কাতার বিশ্বকাপে গ্রুপ ‘বি’ এর নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে ওয়েলসের বিপক্ষে ম্যাচের শেষ মিনিটের ঝড়ে ২-০ গোলের জয় পেয়েছে ইরান। বাংলাদেশ সময় ৪ টায় আহমাদ বিন আলী স্টেডিয়ামে মাঠে নামে দু’দল। প্রথমার্ধ শেষে গোলশূন্য সমতায় থেকে বিরতিতে যায় ওয়েলস ও ইরান। ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ের শেষ মিনিটে দুই গোল করে ম্যাচ নিজেদের করে নেয় ইরান।
ম্যাচের শুরু থেকেই লম্বা পাসে খেলার চেষ্টা করে ইরান। অন্যদিকে ছোট ছোট পাস খেলে আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করে ওয়েলস। ম্যাচের ৯ মিনিটে গুছিয়ে আক্রমণে ওঠে ইরান। তবে তা থেকে কোন বিপদের সৃষ্টি করতে পারেনি তারা। ম্যাচের ১২ মিনিটে ডান দিক রবার্টসের ক্রস থেকে ইরানের গোলমুখে শট করেন রেমসি। তবে ইরানের গোলরক্ষক হোসেইন হোসেইনি দারুণ সেভে দলকে রক্ষা করেন।
ম্যাচের ১৬ মিনিটে ওয়েলসের জালে বল জড়ান আলি ঘুলিজাদে। তবে তা অফ সাইডের কারণে বাতিল করে দেন রাফারি। ম্যাচের ২২ মিনিটে পাওয়া ফ্রি কিক থেকে হেড করেন সরদার আজমৌন। তবে তা চলে যায় ওয়েলসের গোলপোস্টের বাইর দিয়ে। ম্যাচের ২৬ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাকে যায় ইরান। কিন্তু ওয়েলসের ডিফান্ডার তা ক্লিয়ার করে দেন।
এরপর দুদলই আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে খেলতে থাকে। তবে গোলের তেমন কোন সুযোগ সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হয় ইরান ও ওয়েলস। ম্যাচের ৪২ মিনিটে ওয়েলসের পাওয়া কর্নার থেকে বিপদের আভাস দিলেও তা খুব সহজেই নিজের গ্লোভসে নেন হোসেইন হোসেইনি। ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে ডান দিক থেকে বাড়ানো বলে পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন সরদার আজমৌন। ফলে গোলের দেখা পাওয়া হয় না ইরানের। এরপর মেহেদী তারেমিকে ফাউল করার কারণে হলুদ কার্ড দেখেন জো রোডন। ফ্রি কিক থেকে সুযোগ সৃষ্টি হলেও গোল করতে ব্যর্থ হয় ইরান। শেষ পর্যন্ত গোলশুন্য থেকে বিরতিতে যায় ওয়েলস ও ইরান।
ম্যাচের ৫১ মিনিটে গোলের সহজ সুযোগ পায় ইরান। ডান প্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে ডি বক্সে ঢুকে গোলমুখে শত করেন সরদার আজমৌন। তবে তা সাইডবারে লেগে ফিরে আসে। ফিরে আসা বলে ডি বক্সের বাইরে থেকে শট করেন ঘুলিজাদে। সেই শটও বারে লেগে ফিরে আসে। ফলে গোল থেকে বঞ্চিত হয় ইরান।
ম্যাচের ৫৬ মিনিটে ফের ওয়েলসের গোলমুখে শট করে ইরান। তবে তা ওয়েলসের ডিফেন্ডারদের গায়ে লেগে প্রতিহত হয়। অন্যদিকে গোলের আশায় ম্যাচের ৫৭ মিনিটে ডাবল চেঞ্জ করেন ওয়েলসের কোচ রব পেজ। ম্যাচের ৬৪ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে গোলের সম্ভাবনা দেখা দিলেও গোল করতে ব্যর্থ হয় ইরান। ওয়েলসের ওপর একের পর এক আক্রমণ চালালেও গোল বের করতে ব্যর্থ হয় ইরানের স্ট্রাইকাররা।
ম্যাচের ৭২ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে ওয়েলসের গোলমুখে শট করেন সাইদ এজাতুল্লাহ। তবে সেই শট কর্নারের বিনিময়ে রক্কা করেন ওয়েলসের গোলরক্ষক ওয়েন হেনসি। এরপর টানা কয়েকটি আক্রমণ চালিয়েও গোল পেতে ব্যর্থ হয় ইরান। গোল পেতে মরিয়া হয়ে ৭৭ মিনিটে তিনটি ফ্রেশ লেগ মাঠে নামান ইরানের কোচ কার্লোস কুয়েইরোজ।
অন্যদিকে ম্যাচের ৮৩ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে জোড়ালো শট করেন বেন ডেভিস। তবে তা চলে গোলপোস্টের ওপর দিয়ে। ম্যাচের ৮৪ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাকে যায় ইরান। গোলরক্ষক বেড়িয়ে এসে ক্লিয়ার করতে গিয়ে ফাউল করেন মেহেদী তারেমিকে।পরে রেফারি ওয়েলসের গোলরক্ষক ওয়েন হেনসিকে লাল কার্ড দেখান। কাতার বিশ্বকাপ এটাই প্রথম কেউ লাল কার্ড দেখলেন। ম্যাচের ৮৮ মিনিটে সুযোগ তৈরী করেও গোল করতে ব্যর্থ হয় ইরান।
ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ের শেষ মিনিটে অবশেষে গোলের দেখা পায় ইরান। ডি বক্সের বাইরে থেকে চেশমির জোড়ালো শটে পরাস্ত হন ওয়েলসের গোলরক্ষক।
এরপর আরও এক গোলের দেখা পায় ইরানে। কাউন্টার অ্যাটাক থেকে রামিন রিজিয়ান গোল করে ইরানের লিড বাড়ান। শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলের ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ইরান। এই জয়ের ফলে নক আউট পর্বে যাওয়ার আশা টিকে রইলো ইরানের।