু প্রমুখ। সমাবেশ শুরুর পর সমন্বয়ক হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির রাজশাহীর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। বক্তব্যের শুরুতে তিনি নেতাকর্মীদের হলুদ ক্যাপ হাতে নিয়ে উঁচু করে ধরতে বলেন এবং নাড়াতে বলেন। এরপর তিনি সরকারকে হলুদ কার্ড দেখানোর ঘোষণা দেন। রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, সমাবেশের আগে বলেছিলাম, রাজশাহীর গণসমাবেশে সরকারকে হলুদ কার্ড দেখানো হবে। আজ হলুদ কার্ড দেখালাম, ইনশাল্লাহ ঢাকার সমাবেশে সরকারকে লাল কার্ড দেখানো হবে। যতই বাধা আসুক ১০ ডিসেম্বর ঢাকার সমাবেশে আমরা সরকারকে লাল কার্ড দেখাতে চাই। এসময় নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, শীত উপেক্ষা করে গত তিনদিন যাবৎ আপনারা সমাবেশস্থলে অবস্থান করছেন। এজন্য বিএনপি নেতাকর্মীদের আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই। দুলু বলেন, গত ১ ডিসেম্বর থেকে মিছিল আর বিক্ষোভে পরিপূর্ণ ছিল এই মাদরাসা ময়দান। সরকার বিএনপির সমাবেশ ঘিরে তিন দিনের পরিবহন ধর্মঘট দিয়েছে। বিএনপি নেতা কর্মীদের ওপর মামলা-হামলা করেই কেবল ক্ষান্ত হয়নি, সমাবেশের বক্তব্য যাতে গণমাধ্যমে দেখানো না যায় সেজন্য ইন্টারনেট সংযোগ পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে।দুলু বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন খেলা হবে। আমি তাকে বলতে চাই, খেলা হবে। তাকে জিজ্ঞেস করতে চাই, কোন মাঠে খেলা হবে। পুলিশ-র্যাব রেখে আসেন, সমান মাঠে খেলা হবে। ঘোষণা দেন, আমরা প্রস্তুত আছি। এদিকে,রাজশাহী বিভাগীয় পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা নাটোরসহ রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় অনিদিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট আজ শনিবার বেলা ৪টা থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিভাগীয় কমিশনারের সাথে রাজশাহী সড়ক পরিবহণ মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দের বৈঠকের পর ধর্মঘট প্রত্যাহারের এই ঘোষনা দেয়া হয়েছে। বিষয়টি সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক টিটো নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আমাদের দাবির বিষয়ে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের আশ্বাসে পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর আগে মহাসড়কে নছিমন-করিমন-ভটভটিসহ অবৈধ যান চলাচল বন্ধ করতে ১০ দফা দাবিতে গত বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা থেকে রাজশাহী বিভাগে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়। রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ ঘিরে পরিবহন ধর্মঘট শুরু হওয়ায় বিএনপির নেতাকর্মীরা অটোরিকশাসহ তিন চাকার যানে রাজশাহীতে আসেন। ঘোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ যাত্রীদের।