নওগাঁ জেলার সাপাহার উপজেলার কৈকুড়ী শীতল ডাঙ্গা আলিম মাদ্রাসায় নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে অধ্যক্ষ ও সভাপতির বিরুদ্ধে।
জানা যায়, গত ১৪ আগস্ট ইং তারিখের দৈনিক সাতমাথা ও দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে মোতাবেক নিরাপত্তাকর্মী পদে কৈকুড়ি গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে আহসান হাবিব, আবদুল লতিফের ছেলে হাবিবুর রহমান, মিছু শেখ এর ছেলে সাইফুল ইসলাম, আব্দুল খালেকের ছেলে সফিকুল, শীতল ডাঙ্গা গ্রামের ছাত্তারের ছেলে মাসুদ রানা মুসা হকের ছেলে বাশির উদ্দিন, আমির আলীর ছেলে শাহিন আলম ও লাল ডাঙ্গা গ্রামের আকতার আলী ছেলে আহমাদুল্লাহ। আয়া পদে কৈকুড়িগ্রামের বশির আলীর কন্যা সারমিন, শীতল ডাঙ্গা গ্রামের সাদেকুল ইসলাম এর কন্যা শাহনাজ খাতুন, মৃত আলমের স্ত্রী খালেদা বেগম, নাসির আলীর কন্যা ফাতেমা বিবি ও তাইজুদ্দিন এর কন্যা নাসরিন। লাইব্রেরিয়ান পদে কই কুড়িগ্রামের মকবুল সরকারের কন্যা নাসিমা ও আয়নাল আলীর ছেলে আব্বাস আলী আবেদন করেন। উক্ত আবেদন যাচায় বাছাই অন্তে গত ২৯ জানুয়ারি/২০২১ ইং তারিখে নিয়োগ বোর্ডের তত্কালীন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফরহাদ হোসেন ও আইহাই ইউনিয়নের কল্যাণপুর গ্রামের এনামুল হক, মাদ্রসা বোর্ড মহাপরিচালকের প্রতিনিধি’র সমন্বয়ে গঠিত নিয়োগ বোর্ড সকল পরীক্ষার কার্যক্রম সম্পূন্ন করে। পরীক্ষা শেষে ফল প্রকাশ না করে বিভিন্ন পদে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী একাধিক প্রার্থীর কাছে থেকে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন অংকের নগদ অর্থ হাতিয়ে নেয় ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সুলতান আলম ও সভাপতি ফরহাদ হোসেন। পরবর্তীতে কিছু অজানা কারণ সহ অর্থ লেনদেনের ঘটনা জানাজানি হলে পরীক্ষার ফল প্রকাশ সহ ওই মাদ্রাসার সবগুলো পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, নিরাপত্তা কর্মী পদে শফিকুল ইসলামের কাছে ৭ লক্ষ টাকা, সাইফুল ইসলামের কাছে ৬ লক্ষ টাকা, আয়া পদে খালেদা বিবির কাছে সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা, ফাতেমা বিবি কাছে ৫ লক্ষ টাকা এবং লাইব্রেরিয়ান পদে নাসিমার কাছে ৭ লক্ষ টাকা নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে হাতিয়ে নেওয়ায় অভিযোগ উঠে আসে ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সুলতান আলম ও সভাপতি ফরহাদ হোসেনের বিরুদ্ধে।
এবিষয়ে কৈকুড়ী শীতল ডাঙ্গা আলিম মাদ্রাসার সুপার (অধ্যক্ষ) সুলতান আলমের সাথে কথা হলে, সুনির্দিষ্ট কোন জবাব দিতে না পারলেও সাংবাদিকদের বলেন লাইব্রেরিয়ান পদে আমার ভাতিজা বউ নাসিমা কে নিয়োগ দেওয়া হবে, আর বাকি দুটি পদে নিয়োগ বাতিলের প্রক্রিয়া চলছে।
কৈকুড়ী শীতল ডাঙ্গা আলিম মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফরহাদ হোসেন একজন গন্যমান্য ও সম্মানিত এবং ভালো মানুষ হিসেবে এলাকায় যথেষ্ট খ্যাতি রয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী। এ বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার কাছে কয়েকজনের টাকা জমা রেখেছে মাদ্রাসা সুপার সুলতান সাহেব, টাকাগুলো প্রার্থীদের অনুরোধে আমি জমা রেখেছি। এই নিয়োগ বিষয়ে সুপার সাহেবই দেখ ভেল করছেন। বর্তমানে যে পরিস্থিতি দেখাযাচ্ছে এতে নিয়োগ বোর্ড বাতিল করা ছাড়া অন্য কোন উপায় আমরা দেখছি না বলেও জানান মাদ্রসা সভাপতি ফরহাদ হোসেন।
নিয়োগ পরীক্ষার প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেলেও পরীক্ষার ফল প্রকাশ সহ নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে স্থানীয়দের মাঝে। একাধিক প্রার্থীর কাছে অর্থ লেনদেনের কারণে এ সংকট সৃস্টি হয়েছে বলে ধারনা করছে স্থানীয় অভিজ্ঞ মহল। তিব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়ে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ভুক্তভোগি পরিবার সহ এলাকার সচেতন মহল।