রাজশাহীর বাগমারার শতবর্ষী বৃদ্ধ আবুল কালামের চোখে আজ আনন্দঅশ্রু। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে ভাবতেও পারেননি তার ভাগ্যে জুটবে একটি পাকাবাড়ি তাও আবার প্রধানমন্ত্রীর উপহার। হতভাগ্য বৃদ্ধ আবুল কালামের দীর্ঘ একশটি বছর কেটে গেছে অনাদরে অবহেলে। ফরিদপুর ছিল তার পৈত্রিক নিবাস। নব্বয়ের দশকে নদী ভাঙ্গনের কবলে সর্বস্ব হারিয়ে তিনি স্ত্রী পুত্র নিয়ে বেরিয়ে পড়েন অজানার উদ্দেশ্যে। এভাবে তার কয়েকবছর কেটে যায় জেলায় জেলায় ঘুরে ঘুরে। অবশেষে আবুল কালামের ঠাঁই হয় উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়নের নিমপাড়া গ্রামের এক সহৃদয়বান ব্যক্তির দেয়া একখন্ড জমিতে। এখানেই আবুল কালাম একটি কুঁড়েঘর তৈরি করে কাটিয়ে দেন আরো তিন দশক। এরি মাঝে আবুল কালামের প্রথম স্ত্রী মৃত্যুবরন করে। ওই ঘরে তার তিনটি পুত্র সন্তান থাকলেও অভাবের তাড়নোয় তারা যে যার মত বিয়ে সাদি করে সংসার নিয়ে ব্যস্ত। জীবন চলার অবলম্বনের জন্য আবুল কালাম ছবিলা বিবি(৮০) নামে এক বৃদ্ধাকে জীবন সঙ্গী করেন। এই ছবিলা বিবিই এখন ভিক্ষা করে আবুল কালামকে ভরন পোষন দেয়। উপজেলার যাত্রাগাছি দিঘীর পশ্চিমপাড়ে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া আশ্রায়ন প্রকল্পের একটি বাড়ি পেয়েছেন আবুল কালাম- ছবিলা দম্পত্তি। গতকাল শনিবার এই বৃদ্ধ দম্পত্তির বাড়িতে গেলে দেখা যায় তাদের সাজানো গোছানো সুখের সংসার। দুপুরের রান্না সারতে গাছ থেকে পড়া লতা পাতা কুড়াচ্ছেন তারা। কাছে গিয়ে কুশলাদি জেনে নতুন বাড়িতে কেমন লাগছে জানতে চাইলে হুহু করে কেঁদে ফেলেন বৃদ্ধ আবুল কালাম। তিনি এই বাড়ি পেয়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য প্রাণ ভরে দোয়া করছেন বলেও জানালেন। শুধু আবুল কালামই নয় যাত্রাগাছি এই দিঘীর পাড়ে এমন আরো বারোটি পরিবারকে পূর্নবাসিত করা হবে। তাদেরকে বাড়ি বুঝে দেওয়ার কাজ চলমান রয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান জানান, প্রথম ফেজে উপজেলার বারটি ইউনিয়নে ১৭৫ টি বাড়ি নির্মাণ করে তা অসহায় দুস্ত পরিবারের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে। চলতি বছর দ্বিতীয় ফেজে আরো ৭৭ টি বাড়ি নির্মাণের কাজটি চলমান রয়েছে। দ্রæত এই নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলেছে। পর্যায়ক্রমে আমরা প্রতিটি ইউনিয়নে এভাবে বাড়ি নির্মাণের কাজ বস্তবায়ন করব এবং প্রকৃত দুস্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে। সরকারের খাস জমিতে এসব বাড়ি নির্মাণ করা হবে। এজন্য উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভুমি) বিভিন্ন ইউনিয়নে খাস জমি অনুসন্ধান ও তা বাড়ি নির্মাণের উপযোগি করে তোলা হচ্ছে। তিনি আরো জানান প্িিরতটি বাড়ি নির্মাণ করতে সরকারের বরাদ্দ ১ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা। এই বাজেটেই আমরা চেষ্টা করছি মান সম্পন্ন ও টেকসই বাড়ি নির্মাণ করে দিতে। মাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান আসলাম আলী আসকান জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই বাড়ি উপহার পেয়ে সহায় সম্বলহীন মানুষ মাথা গোঁজার ঠাই পেয়েছে।