গ্রীষ্মের শুরুতেই চলনবিল অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। এতে করে ওই সব অঞ্চলের নলকূপে পানি উঠছে না। এ কারণে সুপেয় পানির সংকটে পড়েছেন এলাকাবাসী।
সংকট মোকাবিলায় অনেকেই বাড়ির নলকূপ উঠিয়ে নিচু জায়গায় বোরিং করছেন। আবার গ্রামের অনেকেই বাড়ির নিকটবর্তী বোরো স্কিমের অগভীর শ্যালো মেশিন থেকে বালতি ও কলসি নিয়ে পানযোগ্য পানি সংগ্রহ করছেন।
জানা যায়, বাংলাদেশের বৃহত্তম চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, তাড়াশ, রায়গঞ্জ, পাবনার ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর, ফরিদপুর, নাটোরের গুরুদাসপুর, সিংড়া ও নওগাঁর আত্রাই এলাকায় সম্প্রতি আবহাওয়ার তারতম্য এবং জলবায়ুতে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে। এর প্রভাবে চলনবিল এলাকার নলকূপে পাওয়া যাচ্ছে না পানি।
তাড়াশ উপজেলার মাকড়শোন গ্রামের জান মাহমুদ জানান, প্রায় এক মাস ধরে তার বাড়ির নলকূপে পানি উঠছে না। তারা ওই নলকূপ উঠিয়ে অপেক্ষাকৃত নিচু জায়গায় স্থানান্তর করেছেন। তাতেও পানি মিলছে না।
ফলে বাধ্য হয়েই পানযোগ্য পানি সংগ্রহে বাড়ির নিকটবর্তী বোরো স্কিমের অগভীর শ্যালো মেশিনে যেতে হচ্ছে। আর এ অবস্থা অধিকাংশ গ্রামবাসীর।
রায়গঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ গ্রামের কৃষক হেকমত আলী জানান, শুধু খাওয়ার পানিই নয়, গৃহস্থালী কাজেও বিশুদ্ধ পানির সংকট চলনবিল এলাকায় রয়েছে। এলাকায় হাজার হাজার পুকুর থাকলেও বেশিরভাগে মুরগির বিষ্ঠা ব্যবহার করে পানি দূষিত করা হয়। ফলে ওইসব পুকুরে গোসল করা, থালাবাসন মাজা, কাপড়চোপড় ধোয়া, সাঁতরানো যাচ্ছে না। ফলে সংকট আরও বাড়ছে।
তাড়াশ উপলো জনস্বাস্থ্য বিভাগের প্রকৌশলী মেহেদী হাসান বলেন, চলনবিল একটি বৃহৎ এলাকা। এর একেক জায়গার পানির স্তর একেক রকম। তা ছাড়া চলনবিল অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে পানির ব্যাপক ব্যবহারসহ নানা কারণে পানির স্তর নিচে নেমে যায়। এ কারণে নলকূপগুলোয় পর্যাপ্ত পানি ওঠে না। তাই বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দেয়। তবে এ অবস্থা সাময়িক। বর্ষা মৌসুম এলেই আবার তা ঠিক হয়ে যায়।