নাটোরের গুরুদাসপুরে সরকারি বঙ্গবন্ধু টেকনিক্যাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কলেজ নিয়ে টানাহেচরা চলছে। তৎকালীন অধ্যক্ষ সাঈদুল ইসলাম সাঈদ কতিপয় ব্যক্তির মদদে কলেজটি কৌশলে গ্রাম থেকে শহরে নিয়ে যান। এলাকাবাসীর দাবি গ্রামের কলেজ গ্রামেই ফিরে আসুক।
জানা যায়, উপজেলার বেড়গঙ্গারামপুর গ্রামে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০৯ সালে। গ্রামাঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত ছেলে-মেয়েদের কারিগরি শিক্ষার প্রসার ঘটাতে এলাকাবাসী ওই কলেজটি প্রতিষ্ঠিত করেন। কলেজের কার্যক্রম চলছিল ঠিকঠাকই। কিন্তু অধ্যক্ষ সাঈদ ২০১৫ সালে কলেজটি কৌশলে গুরুদাসপুর পৌর সদরে স্থানান্তর করেন। তিন বছর আগে কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জালাল উদ্দিন শাহ নাটোরের সহকারি জজ আদালতে গ্রামের কলেজ গ্রামে ফিরিয়ে আনতে অধ্যক্ষ সাঈদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। সাঈদ ওই কলেজের অধ্যক্ষ নয় বলে গত ৮ নভেম্বর স্বাক্ষীপ্রমাণ শেষে রায় দেন বিজ্ঞ আদালত। সেই সাথে সাঈদ কলেজটিতে অনুপ্রবেশ করতে পারবেন না, কোনো রেজুলেশন, নিয়োগ প্রদানসহ কোনোপ্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়।
এ ব্যাপারে সাঈদ হাইকোর্টে আপিল করলেও বিজ্ঞ আদালত তার বিরুদ্ধেই রায় দেন। এছাড়া বেড়গঙ্গারামপুর গ্রামেই পূর্বের ন্যায় কলেজের কার্যক্রম চালানোর নির্দেশ দেন আদালত। বর্তমানে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে রয়েছেন মো. বাবুল আক্তার বাবু।
কলেজের শিক্ষক জিয়ারুল ও জহুরুল ইসলামসহ অনেকে অভিযোগ করেন- জজ কোর্ট, হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে সাঈদুল ইসলাম সাঈদ গ্রামের এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে টানাহেচরা শুরু করেছেন। রাতের অন্ধকারে শিক্ষক নিয়োগের কাগজপত্রসহ কলেজটি পৌর সদরে নিয়ে যান।
কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জালাল উদ্দিন শাহ বলেন, এলাকার মানুষের শিক্ষার প্রসার ঘটাতে ২০০৯ সালের শুরুতে বেড়গঙ্গারামপুর গ্রামে আমাদের দান করা নিজস্ব ১০৭ শতক জমির উপর বঙ্গবন্ধুর নামে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করি। পাঁচবছর আগে সাঈদ কলেজটির অধ্যক্ষ থাকাকালীন ষড়যন্ত্র করে পৌরসদরের ভাড়া করা জায়গায় স্থানান্তর করেন। প্রথম নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাদ দিয়ে কতিপয় শিক্ষককে নিয়োগ দিয়ে মোটা অংকের টাকা কামিয়েছেন।
এলাকাবাসীর দাবি, গ্রাম থেকে কলেজটি শহরে নিয়ে যাওয়া অমানবিক ও বেআইনি। এ নিয়ে তারা কোনো দ্ব›দ্বফ্যাসাদ চান না। স্থানীয় ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার মানোন্নয়নে গ্রামের কলেজ গ্রামেই ফিরে চান তারা।
কোর্ট কর্তৃক অপসারিত অধ্যক্ষ সাঈদ বলেন, জজ কোর্টের রায় একতরফা। আমি এ ব্যাপারে ছানি মামলা করেছি। মামলাটি চলমান রয়েছে।
এদিকে কলেজটি গ্রামে থাকবে নাকি শহরে থাকবে জানতে চাইলে ওই কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ইউএনও মো. তমাল হোসেন বলেন, কলেজ স্থানান্তরের বিষয়ে আপিল চলমান রয়েছে। তাছাড়া সার্বিক বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠণ করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।