ইয়ানূর রহমান : যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের চাঞ্চল্যকর ৩ বন্দি কিশোর হত্যা মামলার চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। কেন্দ্রের সাবেক ৪ কর্মকর্তা ও ৪ বন্দি কিশোরকে অভিযুক্ত করে ওই চার্জশিট দেয়া হয়। চার্জশিটে কেন্দ্রের কারিগরি প্রশিক্ষক (ওয়েল্ডিং) ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে অব্যহতির সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়াও হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় অপ্রাপ্ত বয়স্ক ৪ বন্দি কিশোরের বিরুদ্ধে আদালতে দোষীপত্র দেয়া হয়েছে। তাদের বিচার শিশু আদালতে হবে।
চার্জশিটে অভিযুক্ত ৪ কর্মকর্তা হলেন, সাময়িক বরখাস্ত সাবেক তত্ত্বাবধায়ক (সহকারী পরিচালক) আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, সহকারী তত্ত্বাবধায়ক (প্রবেশন অফিসার) মাসুম বিল্লাহ, ফিজিক্যাল ইন্সট্রাক্টর একেএম শাহানুর আলম ও সাইকো সোস্যাল কাউন্সিলর (বর্তমানে স্থায়ী বহিষ্কৃত) মুশফিকুর রহমান। ওই চার্জশিটে অভিযুক্ত কেন্দ্রের ৪ বন্দি কিশোর হলো, গাইবান্ধার খালিদুর রহমান তুহিন, নাটোরের হুমাইন হোসেন, মোহাম্মদ আলী ও পাবনার ইমরান হোসেন।
তদন্ত কর্মকর্তা চাঁচড়া পুলিশ ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মো. রোকিবুজ্জামান এ বিষয়ে বলেছেন, ঘটনার দিন চার্জশিটে অভিযুক্ত এই ৪ বন্দি কিশোরের বয়স তদন্ত করে ১৮ বছরের বেশি পাওয়া যায় । এ কারণে তাদেরকে প্রাপ্ত বয়স্ক হিসেবে চার্জশিটে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
অপরদিকে হত্যাকান্ডে জড়িত যে ৪ বন্দি কিশোরের বিরুদ্ধে আদালতে দোষীপত্র দেয়া হয়েছে তারা হলো, চুয়াডাঙ্গার আনিস, কুড়িগ্রামের রিফাত হোসেন, রাজশাহীর পলাশ ওরফে শিমুল ও পাবনার মনোয়ার হোসেন। ঘটনার দিন তাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে হওয়ায় শিশু হিসেবে দোষীপত্র দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, তদন্তে বন্দি কিশোর হত্যাকাণ্ডের সাথে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের সাময়িক বরখাস্ত সাবেক কারিগরি প্রশিক্ষক (ওয়েল্ডিং) ওমর ফারুকের জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ মেলেনি। এ কারণে চার্জশিটে তার অব্যহতির সুপারিশ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, চুলকাটাকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রের প্রধান প্রহরী নুর ইসলামকে মারপিটের জেরে ২০২০ সালের ১৩ আগস্ট যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের ১৮ বন্দি কিশোরকে অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়। এ ঘটনায় মারা যায় ৩ বন্দি কিশোর এবং আহত হয় আরো ১৫ জন।
নিহতরা হলো, বগুড়ার শিবগঞ্জের তালিবপুর পূর্বপাড়ার নান্নু পরামানিকের ছেলে নাঈম হোসেন, খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা সেনপাড়ার রোকা মিয়ার ছেলে পারভেজ হাসান রাব্বি ও বগুড়ার শেরপুরের মহিপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রাসেল হোসেন। হত্যার ঘটনায় নিহত পারভেজ হাসান রাব্বির পিতা রোকা মিয়া বাদী হয়ে কোতয়ালি থানায় মামলা করেন। এ মামলার তদন্ত শেষে গত ৯ ফেব্রুয়ারি ৮ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট এবং ৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে দোষীপত্র দেন চাঁচড়া পুলিশ ফাঁিড়র ইনচার্জ ইন্সপেক্টর রোকিবুজ্জামান ৷