ইয়ানূর রহমান : যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে রোগীদের বিনামূল্যে হার্ট অ্যাটাকের ‘ নক্সারিন’ (জেনেরিক নাম এনোক্সাপারিন) ইনজেকশন দেয়া হচ্ছে। রোগী ভর্তি হওয়া থেকে ৩ দিন পর্যন্ত বিনামূল্যে দামি এই ইনজেকশন পেয়ে মধ্যবিত্ত ও গরিব মানুষ অনেক উপকৃত
হচ্ছেন। চিকিৎসকরা এটাকে জীবনরক্ষাকারী ইনজেকশন বলে মন্তব্য করেছেন।
হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ডা. আখতারুজ্জামান রোগীদের বিনামূল্যে ৬ টি ‘নক্সারিন’ ইনজেকশন প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত দিনে করোনারি কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন রোগীদের মাত্র ১ টি হার্ট অ্যাটাকের ইনজেকশন সরবরাহ করা হতো। ভর্তির পরই ওই ইনজেকশনটি পুশ করা হতো। তাও আবার কেউ পেতেন কেউ পেতেন না। বাকি ইনজেকশনগুলো স্বজনদের বাইরে থেকে কিনতে হতো। প্রতিদিন দুই টা করে দামী এই
ইনজেকশন কিনতে গিয়ে সব চেয়ে বেশি বিপাকে পড়তেন গরিব মানুষ। রোগীর চিকিৎসার জন্য এসব পরিবারের শেষ সম্ভলটুকু হারানোর উপক্রম হতো।
কিন্তু বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামানের হস্তক্ষেপে রোগীদের হার্ট অ্যাটাকের ইনজেকশন সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। চিকিৎসক কর্মকর্তার এমন উদ্যোগে গরিব রোগীরা আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থের কবল থেকে রক্ষা পাচ্ছেন। প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকার ৬ টি ইনজেকশন বিনামূল্যে পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
ডলি খাতুন নামে এক নারী জানান, তার স্বামীকে এখানে ভর্তির পর থেকে নাভিতে দেয়া ইনজেকশন হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে পেয়েছেন। রোগীকে প্রতিদিন ২ টা করে ৩ দিনে মোট ৬ টি ইনজেকশন দেয়া হয়।
চিকিৎসাধীন এক রোগীর ভাই ইন্তাজ আলী জানান, সরকারি হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে দামি ইনজেকশন পেয়ে তারা কিছুটা হলেও আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন। হার্টের ইনজেশনের সাথে কিছু ওষুধ বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে।
একই কথা জানান আরও কয়েকজন রোগীর স্বজন।
কার্ডিওলজি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. তৌহিদুল ইসলাম জানান, এনোক্সাপারিন ইনজেকশন হলো আল্লাহর রহমতে হৃদরোগে আক্রান্তদের জীবনরক্ষাকারী ইনজেকশন বলা যেতে পারে। হৃদরোগে আক্রান্তের পর ধমনীতে জমাট রক্ত পাতলা করতে বিশেষ এই ইনজেকশন পুশ করা হয়। এতে হার্ট সচল করে।
বিনামূল্যে ইনজেকশন পেয়ে রোগীরা খুশি। চিকিৎসকরা ওয়ার্ড রাউন্ডে গেলে রোগী ও স্বজনরা সন্তোষ্টির কথা প্রকাশ করে।
হাসপাতালের স্টোর কিপার সাইফুল ইসলাম জানান, হার্ট অ্যাটাকের ইনজেকশন ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত পরিমানে সরবরাহ করা হয়েছে। শেষ হওয়ায় পর আরও দেয়া হবে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান জানান, যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন অধিকাংশ রোগী গরিব। বিনা চিকিৎসায় তারা মারা যাবে স্বজনদের কাছে এরচেয়ে কষ্টের আর কিছু নেই। হার্ট অ্যাটাকের পর সঠিক সময়ে ‘নক্সারিন’ ইনজেকশন দিলে রোগী সুস্থ
হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু অনেক রোগীর স্বজন দামি এই ইনজেকশন কিনতে হিমশিম খান। তাদের চিকিৎসার সুবিধার্থে বিনামূল্যে ৬ টি ইনজেকশন দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। রোগীদের ইনজেকশন ঠিক ভাবে দেয়া হচ্ছে কি না তার জন্য গোপন তদারকির ব্যবস্থা রয়েছে।