রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার গোয়ালকান্দি ইউনিয়নের রামরামা কামারখালীর বারনই নদিতে মৎস্য অভয়ারণ্য দখল করে সাইন বোর্ড লাগিয়ে অবৈধ ভাবে বাঁশ পুঁতে গাছের ডালপালা ফেলে মাছ ধরা হচ্ছে। তাদের মাছ আটকানোর জাল এতইটা ছোট যে এ জালে রেণুপোনাসহ মা মাছও ধরা পড়ছে। স্থানীয় মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক শিক্ষক সমর্থকদের একটি সিন্ডিকেট এর সঙ্গে সরাসরি জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। সুফলভোগী মৎস্য অভয়াশ্রম সমিতির সভাপতি নাটোর নলডাঙ্গা থানার পিরগাছা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মোজাহার আলী এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন,পুঠিয়ার উপজেলার শাহাজাহানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুলতান মাহমুদ। তারা উপজেলার গোয়ালকান্দি ইউনিয়নে তথাকথিত সমিতির নামে বারনই নদির মৎস্য অভয়ারণ্য দখল করে মৎস্য শিকার করে যাচ্ছেন। এবং মৎস নিধনকারী এসব সিন্ডিকেটে সংঘবদ্ধ হয়ে ভাড়াটিয়া জেলে দিয়ে বিভিন্ন প্রকারের অবৈধ কারেন্ট জালে মা ও পোনা মাছ আহরণ করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এভাবে মাছ ধরায় মৎস শূন্য হয়ে পড়েছে বারানই নদীটি। এছাড়া বেশ কয়েকজন সরকারি-বেসরকারী স্কুলের শিক্ষক এই মৎস্যজীবী সমিতির সদস্য হওয়ার কারনে সাধারণ মৎস্যজীবীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তবে রামরামা ও কামারখালী গ্রামের কয়েকজন হলদারকে এই সমিতিতে রাখা হয়েছে বলে জানাগেছে। সরেজমিনে এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার বারানই নদীতে বর্ষা মৌসুমের শুরুতে জাল ও বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়। এছাড়া বর্ষা শুরু থেকে উপজেলার তাহেরপুরের বারনই নদীর রামরামা,কামারখালি, শ্রীপুর, বাগমারা, একডালা, মোহনগঞ্জ, মাদারীগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় বাঁশের বেড়া নির্মাণ করে পানির স্রোত বাড়িয়ে তার মুখে স্থাপন করা হয় এক ধরনের কারেন্ট জাল। তাতে আটকা পরে শামুক,ঝিনুক,রেণু ও মা-মাছসহ সব ধরনের মাছ। বর্তমানে তারা রামরামা-কামারখালী অবস্থিত বারনই নদিতে কারেন্ট বাধাজাল দিয়ে পানির স্বাভাবিক গতি পথ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে সব মাছ তাদের জালে আটকা পড়ছে। মৎসজীবি সূর্যকান্ত হালদার, নিতাই, কমল, সুধীর, মকবুল, সুশিল, আনান্ত, সুধির ও নারায়ণ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সাবেক প্রধান শিক্ষক রামরামা কামারখালী সুফলভোগী মৎস্য অভয়াশ্রম সমিতির সভাপতি মোজাহার আলী নেতৃত্বে নদীতে বেড়া কারেন্ট (বাধা) জাল দিয়ে মাছ ধরায় আমরা তেমন মাছ পাচ্ছি না। কারণ সব মাছ তাঁদের জালে আটকা পড়ছে। এবং ফাঁকফোকর দিয়ে যে মাছ আসছে তার কিছু অংশ আমরা ধরতে পারছি। এছাড়া এসব বেড়া ও কারেন্ট জালের কারণে কয়েক বছর ধরে আমরা অতি কষ্টে জীবন-যাপন করছি। এদিকে, স্থানীয় কৃষকরা জানান, আগে এই সময়ে নদীর পানি সম্পর্ণ শুকিয়ে যেত। এবং কয়েক বছর আগে পুঠিয়া উপজেলার জগদেশপুর গ্রামে রাবারড্যাম নির্মানের কারণে এই নদীতে সারা বছর পানি থাকে। ফলে তারা আনায়াসে সেচ কাজ চালাতে পারেন। এবং জেলেরা সারা বছর ধরে নদিতে মাছ শিকারে করে জীবন-যাপন করে থাকেন। এছাড় কয়েক দিন আগে স্থানীয় ও জাতীয় বিভিন্ন পত্রিকায় বারনই নদিতে কচরিপানায় ভোরে যাওয়ার রির্পোট প্রকাশিত হলে মৎস্য অভয়াশ্রম সমিতির সদস্যরা তরিঘড়ি করে মৎস্য অভয়ারণ্য দখল করা যায়গায় থেকে রাতের আধারে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ মেরে পার্শবর্ত্তী আত্রাই, নলডাঙ্গা আড়ৎতে বিক্রি করা হয়েছে। এই ভাবে তারা সপ্তাহে একদিন করে সেখানকার লাখ লাখ টাকার মাছ হরিলুট করা হলেও বাগমারা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রবিউল করিমসহ স্থানীয় বিভিন্ন দপ্তরের প্রশাসন নিরব ভুমিকায় রয়েছে। সুফলভোগী মৎস্য অভয়াশ্রম সমিতির সভাপতি মোজাহার আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এই এলাকার ২৩০ জন গরিব ও মৎসজীবিদেরকে সাথে নিয়ে সমিতি গঠন করেছি। এবং বাগমারা মৎস্য কর্মকর্তা তাঁদের মৎস্য শিকারের জন্য অনুমতি দিয়েছেন। এবং তাঁর সমিতির নিবন্ধন নাই বলে জানিয়েছেন তিনি। এবিষয়ে বাগমারা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রবিউল করিমের সাথে গতকাল দুপুরে যোগাযোগের জন্য ০১৭১১৯৩০৪৫৬ মোবাইল নাম্বারে বার বার ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।#