নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার প্রতিটি পাকা সড়কে ট্রাক থেকে মাটি পড়েছে । বৃষ্টির পানিতে তৈরি হয়েছে কাদা। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকার লোকজন। নাটোরের সিংড়া উপজেলার হাতিয়ান্দহ থেকে লালোর পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার সড়কে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
১৪ মার্চ সকালে সরেজমিনে দেখা যায়,নাটোরের সিংড়া উপজেলার হাতিয়ান্দহ থেকে লালোর পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার কাদাপানিতে একাকার। কাদার কারণে যান চলাচলে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন মোটরসাইকেলচালকেরা। দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে তারা মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন। যানবাহনের পাশাপাশি পথচারীদেরও চলাচলে চরম দুর্ভোগে পোহাতে হয়।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইটভাটায় মাটি বহনে রাস্তায় চলাচলের পরিবেশ নষ্ট হওয়ায় এলাকার মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। বিভিন্ন ইটভাটার জন্য আবাদি জমি ও পুকুর খনন থেকে মাটি সংগ্রহ করা হয়। অবৈধ যানবাহনে (ট্রাক্টর ও পাওয়ার ট্রিলার ট্রলি) ভোর থেকে রাত পর্যন্ত অরক্ষিত অবস্থায় মাটি বহন করা হয়। এ বালু-মাটি উড়ে সড়কের পড়ার পাশাপাশি পথচারীদের চলাচলে মারাÍক বিঘœ ঘটাচ্ছে। ইটভাটা মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় সাধারণ মানুষ এ অবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারে না।
আচলকোট গ্রামের আমির হোসেন বলেন, ভাটার জন্য টাক্টরে করে মাটি নেয়া হচ্ছে । সে মাটি পরছে রাস্তায় ।শনিবার সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তাগুলো কর্দমাক্ত হয়ে পড়ে । অন্ততপক্ষে ২০ জন মোটর সাইকেল পিছলে পরে আহত হয় ।
অটোচালক কোব্বাত আলী বলেন,ভাটার মাটি পরে হালকা বৃষ্টিতেই রাস্তায় কাদা জমে। এতে পথচারীদের মারাÍক বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। বিশেষ করে স্কুলগামী শিশুরা দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় চলে। এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করছি।
সড়ক দিয়ে ১০ চাকার ড্রাম ট্রাক ও ট্রাকটারের টলি নিয়ে রাস্তায় কাঁদামাটি করে বিভিন্ন ইট ভাটায় সেই মাটি বিকিকিনি করছে। এতে ট্রাকটারের উপর থেকে মাটি পড়ে ও চাকায় লেগে থাকা কাঁদামাটি পড়ে রাস্তার বেহালদশা হয়ে যাচ্ছে। ভিজে কাঁদামাটির ফলে পিজের রাস্তা ¯¯ি¬পিং হওয়ায় নিয়মিত ঘটে চলে অসংখ্য দূর্ঘটনা। ঐ রাস্তাগুলোই চলতে গিয়ে বিশেষ করে মটর সাইকেল আরোহীরা -¯ি¬পিং করে ব্যাপক ভাবে আহত হচ্ছে।পৌষের শীতে ঘন কুয়াশায় ও টিপিটিপ বৃষ্টির ফলে
রাস্তায় পানি জমে থাকছে। পানিকাঁদা জমে থাকা রাস্তায় মাটি খেকোরা জমির উরবর বাড়বে বলে প্রতিশ্রæতি দিয়ে এবং জমির মালিকদের অল্প কিছু টাকা দিয়ে তাদের জমি থেকে মাটি কেটে বিভিন্ন ইট ভাটায় বিক্রয় করছে। এছাড়াও বিভিন্ন মানুষের পুকুর ও বাড়ীর উঁচুনিচু জায়গা ভরাট করছে। প্রকৃত ভাবে জমি থেকে মাটি কাটলে একদিকে জমির উঁরবরতা নষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে জমির মাটি কেটে সরকারি রাস্তার উপর দিয়ে ১০ চাকার ড্রামট্রাক ও ট্রাকটারের টলি চলাচলে মাটি নিয়ে
যাওয়ার সময় কাঁদামাটি রাস্তায় পড়ে ¯¯ি¬পিং হয়ে জন সাধারণ দূর্ঘটনার কবলে পড়ছে। অপর দিকে কোটি টাকা ব্যায়ে সরকারি রাস্তা ভারবহণ করতে না পেরে ফাটল ধরছে। এমনকি রাস্তা কয়েক মাসের মধ্যে ভেঙে খানাখু›দ্বী ও ডুবা সৃষ্টি হচ্ছে। সরকার কোটি কোটি টাকা বরাদ্ধ দিয়ে রাস্তা করছে। অবশেষে এই সব মাটি খেকোদের কারনে সরকারের দূর্নাম রটছে। যা উন্নয়নে ব্যাপক ভাবে বাধা সৃষ্টি
হচ্ছে।
আবুল কাশেম বলেন, রাস্তায় ব্যাপক কাঁদামাটি হওয়ায় সকাল থেকেই প্রায় ২০টি মটর সাইকেল ও জি বাইকসহ বিভিন্ন গাড়ি এ্যাকসিডেন্ট করেছে। তারা অনেকেই স্থানীয় ডাক্তার খানা ও ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন। যারা মাটি কেটে রাস্তা দিয়ে নিচ্ছে তাদের বড় ধরনের শাস্তি হওয়া উচিৎ বলে আমি মনে করি।
সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সামিরুল ইসলাম বলেন, ইটভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তবে এলাকার মানুষের আরো বেশি সচেতন হতে হবে। আইন লঙ্ঘন করে কেউ রাস্তায় মাটি বহন করলে উপজেলা প্রশাসনে খবর দেয়ার পাশাপাশি এলাকার মানুষকে প্রতিরোধ করতে হবে।